অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
বঙ্গোপসাগরে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে রেমাল ঘূর্ণিঝড়। শক্তি বাড়িয়ে তা ক্রমশ এগিয়ে আসছে ভূখণ্ডের দিকে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, রবিবার মাঝরাতেই স্থলভাগে আছড়ে পড়বে রেমাল। বির্পযয় মোকাবিলায় প্রশাসন নানা পদক্ষেপ করেছে। তবে সাধারণ মানুষ যাতে এই ঝড়ের কবলে বিপদে না পড়েন, তা দেখার দায়িত্ব দলীয় নেতা-কর্মীদের নিতে বললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাদুড়িয়ায় ভোটপ্রচারে এসে তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্বের উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘‘একটা মানুষও যাতে অসুবিধায় না পড়েন, তা আপনাদের সুনিশ্চিত করতে হবে।’’ পাশাপাশি, বাদুড়িয়া থেকেই তিনি ফোন করেন মথুরাপুরের তৃণমূল প্রার্থী বাপি হালদারকে। কুলপি এবং রায়দিঘিতে গিয়ে ঝড় মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ তাঁকে দিয়েছেন অভিষেক।
রবিবার অভিষেকের তিনটি কর্মসূচি ছিল। জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের গোসাবা বিধানসভায় তাঁর প্রথম জনসভাটি হওয়ার কথা ছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হেলিকপ্টারে সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই সকালেই গোসাবার সভাটি বাতিল করে দিয়েছিলেন অভিষেক। বিকেলে মেটিয়াবুরুজ বিধানসভা কেন্দ্রে একটি রোড-শো করার কথাও ছিল তাঁর। আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি দেখে রোড-শো বাতিলের কথা জানায় অভিষেকের দফতর। তবে বাদুড়িয়াতে আসেন তিনি। সভাও করেন।
বসিরহাটের হাজি নুরুল ইসলামের সমর্থনে বাদুড়িয়ায় সভা করেন অভিষেক। রাজনৈতিক সভা হলেও বাদুড়িয়ায় অভিষেকের বক্তৃতা জুড়ে ছিল রেমাল ঘূর্ণিঝড় নিয়ে উদ্বেগ। শুরুতেই তিনি জানান, আবহাওয়া পরিস্থিতির বিষয়টি মাথায় রেখে সভা স্থগিত করার কথা ভাবছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত বাদুড়িয়াবাসীর উৎসাহের কারণেই সভা করতে এসেছেন। ঝড়-জল মাথায় নিয়ে সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদও জানান অভিষেক।
দুর্যোগের আশঙ্কা করেই তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্বকে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। রবিবারের সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘বাদুড়িয়া, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি-সহ যেখানে যেখানে ঝড়ের প্রভাব পড়বে, সেখানে সেখানে আমরা ব্যবস্থা করে ফেলেছি। এক একটা মানুষের জীবন আমাদের কাছে মণিমুক্তের মতো। রাজনীতি অন্য সময় হবে। যদি আগামী ২৪ ঘণ্টায় কোথাও কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকে, তা করার দরকার নেই। মানুষের পাশে আমাদের থাকতে হবে।’’ অভিষেক আরও বলেন, ‘‘একটা মানুষেরও যেন অসুবিধা না হয়, কেউ যেন অভুক্ত না থাকে, কোনও বাচ্চার যাতে সমস্যা না হয়, তা আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে। আমি তৃণমূলের সকল স্তরের কর্মী সমর্থকদের অনুরোধ করব।’’
ঝড় নিয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি রবিবারে জনসভা থেকে সন্দেশখালি ইস্যুতে বিজেপিকে নিশানা করেছেন তৃণমূলের সেনাপতি। অভিষেক বলেন, ‘‘৪ জুন নয়, এখানে মে মাসের ৪ তারিখই ফল বেরিয়ে গিয়েছে। যখন সন্দেশখালির ভিডিয়ো জনসমক্ষে এসেছে, তখনই ফলাফল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। সেই ভিডিয়োতে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি স্বীকার করেছেন, সন্দেশখালিতে কোনও ধর্ষণ, ঝামেলা হয়নি। তৃণমূল নেতাদের বিপদে ফেলতেই বিজেপি নেতৃত্ব মহিলাদের দু’হাজার টাকা দিয়ে ভুয়ো অভিযোগ থানায় জমা করিয়েছেন।’’