(বাঁ দিক থেকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র ।
লোকসভা নির্বাচনের আগে বুধবার বাংলায় শেষ সমাবেশ সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কাকদ্বীপের সেই সভায় আধ ঘণ্টার বক্তৃতায় এক বারের জন্যও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামোচ্চারণ করলেন না তিনি। নাম নিলেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। পাশাপাশি, কাকদ্বীপের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর ভারতের রাজনীতি ‘উত্তাল’ হয়ে উঠবে। ‘দিশাহারা’ হয়ে পড়বে পরিবারতান্ত্রিক বিরোধীদলগুলি।
বুধবার একসঙ্গে তিন কেন্দ্রে প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন মোদী। তার মধ্যে ছিল ডায়মন্ড হারবারও। যে কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সেনাপতি অভিষেককে। তবে এই জনসভায় তাঁর যাবতীয় নিশানায় ছিল তৃণমূল ও কংগ্রেস-সহ জাতীয় স্তরের সব বিরোধী দল। কাকদ্বীপের সভা থেকে তোষণ, কাটমানি থেকে শুরু করে মুসলিমদের ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া এবং বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের রমরমা বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
বুধবার মোদী বলেন, ‘‘বাংলার মানুষদের নিয়ে তৃণমূলের কোনও ভাবনা নেই। শুধু তোলাবাজি এবং কাটমানি নিয়েই ওদের যত ভাবনা। এই তৃণমূলকে কি সাজা দেবেন না? তৃণমূলের সব কাজে কাটমানি চাই। বাচ্চাদের মিড-ডে মিলেও কাটমানি চাই ওদের।’’ এ ছাড়াও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ন্যাসীদের অপমান এবং গালিগালাজ করার অভিযোগ তোলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তা করতে গিয়ে মমতা বা অভিষেকের নাম পুরো বক্তৃতায় এক বারের জন্যও উল্লেখ করেননি তিনি।
পাশাপাশি, বাংলার শেষ সভা থেকে ৪ জুনের পর বাংলা তথা সারা দেশের পরিস্থিতি কী হবে, তা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন প্রধানমন্ত্রী। নিশানা করেছেন তৃণমূল, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলিকে। মোদী বলেন, ‘‘৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে দেশের রাজনীতি উথালপাথাল হবে। পরিবারতান্ত্রিক দলগুলি আপনা থেকেই দিশাহারা হয়ে যাবে। ওই দলগুলির কর্মীরাও হাঁপিয়ে উঠেছে। ওরাও দল থেকে সরবে।’’
একই সঙ্গে কাকদ্বীপের সমাবেশে স্পষ্ট মেরুকরণের বার্তা দিতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোষণ-অভিযোগ তুলে জনবিন্যাস বদল নিয়েও তীব্র আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের শাসকদল অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলির জনবিন্যাসে বদল ঘটিয়েছে। এবং ভোটব্যাঙ্ককে তুষ্ট করতেই তৃণমূল এই কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘অনুপ্রবেশকারীরা বাংলায় এসে আপনাদের জমিজায়গা কেড়ে নিচ্ছে। যুবদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। পুরো দেশ চিন্তিত। বাংলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে জনবিন্যাস বদলানো হয়েছে। সিএএ নিয়ে কেন মিথ্যা বলেছে, কেন বিরোধিতা করেছে? অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকানোর জন্য। হিন্দু শরণার্থীদের জায়গা দেবে না তৃণমূল। মতুয়াদের থাকতে দিতে চায় না। ৪ জুনের পর তৃণমূলের সব হাওয়া বেরিয়ে যাবে।’’