মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে নতুন মামলা দায়ের করল ইডি। সংসদে ঘুষ নিয়ে প্রশ্নের মামলায় মঙ্গলবারই তৃণমূলের কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ওই মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এ দায়ের করা হয়েছে মামলাটি।
গত সপ্তাহেই মহুয়াকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু ইডির সমনে সাড়া না দিয়ে মহুয়া জানিয়েছিলেন, তিনি ভোটের আগে তাঁর কেন্দ্র কৃষ্ণনগরেই থাকবেন এবং সেখানে ভোটের প্রচার করবেন। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নতুন করে সমন জারি করেছে মহুয়া এবং তাঁর পরিচিত দুবাইয়ের ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে। ইডি সূত্রে খবর, দু’জনকেই বিদেশি মুদ্রা বিনিময় (ফেমা) আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
তৃণমূলের কৃষ্ণনগরের প্রার্থী মহুয়াকে এর আগে দু’বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। মহুয়া অবশ্য দু’বারই সেই তলব এড়িয়ে গিয়েছেন। দিল্লি যাননি। কারণ হিসাবে জানিয়েছেন, তাঁর ভোট সংক্রান্ত ব্যস্ততার কথা। একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের দিন কিছু পরে নির্ধারিত করার অনুরোধও করেছিলেন তিনি। তবে ইডি যে লোকসভা প্রার্থীর ভোট সংক্রান্ত ব্যস্ততাকে গুরুত্ব দেয়নি তা স্পষ্ট মঙ্গলবারের সমনে।
কিছু দিন আগেই সংসদে ‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’কাণ্ডের সূত্রেই মহুয়ার কলকাতার বাড়ি এবং করিমপুরের অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআইয়ের একটি দল। এ বার ইডি মামলা করল কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, ভোটের আগে অবিজেপি রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি বাড়তি সুবিধা পেতে চাইছে বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছে তৃণমূল। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতারি এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির পর বিজেপির উদ্দেশ্য আরও স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করছে বিরোধী দলগুলি। কিন্তু এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি বলে মত বিরোধীদের।
সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে এবং দফতরে সিবিআই তল্লাশির পর এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি লিখেছিলেন মহুয়াও। সেই চিঠিতে মহুয়া বলেছিলেন, কমিশনের উচিত ভোটের সময় এই ধরনের এজেন্সি কী ভাবে কাজ করবে তার একটি নিয়ম ঠিক করে দেওয়া। কারণ কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন শাসকদল বিজেপি যে ভাবে এদের ব্যবহার করছে তাতে ভোটের ময়দানে শাসক এবং বিরোধী দলের সমতা রক্ষা হচ্ছে না। মহুয়া এ-ও লিখেছিলেন সিবিআইয়ের এই ধরনের তল্লাশির জন্য তাঁর ভোটের প্রচারের কাজও ব্যাহত হচ্ছে।
মহুয়ার সেই চিঠির কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে নতুন মামলা করল ইডি।