— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লোকসভা, বিধানসভা কিংবা পঞ্চায়েত— এত দিন রাজ্যের যেখানে যখনই কোনও নির্বাচন হয়েছে, সেখানেই নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিজেদের বাহিনী
পাঠিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। কিন্তু লোকবলের নিরিখে সেই বাহিনীরই এখন করুণ দশা। এক দিকে দীর্ঘদিন বিভিন্ন পদে নিয়োগ না হওয়ায় বাহিনীতে কর্মী-সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পেয়েছে। অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় লালবাজারের অধীনে চলে আসায় আয়তনে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে কলকাতা পুলিশ এলাকা। সেই কারণেই নিচুতলার পুলিশকর্মী থেকে অফিসারেরা আশঙ্কা করছেন, এ বার কলকাতায় এক বা একাধিক দফায় ভোট হলে তাঁদের জেলা পুলিশের সাহায্য নিতে হতে পারে সুষ্ঠু ভাবে ভোট পরিচালনার জন্য।
প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, অন্যান্য বারের মতো এ বারও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বুথ কিংবা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। আর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব থাকবে স্থানীয় পুলিশের হাতে। লালবাজারের তরফে প্রতি বারই কলকাতার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির বাইরে একাধিক স্তরে বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এমনকি, ট্র্যাফিক পুলিশের সার্জেন্টদেরও দু’টি বা তিনটি করে বুথের বাইরে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়, যাতে কোনও রকম গোলমাল না ঘটে কলকাতা পুলিশ এলাকায়। আর তার ফলও পায় লালবাজার। পুলিশকর্তাদের দাবি, গত কয়েক বছরে বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনের দিন কলকাতায় তেমন কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। সূত্রের খবর, শুধু কলকাতাতেই নয়, সেই সঙ্গে রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও ভোটের কাজ করতে যায় কলকাতা পুলিশের বাহিনী।
এ বার অবশ্য পরিস্থিতি বদলেছে। কলকাতা পুলিশের বাহিনীতে সব মিলিয়ে থাকার কথা ৩৫ হাজার ৮৯১ জন কর্মীর। কিন্তু গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মী-অফিসার মিলিয়ে ছিলেন ২২ হাজার ৯১৬ জন। অর্থাৎ, শূন্য পদের সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। বাহিনীর
কর্মী-সংখ্যা কমার পাশাপাশিই আয়তনে বেড়েছে কলকাতা পুলিশের এলাকা। ফলে, বাড়তে চলেছে বুথ এবং ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যাও। প্রাথমিক হিসাবের পরে পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, ভাঙড় কলকাতা পুলিশের অধীনে আসায় বুথের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে চলেছে এক হাজারেরও বেশি।
এক পুলিশকর্তা জানান, কত দফায় কলকাতায় ভোট হবে, সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রাথমিক ভাবে ভাঙড়ের বুথ ধরেই হিসাব করতে হচ্ছে। আর তা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, মূল কলকাতার মতো ভাঙড়ের বুথের বাইরেও যদি একই ধরনের নিরাপত্তা দিতে হয়, তা হলে রাজ্য পুলিশ থেকে বাহিনী আনাতে হতে পারে। তবে, সব কিছুই নির্ভর করছে কত দফায়
কলকাতায় নির্বাচন হয়, তার উপরে। এমনটাই জানিয়েছেন ওই পুলিশকর্তা।