স্বাতী মালিওয়াল। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভার আম আদমি পার্টি (আপ)-র সাংসদ স্বাতী মালিওয়ালকে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমারের বিরুদ্ধে এফআইআর করল দিল্লি পুলিশ।
আজ দিল্লি পুলিশের একটি দল স্বাতীর বাড়িতে গিয়ে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তাঁর বয়ান নেয়। পুলিশ সূত্রের দাবি, লিখিত অভিযোগে স্বাতী বলেছেন, বৈভব তাঁকে চড় ও লাথি মেরেছেন, তাঁর পেটে আঘাত করেছেন, এমনকি লাঠি দিয়েও মেরেছেন। আজ এক্স হ্যান্ডলে স্বাতী লেখেন, ‘খুব খারাপ হয়েছে আমার সঙ্গে। পুলিশকে বিবৃতি দিয়েছি। আশা করি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা বলেছেন, ‘‘যদি অরবিন্দ কেজরীওয়াল গোটা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত থাকেন, তা হলে আশা করব, তিনি যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবেন।’’
বৈভব শুধু কেজরীওয়ালের ব্যক্তিগত সচিবই নন, মুখ্যমন্ত্রীর ওষুধপত্র থেকে শুরু করে খাওয়াদাওয়া, সবেরই দেখভাল করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে সেই বৈভবের বিরুদ্ধেই স্বাতীকে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ ওঠার পর থেকে বিজেপি নেতারা বলছিলেন, সচিবকে আড়াল করছেন কেজরীওয়াল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পুলিশে অভিযোগ করছেন না কেন? যদিও এর পরেও লখনউ বিমানবন্দরে কেজরীওয়ালের সঙ্গে থাকা প্রতিনিধিদলে বৈভবকে দেখা যায়।
আজ লখনউয়ে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দৃশ্যতই বিরক্ত কেজরীওয়াল তাঁর পাশে বসা দলীয় নেতা সঞ্জয় সিংহকে বিষয়টি নিয়ে বলতে ইশারা করেন। সঞ্জয় বলেন, ‘‘যন্তর-মন্তরে কুস্তিগিরদের সমর্থনে যাওয়া স্বাতী মালিওয়ালকে সেই সময়ে বিজেপির নির্দেশে দিল্লি পুলিশ টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।’’
ঘটনাটি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে খতিয়ে দেখা শুরু করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। বৈভবের বক্তব্য জানতে চেয়ে আগামিকাল সকাল ১১টার মধ্যে তাঁকে জাতীয় মহিলা কমিশনের দফতরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। স্বাতীর মা সঙ্গীতা মালিওয়ালন বলেন, ‘‘এই লড়াই আমার মেয়ের। সে ঠিক সময়ে মুখ খুলবে।’’ পরে স্বাতী এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘যাঁরা আমার চরিত্রহননের চেষ্টা করে বলেছেন, অন্য কোনও দলের নির্দেশে এই সব করছি, তাঁদেরও ঈশ্বর সুখী রাখুন’।
স্বাতীর ঘটনা নিয়ে প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, ‘‘কোনও মহিলার উপরে অত্যাচার হয়ে থাকলে সেই নির্যাতিতার পক্ষেই কথা বলব, তা তিনি যে দলেরই হোন না কেন। আশা করব যদি কেজরীওয়াল বিষয়টি জানেন, তা হলে নিশ্চয়ই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।’’ বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘যারা মহিলা কুস্তিগিরদের ব্যাপারে পদক্ষেপ করে না, হাথরস-উন্নাওয়ে নীরব থাকে, তাদের এ বিষয়ে বলা সাজে না।’’