—প্রতীকী ছবি।
শনিবার লোকসভা ভোট হরিয়ানায়। কিন্তু স্বাধীনতার পর সম্ভবত এই প্রথম, ভোট চলার সময়েও খনৌরি-সহ চার পাঁচটি জায়গায় বিরাট এলাকা জুড়ে কৃষক আন্দোলন চলছে। প্রতিটি জায়গায় কয়েক কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে ট্র্যাক্টরের সংসার।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, কৃষকদের গনগনে ক্ষোভ এবং আরও অনেক বিষয়ের সমন্বয়ে ২০১৪ সালে হাতছাড়া হওয়া হরিয়ানার দুর্গ ফেরত পাওয়ার স্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস। গত বারে ১০টি আসনের মধ্যে ১০টিই পেয়েছিল বিজেপি। এ বার পাশা উল্টে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ১০টির মধ্যে ৯টি আসনে কংগ্রেস প্রার্থী, একটি ছাড়া হয়েছে আপ-কে।
উনিশে জাঠদের একচেটিয়া সমর্থন পেয়েছিলেন মোদী, সেটা এ বার নিম্নমুখী। হরিয়ানার ২৪% জাঠ সম্প্রদায়ের অধিকাংশই কৃষক। এখান থেকে অলিম্পিকে যোগ দেওয়া, জাতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে পদক জেতা খেলোয়াড়দেরও অধিকাংশই জাঠ। কৃষক আন্দোলনের পাশাপাশি মহিলা কুস্তিগিরদের হেনস্থা নিয়েও তাই ক্ষোভ রয়েছে জাঠদের মধ্যে। অগ্নিবীর নিয়েও রুষ্ট জাঠ মন, কারণ এই সম্প্রদায় থেকে সেনায় ভর্তি হওয়ার সংখ্যাটা বরাবর বেশি। জাঠ মুখ্যমন্ত্রী না করা নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জাঠরা এক ছাতার তলায় আসায় অন্য জাত-সম্প্রদায়ের মানুষও একজোট হয়েছেন। বিজেপি সেই সুযোগটা নিতে চাইছে। ব্রাহ্মণ, যাদব, বানিয়া এবং পঞ্জাবিদের সমর্থন নিয়ে তারা আত্মবিশ্বাসী। ওবিসি-র মধ্যেও ঢোকার চেষ্টা চলছে। সে দিকে খেয়াল রেখে কংগ্রেস ৯টির মধ্যে ৮টি আসনে প্রার্থী বদলেছে। গত বারে তিন জনের জায়গায় এ বার দু’জন জাঠ প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। গুজ্জর, ব্রাহ্মণ, তফসিলি প্রার্থীও দাঁড় করিয়েছে কংগ্রেস। বিজেপিও জেতা সাংসদদের ছ’জনকে সরিয়ে নতুন মুখ এনেছে। জাঠ, ব্রাহ্মণ এবং তফসিলি জাতি থেকে দু’জন করে এবং যাদব, গুজ্জর, বানিয়া ও পঞ্জাবি সম্প্রদায় থেকে একজন করে প্রার্থী রয়েছেন।
কংগ্রেস সূত্রের দাবি— রোহতক, সিরসা, ফরিদাবাদ এবং সোনেপতে জয় নিশ্চিত। আরও একটি বা দু’টি আসনে ভাল ফল হওয়ার সম্ভাবনা। তবে সব ভালর মধ্যে একটিই সমস্যা, তা হল অন্তর্দ্বন্দ্ব। ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার সঙ্গে কুমারী শৈলজার সম্পর্কে টানাপড়েন রয়েছে। বিষয়টিকে আয়ত্তে আনার চেষ্টা হচ্ছে। আজ একটি জনসভায় প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বলেছেন, “হরিয়ানায় কংগ্রেসের জবরদস্ত ঢেউ রয়েছে। গোটা দেশের মধ্যে এখানে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। রাজ্য সরকারের নড়বড়ে দশা। হরিয়ানার মানুষ পরিবর্তন চাইছেন।” দুষ্মন্ত চৌটালার জেজেপি বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে বেরিয়ে গিয়েছে। জেজেপি-র ধারণা, বিজেপির বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ রয়েছে, সঙ্গে থাকলে তার দায় ঘাড়ে নিতে হবে।