Lok Sabha Election 2024

অনুব্রতের বাড়িতে হঠাৎই উড়তে দেখা গেল ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা পতাকা, তিহাড়-বন্দি কেষ্ট জানেন কি?

শনিবার সকালে অনুব্রত মণ্ডলের বোলপুরের বাড়িতে উড়তে দেখা যায় একটি ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা পতাকা। যা নিয়ে জল্পনা শুরু হয় যে, কেষ্ট কি বিজেপির শরণে আসতে চলেছেন? প্রশ্ন ওঠে, কে লাগাল এই পতাকা?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৪ ১৭:০০
Share:

কেষ্টর বোলপুরের বাড়ির ছাদে উড়ছে ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা পতাকা। — নিজস্ব চিত্র।

বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা অধুনা জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের বোলপুরের বাড়িতে উড়ছে ‘জয় শ্রীরাম’-এর ধ্বজা! যা নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। কংগ্রেস, সিপিএমের মতো বিরোধীদের দাবি, বিজেপির সঙ্গে তলায় তলায় বোঝাপড়া রয়েছে তৃণমূল নেতাদের। তারই প্রকাশ হল ছাদের পতাকায়। পাল্টা, তৃণমূলের যুক্তি, রাম কি কারও একার?

Advertisement

আরও একটা ভোট আসছে। কিন্তু বীরভূমে তৃণমূলের শেষকথা অনুব্রত তিহাড় জেলে বন্দি। অনুব্রতের কন্যা সুকন্যাও তিহাড়েই। স্ত্রী গত হয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে। ফলে বোলপুরের নিচুপট্টিতে কেষ্টর বাড়ি থাকে তালাবন্ধই। একদিন যে বাড়ির সামনে লাইন পড়ত সাধারণ মানুষের, আজ সেই বাড়ির সামনেটা পুরোপুরি শুনশান। সূত্রের খবর, কেষ্টর বাড়িতে পুলিশি পাহারা থাকে। ফলে সেখানে পুলিশের আনাগোনা রয়েছে। এ ছাড়া, কেষ্টর আত্মীয়স্বজনেরা মাঝেমাঝে ওই বাড়িতে আসেন। কখনও-সখনও কাজের লোকেদেরও যাতায়াত করতে দেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া আর কারও প্রবেশাধিকার নেই ‘বীর’কেষ্টর বোলপুরের বাড়িতে। তাহলে কে ঝোলাল গেরুয়া রঙের ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা পতাকা? পাহারার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা জানাচ্ছেন, পতাকার বিষয়ে তাঁদের কিছুই জানা নেই।

গত ২৩ এপ্রিল বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে হাঁসন বিধানসভা এলাকার কড়কড়িয়ায় সভা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সভা থেকে গরুপাচার মামলায় তিহাড় জেলে বন্দি অনুব্রতের নাম উল্লেখ করে মমতা বলেছিলেন, ‘‘কেষ্ট আজ আমাদের মধ্যে নেই। তাকে ও তার মেয়েকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ইচ্ছে করে জেলে রাখা হয়েছে, যাতে সে তৃণমূল করতে না পারে, ভোটের আগে বেরোতে না পারে।’’ এর পরেই সভাস্থলে উপস্থিত কর্মী, সমর্থকদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ‘‘আমি আপনাদের বলছি, দেখে নেবেন, ভোট মিটলেই ওদের ছেড়ে দেওয়া হবে।’’ এই আবহে কেষ্টর বাড়ির ছাদে জয় শ্রীরাম লেখা পতাকা উড়তে দেখে বিরোধীরা একে-একে দুই করে নিচ্ছেন।

Advertisement

সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘আগে থেকে সবাই বুঝতে পারছেন যে, বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেই বেরোনোর ছাড়পত্র পাওয়া যাচ্ছে। সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরাও যোগাযোগ রাখছেন। ফলে অনুব্রত যদি বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বেরিয়ে আসেন, তা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’’ কংগ্রেস নেতা জয়দেব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগেই বোলপুর শহরে এসে অধীর চৌধুরী বলে গিয়েছিলেন যে, অনুব্রত মণ্ডলকে বার হতে হলে হাতে বিজেপির পতাকা নিয়ে বেরোতে হবে। ফলে সে রকম কোনও ঘটনা ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’’ এই প্রসঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বীরভূমে বিজেপির প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য। দেবতনু বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত সবাইকে শ্রীরামের শরণে আসতে হবে। রামচন্দ্রই ভারতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবেন।’’

তৃণমূল অবশ্য কেষ্টর ছাদে পতাকা ওড়া নিয়ে বিশেষ কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হয়নি। দলের মুখপাত্র জামশেদ আলি খান বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল একজন ধর্মপরায়ণ মানুষ। ফলে তাঁর বাড়িতে যদি জয় শ্রীরামের পতাকা ওড়ে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর রাম তো কারও একার নয়, বাড়িতে রামের পতাকা ঝুলবে, এতে অবাক হওয়ার কী আছে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement