গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কংগ্রেস নয়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা জেডিএস প্রধান এইচডি দেবগৌড়ার নাতি প্রজ্জ্বল রেভান্নার যৌন কুকীর্তির ভিডিয়ো তিনি শুধুমাত্র বিজেপিরই এক নেতাকে দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার এমনই দাবি করলেন, প্রজ্জ্বলের গাড়ির প্রাক্তন চালক কার্তিক।
সেই বিজেপি নেতার নামও প্রকাশ্যে এনেছেন কার্তিক— হোলেনারসিপুরার প্রাক্তন বিধায়ক দেবরাজ গৌড়া। প্রজ্জ্বল যে হাসন কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ, তারই অন্তর্গত ওই বিধানসভা কেন্দ্র। ঘটনাচক্রে, ২০২৩-এ কর্নাটকের বিধানসভা ওই আসনে প্রজ্জ্বলের পিতা তথা দেবগৌড়ার পুত্র এইচডি রেভান্নার কাছে হারতে হয়েছিল দেবরাজকে।
একটি ভিডিয়োবার্তায় কার্তিক মঙ্গলবার বলেন, ‘‘যে নারীদের প্রজ্জ্বল যৌন নির্যাতন করেছেন, তাঁরা যাতে সুবিচার পান সেই উদ্দেশ্যেই ওই ভিডিয়োগুলি আমি দেবরাজকে দিয়েছিলাম। দেবরাজ ছাড়া অন্য কাউকে ওই ভিডিয়োর পেন ড্রাইভ আমি দিইনি।’’ কিন্তু কেন এমন করলেন তিনি? কার্তিক বলেছেন, ‘‘আমার একটি জমি জোর করে নিজেদের নামে লিখিয়ে নিয়েছিল রেভান্নার পরিবার। তাই আমি বিচার চাইতে দেবরাজের কাছে গিয়েছিলাম।’’
ঘটনাচক্রে, কর্নাটকে এখন বিজেপির সহযোগী জেডিএস। সে রাজ্যের ২৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৪টিতে ভোট হয়ে গেলেও বাকি অর্ধেক আসনে আগামী ৭ মে তৃতীয় দফায় ভোট। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি অস্বস্তিতে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। দেবরাজ অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন, গত ডিসেম্বরে প্রজ্জ্বলের যৌন কুকীর্তির হাজার তিনেক ভিডিয়ো ভরা ওই পেন ড্রাইভ তাঁর হাতে এসেছিল। তিনি বিষয়টি বিজেপির রাজ্যে সভাপতি বিওয়াই বিজয়েন্দ্রকে (প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার পুত্র) জানিয়েছিলেন।
গত পাঁচ বছর ধরে হাসনের সাংসদ কয়েক হাজার মহিলাকে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতন করে সেই ভিডিয়ো নিজেই তুলে রাখতেন বলে দেবরাজের দাবি। তিনি বলেছেন, ‘‘নির্যাতিতাদের ব্ল্যাকমেল করাই উদ্দেশ্য ছিল প্রজ্জ্বলের।’’ ঘটনার পরেই অবশ্য দেশ ছেড়েছেন দেবগৌড়ার নাতি। দেবরাজের অভিযোগ, প্রজ্জ্বলকে মদত দিয়েছেন তাঁর বাবা রেভান্নাও। জেডিএসের ঘরোয়া রাজনীতিতে দেবাগৌড়ার দুই পুত্র কুমারস্বামী এবং রেভান্নার বিরোধ সুবিদিত। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রজ্জ্বলকে সাসপেন্ড করে কুমারস্বামী দলের উপর নিয়ন্ত্রণ আরও নিরঙ্কুশ করলেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।