—প্রতীকী চিত্র।
এ যেন যুদ্ধ-বিরতি চলছিল, এ বার পালা হার-জিতের।
সধারণত চায়ের আড্ডা, পাড়ার রকের রাজনীতির আলোচনা ভোটের ‘হাওয়া-মোরগের’ কাজ করে। কার দিকে পাল্লা ভারী, সেই ইঙ্গিতও পাওয়া যায়। এ বার অবশ্য সব একটু বেশিই চুপচাপ।ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংস্থার বুথ ফেরত সমীক্ষা সামনে এসেছে। মুখে না মানলেও আশা-আশঙ্কার দোলাচল বেড়েছে সব দলের কর্মীদের মধ্যেই। যদিও তৃণমূল, সিপিএমের দাবি, সমীক্ষার হিসাব আর বাস্তব ভোট শতাংশ মিলবে না কোনও ভাবেই।
অনেকেই মনে করছেন, বামেদের ভোট আগের থেকে অনেকটাই বাড়বে। তার উপরেই নির্ভর করবে বর্ধমান জেলার দু’টি আসন (বর্ধমান পূর্ব ও বর্ধমান-দুর্গাপুর) কোনও ফুলের দিকে ঝুঁকবে। সিপিএমের হিসাবে, গত বিধানসভায় জেলায় ৫৬৪১টি বুথের মধ্যে মাত্র ২৪টি (.৪%) বুথে জিতেছিল তারা। দ্বিতীয় হয়েছিল ৮৭১টি বুথে (১৫%)। জেলায় প্রাপ্ত ভোট ছিল ১০.৪০%। এ বার অন্তত ২০% বুথে তারা প্রথম হবে আর ৩৩% বুথে দ্বিতীয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, দাবি সিপিএমের। ভোট শতাংশও দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, “বুথ ফেরত সমীক্ষা মেলার কোনও আশা দেখছি না। আমাদের ভোট অনেকটাই বাড়বে। তবে জেলার একটা বড় অংশের ভোটার নীরবতা পালন করছেন। তাঁদের ভোটেই ফলাফল নির্ভর করছে।”
এই নীরবতা কিসেরইঙ্গিতবাহী? বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বর্ধমান পূর্ব লোকসভার ইনচার্জ সুনীল গুপ্তের দাবি, “বর্ধমান-দুর্গাপুর আমরা নিশ্চিত ভাবে জিতছি। আর চুপচাপ ভোটে পদ্মেই ছাপ দিয়েছেন ভোটাররা। সেটাও বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের ইভিএম খুললেই বোঝা যাবে। বুথ ফেরত সমীক্ষায় তার ইঙ্গিতও রয়েছে।” তৃণমূলের জেলার নেতা, প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিকের দাবি, “ওই সব সমীক্ষা ভুল প্রমাণিত হবে। ২০২১ সালেও বাংলার মানুষ সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছিলেন। বর্ধমান পূর্ব লোকসভায় আরও ব্যবধানে জিতব। বর্ধমান-দুর্গাপুরও পুনরুদ্ধার করব।’’
২০১৯ সালে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে তৃণমূল জিতেছিল ৮৯,৩১৫ ভোটে। রায়না থেকেই এগিয়ে ছিল ৫৪,৮৪৯ ভোটে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। এ বার রায়নায় তৃণমূল বুথ দখল করতে পারেনি বলে দাবি করেছে বিজেপি। ভাল ফলের আশাও করছেন তাঁরা।দলের কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না।’’ সংখ্যালঘুদের একাংশের ভোটও তাঁদের দিকে এসেছে, দাবি তাঁদের। তৃণমূলের অবশ্য ভরসা সাংগঠনিক শক্তিতে। জেলা তৃণমূল সভাপতি জানান, সব বিধানসভা থেকেই ব্যবধান বাড়বে। লাখখানেকের কাছাকাছি ব্যবধান হবে, দাবি তাঁর।
রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, বাম সমর্থকের ভোট পদ্মে ঝুঁকেছে, না লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রভাব বেশি, তা বোঝা যাবে। আবার শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিই ভোটের ‘পেন্ডুলাম’ হবে কি না, সেটাও প্রশ্ন। কিন্তু ভোটারদের মুখে কুলুপ, হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দিয়েছে নেতাদের।