(বাঁ দিকে) নন্দীগ্রামে নিহত বিজেপি কর্মী। এলাকায় উত্তেজনা। (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
নন্দীগ্রামে বিজেপির মহিলা কর্মীকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল নির্বাচন কমিশন। জেলা প্রশাসনকে অবিলম্বে ঘটনার রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ষষ্ঠ দফায় আগামী ২৫ মে তমলুকে ভোটগ্রহণ। তার আগে খুনের ঘটনায় নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
বুধবার রাতে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রাতে এলাকায় হামলা চালায়। এক মহিলা কর্মীকে কুপিয়ে খুন করা হয়। জখম হন বেশ কয়েক জন বিজেপি কর্মী। তাঁদের মধ্যে এক জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তিনি নিহত বিজেপি কর্মীর ছেলে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। যদিও এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের কারণেই এই খুন।
নন্দীগ্রাম এলাকায় প্রচারের শেষ দিন বৃহস্পতিবারই। তার আগে বুধবার ভোটপ্রচারের শেষ লগ্নে সোনাচূড়ার মনসাপুকুর বাজার এলাকায় রাতে পাহারা দিচ্ছিলেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময়ই বাইকে করে আসা এক দল দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওই বিজেপি কর্মীদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, রথিবালা আড়ি নামে ওই বিজেপি কর্মীকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি কোপ চালাতে থাকে দুষ্কৃতীরা। রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। মাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন রথিবালার পুত্র সঞ্জয় আড়িও। চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। জখমদের তৎক্ষণাৎ নিয়ে যাওয়া হয় নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। রথিবালাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও অন্তত সাত জন বিজেপি কর্মী।
ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকায় বিক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করা হয়। ঘটনার দায় অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান দাবি করেছেন, নন্দীগ্রামে পিছিয়ে পড়ার ভয়েই স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী অশান্তি করাচ্ছেন। বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই রথিবালা খুন হয়েছেন বলেও দাবি সুফিয়ানের। ভোটের আগে প্রচারের শেষ দিনের এই অশান্তির রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কমিশন।