রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (বাঁ দিকে), মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে), পিছনে রাজভবন। — গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
হুগলিতে এ বার তৃণমূলের প্রতীকে লড়াই করতে নেমেছেন পর্দার দিদি নম্বর ওয়ান রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হয়ে শনিবার সপ্তগ্রামে জনসভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সভা থেকে বাছাই শব্দপ্রয়োগ করলেন রাজ্যের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সম্পর্কে। প্রসঙ্গত, রাজভবনে কর্মরত এক মহিলা সম্প্রতি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন। সাংবিধানিক রক্ষাকবচের জোরে আপাতত সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করতে পারেনি পুলিশ। শনিবার এ নিয়েই রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা। সেখানে তিনি এক দিকে যেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন, আরও ভিডিয়ো আছে। পাশাপাশি, সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যপাল তাঁকে রাজভবনে ডেকে পাঠালেও তিনি যাবেন না। বললেন, ‘‘আপনার পাশে বসাও পাপ!’’
শ্লীলতাহানি প্রসঙ্গ প্রকাশ্যে আসার পরেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নাম না করে মমতাকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, ‘‘দিদিগিরি বরদাস্ত করব না।’’ সপ্তগ্রাম থেকে সেই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘মাননীয় রাজ্যপাল, আমার কী দোষ আপনি বলুন। আমি তো জানিই না ঘটনা পুরো। আমাকে বলছেন, দিদিগিরি চলবে না। কিন্তু আপনি ইস্তফাটা কবে দেবেন?’’ তার পরেই মমতার সরাসরি প্রশ্ন, ‘‘একজন মহিলার উপর অত্যাচার করার আপনি কে?’’ মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁর কাছে এই সংক্রান্ত আরও কিছু ফুটেজ আছে। তিনি বলেন, ‘‘ভয় পাবেন না, কপিটা আমার কাছে আছে। আমি রেখে দিয়েছি। যেটা এডিট করেছেন, সেটাও আমার কাছে আছে। এখনও তো সব বেরোয়নি। আর একটা পেন ড্রাইভ আমি পেলাম।’’ এর পরেই মমতা বলেন, ‘‘আমাকে রাজভবনে ডাকলে আর যাব না। রাস্তায় ডাকবে, রাস্তায় গিয়ে দেখা করে আসব। যা কীর্তি শুনছি, আপনার পাশে বসাও পাপ!’’
রচনার সমর্থনে সপ্তগ্রামের জনসভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘বলছে, লক্ষ্মীর ভান্ডার তুলে দেব। আমি বলি, হাতটা দিয়ে দেখো, তার পর কী করি... সারা জীবন আমি কম মার খাইনি। কিন্তু আমাকে ধমকে, চমকে কাজ হবে না। আপনি যদি চমকে বলেন, এটা করতে হবে, ঠাসিয়ে দুটো চড় মারব। আমি ঘরেও শাসন করি, বাইরেও করতে পারি।’’
মমতা বলেন, ‘‘ওখানে জঘন্য অপরাধ হয়েছে। একটা মেয়ের আত্মসম্মান চলে গেলে আর ফিরে আসে না। সে জানেও না, তাকে দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এটা আগেকার দিনে হত। বেচারা জানতেই পারত না।’’
এ বার ভোটে মোদী সরকারের পতন হবে বলে সপ্তগ্রামের সভা থেকে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘তৃতীয় দফার পর তো চোখ ফেটে জল বেরিয়ে এসেছে। আরও দেখতে থাকুন।’’
সপ্তগ্রামের সভায় মমতা বলেন, ‘‘রচনা ভোটে দাঁড়াতে চাইছিল না। আমাকে বলেছিল, দিদি আমি কোনও দিন রাজনীতি করিনি। আমি ওকে বলি, আমরা কেউই বুঝতাম না। মানুষের কাজ করাই হল আসল কথা। আর এখানে দাঁড়ালে তোমার সুবিধাই হবে। দিদি নম্বর ওয়ানে আরও অনেক কিছু করতে পারবে। রচনাকে রাজি যখন করালাম, আপনারা কি ওকে ভোটটা দেবেন না?’’
মমতা বলেন, ‘‘ফোন করে আমাদের নেতাকে বলেছে, যদি বসে না যাস তা হলে ভোটের পর দেখে নেব। তৃণমূল কাউকে ভয় পায় না। ৩৪ বছর লড়াই করে সিপিএমকে যদি ছুড়ে ফেলতে পারি, তা হলে আপনাকেও ভারতবর্ষ থেকে ছুড়ে ফেলে দেব, এটা মাথায় রাখবেন।’’
মমতা বলেন, ‘‘আমাকে রাজভবনে ডাকলে আর যাব না। রাস্তায় ডাকবে, রাস্তায় গিয়ে দেখা করে আসব। যা কীর্তি শুনছি, আপনার পাশে বসাও পাপ!’’
সপ্তগ্রামের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘ভয় পাবেন না, কপিটা আমার কাছে আছে। আমি রেখেছি। যেটা এডিট করেছেন সেটাও আমার কাছে আছে। এখনও তো সব বেরোয়নি। আর একটা পেন ড্রাইভ আমি পেলাম।’’
এক জন মহিলার উপর অত্যাচার করার আপনি কে? রাজ্যপালকে প্রশ্ন মমতার।
মমতা বলেন, ‘‘মাননীয় রাজ্যপাল, আমার কী দোষ আপনি বলুন? আমি তো জানিই না ঘটনা পুরো। আমাকে বলছেন, দিদিগিরি চলবে না। আপনি ইস্তফাটা কবে দেবেন?’’