তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে মহুয়া মৈত্রর নাম ঘোষণার দিনই কৃষ্ণনগরে এসে তাঁকে আক্রমণ ক করে গেলেন সিপিএমের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে তিনিই দলের প্রার্থী হচ্ছেন কি না সেই প্রশ্নও রবিবার পিএম কর্মীদের মুখে-মুখে ঘুরে বেড়াল।
এর আগে ইনসাফ যাত্রার পরেও একাধিক বার এই কেন্দ্রে সভা করে গিয়েছেন সিপিএমের যুবনেত্রী। এ দিন কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ে জনসভার গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির আয়োজিত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন মীনাক্ষীই। এ দিনই ব্রিগেডের ‘জনগর্জন’ সভার মঞ্চ থেকে লোকসভায় দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই নিশ্চিত হয়ে যায়, কৃষ্ণনগরে মহুয়াই ফের তৃণমূূলের প্রার্থী হয়েছেন।
এ দিন প্রথম থেকেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিজেপি এবং তৃণমূলকে একসঙ্গে আক্রমণ শুরু করেন মীনাক্ষী। তিনি জানান, তাদের স্কুলে একটা পাতলা আর একটা মোটা বন্ধু ছিল। তারা নিজেদের মধ্যে মারপিট করতে গেলে মিনাক্ষীরা বাধা দিয়ে বলত, নিজেদের মধ্যে মারপিট না করতে। আর তারই ফাঁকে পাতলা বন্ধু মোটা বন্ধুকে মেরে চলে যেত। মীনাক্ষীর দাবি, ঠিক সেভাবেই সংসদে মহুয়ার তৃণমূল আর বিজেপি নেতারা নিজেদের মধ্যে মারপিট করে আসলে ওয়াকওভার দিয়েছে বিজেপিকে। যাতে বিজেপি একের পর এক বিল পাশ করিয়ে নিতে পারে। তৃণমূলের সংসদ থেকে বেরিয়ে আসার আসল উদ্দেশ্যই হল বিজেপিকে বিনা বাধায় বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। শশী থারুরের সঙ্গে মহুয়ার মদের গ্লাস ও চুরুট হাতে একাধিক ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল।
এই প্রসঙ্গে কারও নাম না করেও মীনাক্ষী বলেন, “কে কী পরবেন, কী পান করবেন, কে কী মুখে টানবেন তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু আমাদের জন্য কী করলেন? কৃষ্ণনগরের জন্য কী করলেন?”এদিন মুকুটমণি অধিকারীকে পদত্যাগ করানো হবে কি না সেই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি মহুয়াকে কটাক্ষ করে মীনাক্ষী বলেন, “উনি খুব লেখাপড়া জানেন। ইংরাজিতে পটর পটর করেন। ব্যক্তিত্ব দিয়ে উনি অনেককেই আকৃষ্ট করতে পারেন। এর পর তো বাড়ি-বাড়ি ভোট চাইতে আসবেন।” মীনাক্ষীর দাবি, অম্বানি হোক আর হিরানন্দানি— এঁদের সকলেরই একচেটিয়া পুঁজি লুট করা ছাড়া আর কোনও কাজ নেই। কেউ অম্বানির কোলে দোল খায় তো কেউ হিরানন্দানির কোলে।”
এ দিন মঞ্চ থেকে মীনাক্ষী যখন মহুয়াকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছেন তখন মঞ্চের নীচে সিপিএম কর্মীদের মধ্যে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে মীনাক্ষীর প্রার্থী হওয়া নিয়ে জল্পনা ঘুরে বেড়াতে শুরু করে। নিচুতলার অনেকে তেমন আশাও রকরতে থাকেন। তবে সভার শেষে সিপিএমের নদিয়া জেলা নেতাদের এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সেই সম্ভাবনা প্রায় নেই বলে তাঁরা জানিয়ে দেন। পাশাপাশি তাঁরা এও জানিয়েছেন, জেলারই কাউকে প্রার্থী করার জন্যই তাঁরা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সুপারিশ করেছেন।