মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —গ্রাফিক সনৎ সিংহ।
১ জুন সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট। ওই দিনই দিল্লিতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক আহ্বান করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। কিন্তু সেই বৈঠকে যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিলেন তৃণমূলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার কলকাতা উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে বড়বাজারে সভা ছিল মমতার। সেই সভা থেকেই মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি এ বার হারবে। ওরা সরকারে আসতে পারবে না। ১ তারিখ তো ‘ইন্ডিয়া’ টিম মিটিং ডেকে দিয়েছে।’’ তার পরেই মমতা বলেন, ‘‘কিন্তু আমি বলেছি, আমি ওই বৈঠকে যেতে পারব না। ওই দিন বাংলায় ন’টি আসনে ভোট রয়েছে। বাংলায় ছাড়াও বিহারে ভোট রয়েছে। উত্তরপ্রদেশে ভোট রয়েছে। অখিলেশ কী ভাবে যাবে?’’ তা ছাড়াও মমতা বলেন, ‘‘এক দিকে ভোট, অন্য দিকে দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণকার্য আমাকে তত্ত্বাবধান করতে হবে। ওটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’
তবে বিরোধী জোটের বৈঠকে তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধি যাবেন কি না, সে ব্যাপারে মমতা অবশ্য কিছু স্পষ্ট করেননি। ওই দিন মমতারও ভোট রয়েছে। তিনি দক্ষিণ কলকাতার ভোটার। ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির অন্যতম সদস্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে প্রার্থী। ওই দিন তাঁরও ভোটও রয়েছে।
মাঝে মমতার একটি কথা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন , ‘ইন্ডিয়া’র সরকার গঠনের জন্য তিনি বাইরে থেকে সমর্থন দিয়ে দেবেন। যার অর্থ দাঁড়িয়েছিল, বিরোধী জোটের সরকার হলে তৃণমূল তাতে অংশীদার হবে না। মমতার সে কথা নিয়ে বাংলার বাম-কংগ্রেস প্রত্যাশিত ভাবেই বলেছিল, তৃণমূলনেত্রী বিজেপিকে বার্তা দিতেই ওই কথা বলেছেন। পরে যদিও মমতা সে কথার ব্যাখ্যা দেন। এবং বলেন, তাঁর বলা কথা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। তবে সোমবারের সভা থেকে মমতা স্পষ্টই বলেন, ‘‘তৃণমূল ছাড়া ‘ইন্ডিয়া’র সরকার হবে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখানে কংগ্রেস এবং সিপিএম চাইছে ভোট কেটে বিজেপিকে জিতিয়ে দিতে।’’ উত্তর কলকাতায় বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন প্রবীণ নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। উল্লেখ্য, তৃণমূলের সমর্থনেই প্রদীপ রাজ্যসভায় সাংসদ ছিলেন। কয়েক মাস হল তাঁর রাজ্যসভার সাংসদ পদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সোমবার প্রদীপের নাম না করেও কটাক্ষ করেন মমতা। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘যিনি এখানে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন, তিনি তো হাঁটতেই পারেন না! ভোট কাটতে দাঁড়িয়েছেন।’’