গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
দুপুরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। মমতা বলেছিলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যের ১৫০০ পুলিশকে ভিন্রাজ্যে ভোট পাহারা দিতে নিয়ে গিয়েছে কমিশন। অথচ ওরা যে সেখান থেকে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবে তার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি।’’ এ ব্যাপারে কমিশনকে কিছুটা চ্যালেঞ্জের সুরেই মমতা বলেছিলেন, ‘‘হয় ওঁদের ভোট দেওয়ার অধিকার দিন না হলে আমরা ওঁদের ওখান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসব। আপনারা যা পারেন করবেন। অনেক হয়েছে।’’ মমতার সেই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভিন্রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া রাজ্যের পুলিশবাহিনীর ভোট দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হল কমিশন।
শুক্রবার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এই পুলিশকর্মীদের ভোট হবে ইলেকট্রনিক্যলি ট্রান্সমিটেড পোস্টাল ব্যালট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা ইটিপিবিএমএস পদ্ধতিতে। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই বাংলা থেকে ভিন্রাজ্যে নির্বাচনী কর্তব্যপালন করতে যাওয়া পুলিশবাহিনীর সঙ্গে থাকা ইউনিট অফিসারদের ফোনে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের এ বিষয়ে জানাবেন।
ইটিপিবিএমএস পদ্ধতিতে সাধারণত ভোট দেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। বাড়ি থেকে দূরে নির্বাচনের কাজ করতে যাওয়া সরকারি অফিসারদের জন্যও এই ব্যবস্থা চালু আছে। তার পরও কেন গত দু’টি ভোটে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভিন্রাজ্যে যাওয়া পুলিশকর্মীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হল না? মুখ্যমন্ত্রী মমতার অভিযোগ পেয়েই কি নড়ে চড়ে বসল কমিশন?
শুক্রবার মমতা রায়নার সভা থেকে বলেছিলেন, ‘‘আমার সরকারি কর্মচারীরা, আমার পুলিশের লোকেরা যারা জীবন দিয়ে কাজ করে, যদি তারা ভোটাধিকার না পায় নির্বাচন কমিশন জেনে রাখবেন, যতদূর এটা নিয়ে লড়াই করতে হয় আমরা করব। ছেড়ে কথা বলব না। আইনে কখনও ডিসক্রিমিনেশন হয় না। এখানে ডিসক্রিমিনেশন করা হচ্ছে। আপনারা বিজেপির কথায় বিএসএফ, সিএপিএফ, আইটিবিপিকে অনুমতি দিচ্ছেন পোস্টাল ব্যালটের। আমাদের রাজ্যের পুলিশকে কেন অধিকার দেবেন না? এ ভাবে কতদিন চলবে? কার হয়ে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। সারা বিশ্ব ছি ছি করছে, লজ্জা করছে না?’’
কমিশন অবশ্য বলেছ, ভিন্রাজ্য থেকে ভোট দিতে হলে আগে থেকে আবেদন করতে হয়। ব্যবস্থা আগে থেকেই ছিল। আবেদন করা হয়নি বলেই তা কার্যকর করা যায়নি।