Lok Sabha Election 2024

ভিড়ে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ৪ জুন ৪০০ পার

এ দিন বালুরঘাট রেলমাঠে বায়ু সেনার চপার থেকে নামেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেল পৌনে ৩টে নাগাদ মঞ্চে ওঠেন। জনতার ‘মোদী-মোদী’ ধ্বনির মধ্যেই ভাষণ শুরু করেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ ও বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২৪
Share:

বালুরঘাটে বিজেপির জনসভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: অমিত মোহান্ত।

বালুরঘাটের বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের সমর্থনে আয়োজিত জনসভায় ভিড় দেখে দৃশ্যত খুশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার সভামঞ্চ থেকে বললেন, ‘‘৪ জুন ৪০০ পার।’’ বিজেপির হিসাবে লক্ষাধিক মানুষ ভিড় করেন সভায়। পুলিশের হিসাবে, ভিড় ছিল ৭০ হাজারের কম-বেশি। বালুরঘাটের সভায় ‘তেমন’ ভিড় হয়নি বলেই দাবি তৃণমূলের।

Advertisement

এ দিন বালুরঘাট রেলমাঠে বায়ু সেনার চপার থেকে নামেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেল পৌনে ৩টে নাগাদ মঞ্চে ওঠেন। জনতার ‘মোদী-মোদী’ ধ্বনির মধ্যেই ভাষণ শুরু করেন নরেন্দ্র মোদী।তিনি বলেন, ‘‘জনসমুদ্র ও মানুষের উচ্ছ্বাস (চপার থেকে) দেখেছি। চার দিকে লোক‌! এই উচ্ছ্বাস আর মা-বোনেদের আশীর্বাদ বলছে— বাংলায় বিকাশের জয় হবে।’’ মোদী বলেন, ‘‘আজ পুরো বাংলা বলছে— ৪ জুন ৪০০ পার।’’

বাংলার সঙ্গে সঙ্গে বালুরঘাটের‌ও বিকাশ হবে আশ্বাস দিয়ে মোদী দক্ষিণ দিনাজপুরে রেলের উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করেন ও বালুরঘাটে বিমান বন্দরের প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘বালুরঘাট-দিল্লি রেল চালু করেছি। বালুরঘাটকে অমৃত ভারত স্টেশনে যুক্ত করা হয়েছে। বিমানবন্দর চালুর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূল চাইছে না যে, এখানে বিমানবন্দর হোক।’’

Advertisement

এ বিষয়ে তৃণমূলের দাবি, জেলার কোনও উন্নয়নই করেনি বিজেপি। তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘বুনিয়াদপুরের ওয়াগন কারখানা বন্ধ করেছেন ওঁরা। একটা ট্রেন বাতিল করে একটা চালু করেছেন। উন্নয়ন না করে ভাষণ দিচ্ছেন।’’

সূত্রের দাবি, এ দিন সকাল থেকেই তপন, হিলি, গঙ্গারামপুর, কুশমণ্ডি-সহ জেলার সমস্ত ব্লক থেকে বালুরঘাট শহরে মানুষের ঢল নামে। বাস, ছোট গাড়ি ও টোটোয় চেপে এবং পায়ে হেঁটে বহু মানুষের গন্তব্য ছিল প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল। দুপুর ১টা নাগাদ শহর লাগোয়া চকভৃগু অঞ্চলের গোবিন্দপুরের রেলমাঠ ভরে যায়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়ালের দাবি, ‘‘২০১৯ সালে এ জেলার বুনিয়াদপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যে ভিড় ছিল, এ বার বালুরঘাটের সভায় তা ছিল না।’’

রায়গঞ্জেও সকাল ৯টা থেকেই মাঠে লোক আসা শুরু হয়েছিল। বিকেল ৩টে নাগাদ বাঁশ-লোহার ঘেরাটোপে থাকা মাঠে থিকথিকে ভিড়। বিজেপির দাবি, জনসভাতে দেড় লক্ষেরও বেশি লোকের ভিড় হয়েছে। পুলিশের দাবি, প্রায় ৮০ হাজার লোক হয়েছে। তৃণমূলের অবশ্য বক্তব্য, ৪০-৫০ হাজার লোক হতে পারে। অনেক লোক মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে এসেছিলেন বলেও তৃণমূলের দাবি। যদিও বিজেপি ওই দাবি অস্বীকার করেছে।

বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আসেন। চার পাশে ‘মোদী-মোদী’ রব ওঠে। বিকেল ৫টায় তিনি মঞ্চ ছেড়ে যেতেই চরম বিশৃঙ্খলার অভিযোগ। প্রবল হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কি। ভাঙল প্লাস্টিকের চেয়ার, বাঁশের ব্যারিকেড। উপড়ে গেল কাঠের খুঁটি, লোহার গার্ড রেল। মঙ্গলবার রায়গঞ্জের দক্ষিণ গোয়ালপাড়া এলাকায় রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কার্তিকচন্দ্র পালের সমর্থনে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার দৃশ্য।

এ দিন বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের ‘মোদী-মোদী’ বা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের জেরে কিছু ক্ষণের জন্য ভাষণ থামিয়ে জনতার দিকে তাকিয়ে হাসেন মোদী। ফের স্লোগান শুরু হয়। জনতার উচ্ছ্বাস দেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের ভালবাসা আমার সঙ্গে থাকল। কোনও দিন ভুলব না।’’

এ বারই প্রথম রায়গঞ্জে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভা হল। এ দিন তিনি মঞ্চে উঠতেই মোবাইল ফোনে তাঁর ছবি তোলার জন্য সভাস্থলে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল সংলগ্ন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয় বলে সূত্রের দাবি। বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, ‘‘মোদীজিকে দেখার জন্য জনস্রোত আছড়ে পড়ে। সভাস্থলে ও বাইরে স্বাভাবিক ঘটনাই ঘটেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement