Lok Sabha Election 2024

সুরেন্দ্রর ‘রিপোর্ট কার্ড’ পেশ, প্রশ্ন তুলল তৃণমূল

এ দিন সুরেন্দ্র দাবি করেন, গত ৫ বছরে তিনি নিজের তহবিল হিসাবে মোট প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি টাকা পেয়েছিলেন। হিসাব মতো, বছরে ৫ কোটি করে মোট ২৫ কোটি পাওয়ার কথা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:১৫
Share:

সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া ও দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

গত পাঁচ বছরে বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিদায়ী বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ আলুওয়ালিয়া এলাকার উন্নয়নে কোনও কাজ করেননি, বার বার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। তার জবাবে সোমবার দুর্গাপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে এলাকা উন্নয়নে কী কাজ করেছেন, তাঁর রিপোর্ট কার্ড পেশ করলেন এ বার আসানসোলের প্রার্থী সুরেন্দ্র। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, এলাকার মানুষের দাবি সম্পর্কে ধারণা না থাকায় নিজের ইচ্ছেমতো প্রকল্প নিয়েছেন সুরেন্দ্র।

Advertisement

এ দিন সুরেন্দ্র দাবি করেন, গত ৫ বছরে তিনি নিজের তহবিল হিসাবে মোট প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি টাকা পেয়েছিলেন। হিসাব মতো, বছরে ৫ কোটি করে মোট ২৫ কোটি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা-কালে সাংসদ তহবিল থেকে একাংশ ‘পিএম কেয়ার’ তহবিলে নিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া, আগের দুই লোকসভার প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ সাইদুল হক ও তৃণমূলের মমতাজা সঙ্ঘমিতার পড়ে থাকা প্রায় ৪ কোটি ২২ লক্ষ টাকার কাজও তিনি করেছেন। সুরেন্দ্র বলেন, ‘‘দুই প্রাক্তন সাংসদের পড়ে থাকা এই টাকা আমার অ্যাকাউন্টে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন ১৫ মার্চ পাঠায়। সে দিনই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরামণ্ডলের উন্নয়নে ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা এবং বাকি টাকা অন্য নানা কাজের জন্য বরাদ্দ করে পরিকল্পনা জমা দিয়ে দিই।’’

তিনি আরও দাবি করেন, তাঁর কেন্দ্রের মোট ১২০ জন দুঃস্থ মানুষের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে প্রায় ২ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ৫৭ জন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্তকে নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। দুর্গাপুরে ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ কেন্দ্র স্থাপন, ডিএসপির আধুনিকীকরণ, এএসপির বিলগ্নিকরণ আটকানো, ডিটিপিএসে নতুন ইউনিট, পানাগড় ও মায়াবাজারে রেল ওভারব্রিজ নির্মাণের অনুমোদনের কৃতিত্বও দাবি করেন তিনি। সুরেন্দ্র বলেন, ‘‘আমি কোনও কাজ করি না, আমাকে এলাকায় দেখা যায় না, আমাকে নিখোঁজ বলা— যাঁরা এ সব করেন, আমার এই কাজগুলিই তাঁদের মিথ্যা প্রমাণ করছে।’’

Advertisement

সুরেন্দ্র হিসাব দেন, তিনি মোট ৩১২টি প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দের পরিকল্পনা পেশ করেছেন। তার মধ্যে আপাতত মাত্র ৬১টি প্রকল্পের ছাড়পত্র দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কাজ হয়ে গেলে নিয়ম অনুযায়ী সাংসদের নাম লিখে ফলক লাগাতে হবে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে সাংসদকে দূরে রাখতে তৃণমূল আমাদের কাজের অনুমোদন দিতে নিষেধ করে জেলা প্রশাসনকে।’’ তবে তাঁর দাবি, তিনি সাংসদ হিসেবে যে প্রকল্প জমা দিয়েছেন, তা বাস্তবায়িত করতে বাধ্য প্রশাসন। তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তৃণমূল এ সব কাজ আটকে রেখেছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী সব কাজ শেষ করতে হবে। এই কেন্দ্রের মানুষ দেরিতে হলেও এ সব প্রকল্পের সুফল পাবেন।’’

তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় অবশ্য প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘প্রতিহিংসার রাজনীতি বিজেপি
করে। নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে দেশ জুড়ে বিরোধীদের যে ভাবে আটকে রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা থেকেই তা পরিষ্কার।’’ তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বিজেপি সাংসদ যদি এলাকায় থাকতেন, তাহলে তিনি এলাকাবাসীর চাহিদা অনুযায়ী প্রকল্প জমা দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি মানুষের সমস্যা না বুঝে
নিজের ইচ্ছেমতো প্রকল্প জমা দিয়েছেন। তাই অনুমোদন পেতে সমস্যা হয়েছে।

সুরেন্দ্র দাবি করেন, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অ্যাম্বুল্যান্স দিলে চালক নেই বলে প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। আধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী দিলে টেকনিসিয়ান নেই বলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘মানুষের কাজ করার সদিচ্ছা নেই, শুধু রাজনীতি। মানুষই এর যথার্থ জবাব দেবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement