যাদবপুরের ভোটের প্রচারে সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুর ‘পুনর্দখলে’ সিপিএমের সৃজন ভট্টাচার্যের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ‘ফ্ল্যাগশিপ’ প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’। নাম করেননি এক বারও। তবে, জানিয়েছেন, ক্ষমতায় ফিরলে এই খাতে এক হাজারের পরিবর্তে দু’হাজার দেবে তাঁদের সরকার।
দীর্ঘ দিনের ‘বামঘাঁটি’ বলে পরিচিত যাদবপুরে শেষ বার বাম প্রার্থী জিতেছিলেন ২০০৪ সালে। সুজন চক্রবর্তী। সে বারের জয়ী প্রার্থী সুজনকে এ বার দমদমে লড়তে পাঠিয়েছে সিপিএম। আর সুজনের শেষ জেতা কেন্দ্র যাদবপুরে তরুণ মুখ সৃজনকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। সেই সৃজনই যাদবপুর ‘পুনর্দখলে’ ভরসা রাখছেন মমতার চালু করা প্রকল্পে। তবে সরাসরি নয়, ঘুরিয়ে। শনিবার বারুইপুরের লাঙলবেড়িয়ায় প্রচার সারেন তরুণ বাম নেতা। গ্রামের মধ্যে লাল ঝান্ডা লাগানো সাইকেল চালিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। শোনেন অভাব-অভিযোগের কথা। একযোগে আক্রমণ করেন বিজেপি-তৃণমূলকে। এই প্রসঙ্গেই ঘুরেফিরে আসে মমতা সরকারের চালু করা প্রকল্পের কথা। সৃজন বলেন, ‘‘বুদ্ধবাবুর সময় বিধবাভাতা, বার্ধক্যভাতা, বাচ্চা মেয়েদের সাইকেল দেওয়া, ২ টাকা কেজি দরে চাল— সবই ছিল। তৃণমূলের সময় আরও দু’টি নতুন প্রকল্প চলছে। সিপিএম কোনও দিন আবার ফিরলে এই প্রকল্পগুলি ডাবল-ডাবল চলবে।’’
পরবর্তীতে আবারও একই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সিপিএম প্রার্থীকে। তখন বিষয়টি আরও বিশদে বুঝিয়ে বলেন সৃজন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ট্যাক্সের টাকা তৃণমূল সরকার নিয়েছে। সেই টাকার একটি অংশ আবার আমাদের দিচ্ছে। আর একটা বড় অংশ খাটের তলায়, ফ্ল্যাটের তলায় ঢুকে পড়ছে। পার্থ, মানিক, অনুব্রতেরা আমাদের পার্টিতে নেই। আমরা যদি কোনও দিন সুযোগ পাই, মানুষের টাকা যতটা মানুষের কাজে লাগানো যায়, পুরোটা লাগাব। তাতে আজ যিনি হাজার টাকা পাচ্ছেন, তিনি আগামী দিনে দু’হাজার টাকা পাবেন। এটা হতেই পারে। কোনও কিছু বাদ যাবে না।’’
সৃজনের দাবি লাঙলবেড়িয়ায় চাপা সন্ত্রাসের পরিবেশ আছে। তবে, এ বারের ভোট অন্য রকম হবে বলেও মনে করেন যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী। যদিও এ কথা মানতে নারাজ ওই লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ। শনিবার সায়নী বারুইপুরের দু’টি বাজারে জনসংযোগ সারেন। দামদর করে কিনে ফেলেন মাছ, মাংসও। বাজার করে বেরোনোর পথে সায়নীকে সৃজনের ‘অন্য রকম ভোট হবে’ এই মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তার জবাবে সৃজনের মতোই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সায়নী বলেন, ‘‘৩৪ বছরে এমন কাজকর্ম করেছে যে, লাল কাপড়টা এখন ঝান্ডার থেকে বেশি দেখা যায় বিরিয়ানির হাঁড়িতে!’’