পান্ডুয়ার ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বম্ব স্কোয়াড। —নিজস্ব চিত্র।
পান্ডুয়ায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার হলেন অভিযোগকারীরই স্ত্রী। বোমার ঘায়ে এক বালকের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছে আরও দুই বালক। তাদেরই এক জনের পিতা পুলিশের কাছে নিজের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। এতেই প্রশ্ন উঠছে, বোমা বিস্ফোরণে বালকের মৃত্যুর ঘটনা কি তা হলে পারিবারিক বিবাদের জের?
হুগলি গ্রামীণের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার বলেন, ‘‘আহত এক শিশুর বাবা একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। এফআইআরে নাম থাকা এক জনকে আমরা গ্রেফতার করেছি।’’
সোমবার সকালে বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পান্ডুয়ার তিন্না নেতাজিপল্লি কলোনি। প্রাণ যায় বছর এগারোর বালক রাজ বিশ্বাসের। তার বাড়ি বর্ধমানের পাল্লা রোডে। পান্ডুয়ায় মামার বাড়িতে এসেছিল সে। আহত বালকদের মধ্যে এক জনের নাম রূপম বল্লভ। অন্য জনের নাম সৌরভ চৌধুরী। পুলিশ সূত্রে খবর, রূপমের বাবা শুকদেব বল্লভই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগপত্রে তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল। এর ভিত্তিতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবারই পান্ডুয়ায় হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে সভা করবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ভোটের আবহে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। বিস্ফোরণের ঘটনার পরেই এলাকায় পৌঁছে যান হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। এনআইএ তদন্তের দাবি তুলে তিন্না মোড়ের কাছে জিটি রোডে পথ অবরোধও করেন তিনি। লকেট বলেন, ‘‘আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা রয়েছে পান্ডুয়ায়। তাই আমাকে উঠে যেতে বলছে। কিন্তু আমি কী করে উঠব? ওই শিশুর মা আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন, এর পর কী হবে? আমাকে বলছিলেন, ধীরে ধীরে আপনারাও চলে যাবেন তো। পুলিশকে কোনও বিশ্বাস নেই। এনআইএ তদন্ত করতে হবে। আশপাশে এ ভাবে বোমা ছড়িয়ে রয়েছে? ভাবতেই পারছি না।’’ ঘণ্টা দেড়েক পর অবশ্য সেই বিক্ষোভ উঠে গিয়েছে।
অন্য দিকে, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত হবে। যাদের তদন্ত করার, তারাই করবে। যাদের শাস্তি পাওয়ার, তারা শাস্তি পাবে। রাজ্য পুলিশ যা করার করছে । রাজ্য পুলিশের কোথাও কোনও গাফিলতি আছে বলে আমরা মনে করি না।’’