পশ্চিমবঙ্গের তিন লোকসভা আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করল কংগ্রেস। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের তিন লোকসভা আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করল কংগ্রেস। রবিবার এআইসিসির তরফে সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল প্রার্থীদের নাম জানিয়েছেন। উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ যুব কংগ্রেসের সভাপতি আজহার মল্লিক। বনগাঁ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে প্রদীপ বিশ্বাসকে। ঘাটালে প্রার্থী পাপিয়া চক্রবর্তী।
প্রার্থী হওয়ার পর যুব কংগ্রেসে সভাপতি আজহার বলেন, ‘‘আমি দলের কাছে কৃতজ্ঞ। যুব সংগঠনের সভাপতি হিসাবে আমাকে মনোনয়ন দিয়ে বাংলার মানুষের জন্য লড়াই করার সুযোগ দিয়েছে কংগ্রেস। আমি উলুবেড়িয়ার মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আনিস খানকে যে ভাবে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার বিচার হবেই। আমি তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করব।’’ এই তিন প্রার্থী মিলিয়ে মোট ১৩টি আসনে প্রার্থী দিল কংগ্রেস। বাম-কংগ্রেস জোটে কোচবিহারে কংগ্রেস ও ফরওয়ার্ড ব্লক একই সঙ্গে প্রার্থী দিয়েছে। তাতে জোটের দুধে একটু হলেও চোনা পড়েছে। কিন্তু শুক্রবার ও শনিবার পর পর দু’দিন ধরে বসিরহাট, ব্যারাকপুর ও মথুরাপুরে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে সিপিএম নেতৃত্ব। তাতেই ক্ষিপ্ত পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস। কারণ জোট আলোচনায় ব্যারাকপুর, বসিরহাট ও মথুরাপুর আসনে প্রার্থী দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল কংগ্রেস। এ ক্ষেত্রে জোট শরিকের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই প্রার্থী দেওয়ায় জোটে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। আগামী সোমবার লোকসভা ভোট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৈঠক করবেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মির। সেই বৈঠকে থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। ওই বৈঠকে সিপিএমের একতরফা ভাবে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টিও উত্থাপন করবেন রাজ্যের নেতারা। প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা, ১৬-১৮টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার পক্ষপাতী। তাই সিপিএমের এক তরফা প্রার্থী ঘোষণার পর বেশকিছু আসনে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হতেই পারে বলে মনে করছে বিধান ভবনের একাংশ।
প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের ক্ষোভের বিষয়টি টের পেয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তাই রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর চেষ্টা করছেন বলেই মুজফফর আহমেদ ভবন সূত্রে খবর। ওই সূত্রের দাবি, আইএসএফ জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর আরও অতিরিক্ত কিছু আসন লড়াইয়ের জন্য চেয়েছে কংগ্রেস। তাই আলোচনার মাধ্যমেই পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করার পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলেই মনে করছে সিপিএম।
অন্য দিকে, লোকসভা ভোটের সঙ্গেই রাজ্যের দু’টি বিধানসভা এলাকায় উপনির্বাচন হচ্ছে। ভগবানগোলা কেন্দ্রে ভোট হবে আগামী ৭ মে। বামফ্রন্ট সঙ্গে জোটে ভগবানগোলায় প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। ওই আসনে প্রার্থী হয়েছেন অঞ্জু বেগম। তাই ধরে নেওয়া হচ্ছে বরাহনগর বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী দেবে বামেরা। বামফ্রন্টগত ভাবে এই আসনটি আরএসপির দখলে। কিন্তু বামফ্রন্ট সূত্রে খবর, উপনির্বাচনে এই আসনে প্রার্থী দিতে চায় বড় শরিক সিপিএম। সম্প্রতি সিপিআইয়ের হাতে থাকা বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রটিও তাদের থেকে নিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে প্রার্থী করেছে সিপিএম।