—প্রতীকী ছবি।
এ বারের লোকসভা ভোট অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। সেই তাগিদ সামনে রেখেই নির্বাচনের কৌশল সাজাচ্ছে সিপিএম। একমাত্র বাম-শাসিত রাজ্য কেরল থেকে দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে প্রার্থী করার পরিকল্পনা নিচ্ছে তারা। সূত্রের খবর, প্রাথমিক তালিকায় আছেন দলের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যেরাও।
কেরলে মোট লোকসভা আসন ২০টি। পাঁচ বছর আগে তার মধ্যে কেবল আলপ্পুঝা আসনে জয় পেয়েছিল সিপিএম। বাকি ১৯টিই গিয়েছিল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফের দখলে। সে বার ২০টির মধ্যে ১৬টি আসনে লড়েছিল সিপিএম। এ বার বামেদের ফ্রন্ট এলডিএফে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোট্টায়ম আসনটি সিপিএমের ভাগ থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে কেরল কংগ্রেস (মানি) দলের জন্য। সিপিএম লড়বে ১৫টিতে। আর বাকি চারটিতে গত বারের মতোই প্রার্থী দেবে সিপিআইয়ের মতো শরিক দল।
প্রার্থী তালিকা বাছাই করে ফেলার জন্য জেলা কমিটিগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সিপিএমের কেরল রাজ্য নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত আসনভিত্তিক যে প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়েছে, তাতে প্রার্থী হিসেবে নাম রয়েছে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য এ বিজয়রাঘবন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী টমাস আইজ়্যাক, কে কে শৈলজা, এ কে বালন, রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ এলামারাম করিম প্রমুখের। এ ছাড়াও তালিকায় আছেন দলের একাধিক বিধায়ক। চলতি সপ্তাহেই রাজ্য কমিটির বৈঠকে ওই তালিকা নিয়ে আলোচনা হবে, তার পরে পাঠানো হবে দলের পলিটব্যুরোর কাছে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই কেরলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলতে চাইছে সিপিএম।
বামেদের হাতে থাকা একমাত্র আসন আলপ্পুঝার বর্তমান সাংসদ এ এম আরিফকেই আবার প্রার্থী করার সুপারিশ করেছে জেলা সিপিএম। আরএসপি-র (কংগ্রেসের ফ্রন্ট ইউডিএফের শরিক) দখলে থাকা কোল্লম আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছে অভিনেতা ও বিধায়ক এম মুকেশের। পালাক্কাড কেন্দ্রে পলিটব্যুরোর সদস্য বিজয়রাঘবন, পাতানামতিট্টায় আইজ়্যাক, কোঢ়িকোড়ে করিম, ভাডাকারায় শৈলজা এবং কান্নুর আসনে দলের জেলা সম্পাদক এম ভি জয়রাজনের নাম প্রস্তাবিত তালিকায় রয়েছে। এখন দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজয়রাঘবন ভোটে দাঁড়াবেন কি না, সেই ব্যাপারে পলিটব্যুরোর সম্মতি নেওয়া হবে। তবে দুই প্রাক্তন মন্ত্রী শৈলজা ও আইজ়্যাককে প্রার্থী করার ক্ষেত্রে রাজ্য নেতৃত্বে বিশেষ সমস্যা নেই।
দক্ষিণী এই রাজ্যে দল যে ১৫টি আসনে লড়বে, তার মধ্যে অন্তত তিন থেকে চার জন মহিলা মুখ চাইছে সিপিএম। শৈলজা বাদে বাকি মহিলা মুখ কারা হতে পারেন, এখনও স্পষ্ট নয়। এর্নাকুলাম, চালাক্কুডি এবং মলপ্পুরম জেলার দু’টি আসনের প্রার্থী নিয়েও আলোচনা চলছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং এলডিএফের আহ্বায়ক ই পি জয়রাজনের বক্তব্য, ‘‘সংসদীয় রাজনীতিতে বামেদের শক্তি কমে যাওয়া দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পিছনে অন্যতম কারণ। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষার লড়াইয়ে বামেদের শক্তি বাড়ানো এই মুহূর্তে জরুরি। সেই লক্ষ্যেই লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে।’’