ভিন্রাজ্যে ভোটের ডিউটি করতে যাওয়া পুলিশকর্মীরা কী ভাবে ভোট দেবেন? — ফাইল চিত্র।
পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার কথা শুনেছি সবাই। কিন্তু জানেন কি, এ ছাড়াও ভোটাধিকার প্রয়োগের রয়েছে আলাদা পদ্ধতি? যে পদ্ধতি অনুসরণ করে এত দিন ভোট দিয়ে আসছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ান থেকে আধিকারিকেরা। কমিশনের পরিভাষায় যে পদ্ধতির নাম ইটিপিবিএমএস। এ বার সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে ভোট দেবেন বাংলা থেকে ভিন্রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পুলিশকর্মীরা।
পূর্ব বর্ধমানের রায়নায় নির্বাচনী জনসভা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন যে, ভোটের ডিউটি করাতে বাংলা থেকে দেড় হাজার পুলিশকর্মীকে ভিন্রাজ্যে নিয়ে গিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাঁদের কাউকেই পোস্টাল ব্যালট দেওয়া হয়নি। ফলে এ রাজ্যে ডিউটি করতে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারলেও, ভিন্রাজ্যে কাজে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন না বাংলার বাসিন্দা পুলিশকর্মীরা। তার পরেই কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে মমতা বলেন, ‘‘হয় ভোট দেওয়ার অনুমতি দিন, না হলে আমি সরিয়ে নিয়ে আসব। আপনি যা করেন, করবেন।’’ এর পর কমিশন জানিয়ে দেয়, বহু দিন ধরেই ইটিপিবিএমএস পদ্ধতি চালু আছে। মূলত সেনাবাহিনী এই পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে থাকে। সেই পদ্ধতিতেই এ বার বাংলার ভোটেও অংশ নিতে পারবেন ভিন্রাজ্যে ডিউটি করতে যাওয়া এ রাজ্যের পুলিশকর্মীরা।
সাধারণত, ভোটের কাজে যাঁরা ব্যস্ত থাকেন, তাঁরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেন। অর্থাৎ, ভোটের নির্ধারিত দিনের আগেই বিশেষ ব্যালট ডাকযোগে পৌঁছয় সেই সরকারি কর্মচারীর কাছে। তিনি তা পূরণ করে আবার সরকারি দফতরে জমা করেন। এ ছাড়াও একাধিক পদ্ধতি আছে দূর থেকে ভোটদানের। তেমনই হল এই ইটিপিবিএমএস (‘ইলেকট্রনিক্যালি ট্রান্সমিটেড পোস্টাল ব্যালট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’) পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে কী ভাবে দেওয়া হয় ভোট? কমিশন জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ভিন্রাজ্যে ডিউটি করতে যাওয়া পুলিশকর্মীদের (কমিশনের পরিভাষায় ‘সার্ভিস ভোটার’) ভাগ করা হয় ইউনিটে। প্রতিটি ইউনিটের এক জন করে ইউনিট অফিসার থাকেন। এ ছাড়াও থাকেন এক জন করে রেকর্ড অফিসার। যাঁর কাছে ইউনিটের প্রত্যেক সদস্যের যাবতীয় তথ্য থাকে। ইটিপিবিএমএসের ক্ষেত্রে কমিশন থেকে ইউনিট অফিসারের কাছে ইমেল করা হবে নির্দিষ্ট পুলিশকর্মীর ‘ইলেকট্রনিক পোস্টাল ব্যালট’। তিনি সেই মেল ফরোয়ার্ড করবেন সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীর কাছে। কিন্তু পুলিশকর্মী ওই ইমেল খুলতে পারবেন না। সে জন্য লাগবে একটি পৃথক পিন। কমিশন যে পিনটি আবার পাঠাবে রেকর্ড অফিসারের কাছে। রেকর্ড অফিসার সেই পিনটি পাঠিয়ে দেবেন সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীকে। পুলিশকর্মী এ বার পিনটি সংগ্রহ করে তার সাহায্যে খুলবেন ইউনিট অফিসারের পাঠানো ‘ইলেকট্রনিক পোস্টাল ব্যালট’। সেই ব্যালটে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন ওই পুলিশকর্মী। তার পর ভোট দেওয়া ব্যালটটি তিনি ডাকযোগে পাঠিয়ে দেবেন রিটার্নিং অফিসারের কাছে।
কমিশন সূত্রে খবর, এই পদ্ধতি দীর্ঘ দিন ধরেই চালু ছিল। কিন্তু এত দিন এই পদ্ধতি অনুসরণ করে ভোট দিতেন সেনাকর্মীরা। এ বার যে পদ্ধতির মাধ্যমে ভোট দেবেন বাংলা থেকে ভিন্রাজ্যে ভোটের কাজে যাওয়া পুলিশকর্মীরাও।