রাহুল গান্ধী। — ফাইল চিত্র।
বিজেপির ‘মোদীর গ্যারান্টি’ ও ‘বিকশিত ভারত’-এর মোকাবিলায় বেকারত্বের সমস্যা সমাধানের পাঁচ গ্যারান্টি।
ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা থেকে রাহুল গান্ধী আগেই বেকারত্বকে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে তুলে ধরেছিলেন। আজ সেই সমস্যার সমাধানে তাঁর প্রতিশ্রুতি, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ করবে। লোকসভা নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে মানুষের মন জয়ের চেষ্টায় এখনও পর্যন্ত এটাই সব থেকে বড় ঘোষণা কংগ্রেসের। রাহুলের ভাষায়, ‘তরুণদের জন্য ন্যায়’ সুনিশ্চিত করতে ‘পাঁচ ঐতিহাসিক গ্যারান্টি’, যা ‘তরুণদের ভাগ্য বদলে দেবে’।
এই পাঁচটি গ্যারান্টি হল— এক, নিয়োগের ভরসা। কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে দেশের ৩০ লক্ষ শূন্য পদে স্থায়ী পদে নিয়োগ। দুই, প্রথম চাকরির পাকা গ্যারান্টি। তার জন্য স্নাতক বা ডিপ্লোমা পাওয়ার পরেই এক বছরের জন্য সরকারি বা বেসরকারি ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশির আইনি অধিকার। এই এক বছরে ভাতা হিসেবে ১ লক্ষ টাকা মিলবে। তিন, নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে মুক্তির আইনি গ্যারান্টি। চার, উবের-ওলার চালক, জ্যোম্যাটো-সুইগির ডেলিভারি বয়দের মতো গিগ-কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষার জন্য আইনি গ্যারান্টি। পাঁচ, যুব রোশনি প্রকল্প চালু করে জেলা স্তরে স্টার্ট-আপ তৈরিতে উৎসাহ দিতে ৫০০০ কোটি টাকার জাতীয় তহবিল।
রাহুল আগেই অভিযোগ করেছিলেন, ভারতে এখন তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব পাকিস্তানের দ্বিগুণ। অথচ নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার আগে বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ নিয়ে এত দিন রাহুল যুব সম্প্রদায়ের ক্ষোভ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আজ কংগ্রেসের বিকল্প নীতি কী হবে, তার ঘোষণা করলেন। বৃহস্পতিবার রাজস্থানের জনসভা থেকে তিনি বলেন, ইউপিএ-র আমলে একশো দিনের কাজ বা মনরেগা প্রকল্পে রোজগারের গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছিল। একই ভাবে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে শিক্ষানবিশি বা অ্যাপ্রেন্টিসশিপের অধিকার মিলবে। ২৫ বছরের কম বয়সি যে কোনও স্নাতক, ডিপ্লোমাধারীরা এই অধিকার পাবেন।
প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে মোদী সরকার সম্প্রতি কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করে আইন এনেছে। রাহুল বলেছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে নয়া আইন আনবে।যেখানে নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুযায়ী সরকারি সংস্থাই চাকরির পরীক্ষা নেবে। বেসরকারি সংস্থাকে ভার দেওয়া হবে না। গিগ-কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষায় রাজস্থানের কংগ্রেস সরকার আইন এনেছিল। সেই আইন সারা দেশে কার্যকরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাহুল। বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া, মেক-ইন ইন্ডিয়া করেছিলেন। তার সব ফায়দা দু’তিন জন শিল্পপতি নিয়ে চলে গিয়েছেন। আমরা জেলা স্তরে ৪০ বছরের কম বয়সি স্টার্ট-আপ উদ্যোগপতিদের জন্য তহবিল গড়ব।’’
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, তরুণদের বেকারত্ব, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে এই পাঁচটি প্রতিশ্রুতিই তাদের ইস্তাহারের প্রধান স্তম্ভ হবে।