কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা ও তিপ্রা মথা দলের প্রাক্তন প্রধান প্রদ্যোতকিশোর দেববর্মার উপস্থিতিতে দিল্লিতে স্বাক্ষরিত হল ত্রিপাক্ষিক চুক্তি। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
সামনেই লোকসভা ভোট। তার আগেই খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা ও তিপ্রা মথা দলের প্রাক্তন প্রধান প্রদ্যোতকিশোর দেববর্মার উপস্থিতিতে দিল্লিতে স্বাক্ষরিত হল ত্রিপাক্ষিক চুক্তি। কেন্দ্র, ত্রিপুরা ও তিপ্রা মথার মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিতে ত্রিপুরার জনজাতিদের সমস্যার সাংবিধানিক সমাধানের দাবিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে এই চুক্তি নিয়ে সরগরম ত্রিপুরার রাজনীতি।
রাজনীতিকদের একাংশের মতে, এর ফলে বিজেপির সঙ্গে তিপ্রা মথার সমঝোতার রাস্তা খুলেছে। এ দিন স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তিপ্রা মথা-সহ বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেছে। এই বৈঠকগুলির উপরে ভিত্তি করে ত্রিপুরার জনজাতিদের ইতিহাস, ভূমির অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বতন্ত্র পরিচয়, সংস্কৃতি, ভাষার মতো বিষয়গুলি নিয়ে সমস্যার পূর্ণ সমাধান করা হবে। সম্মানজনক সমাধানের পথ খুঁজতে একটি যৌথ কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ চুক্তি স্বাক্ষরের দিন থেকে চুক্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত যে কোনও ধরনের আন্দোলন থেকে বিরত থাকবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্য, ‘‘ত্রিপুরার জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা ইতিহাসকে সম্মান জানালাম, ভুল সংশোধন করলাম। বর্তমানের বাস্তবতাকে মেনে ভবিষ্যতের জন্য একটি পদক্ষেপ করা হল।’’ তাঁর মতে, ‘‘ইতিহাস কেউ বদলাতে পারে না। কিন্তু আমরা অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি। চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে তিপ্রা মথা-সহ সব জনজাতি দল গঠনমূলক ভূমিকা পালন করেছে। ত্রিপুরার বিজেপি সরকারও আন্তরিক ভাবে কাজ করেছে।’’
তিপ্রা মথার প্রাক্তন প্রধান প্রদ্যোৎকিশোর দেববর্মার বক্তব্য, ‘‘জমির অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ভাষার সমস্যা, রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের জন্য আজ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার বক্তব্য, ‘‘ভারত সরকার, ত্রিপুরা সরকার এবং জনজাতি গোষ্ঠীর নেতৃত্বের মধ্যে আজ ঐতিহাসিক এক ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।’’
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সাংসদ বিপ্লবকুমার দেব এই ‘ঐতিহাসিক চুক্তি’র জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। কিন্তু বিরোধীদের মতে, এই চুক্তিতে কোনও সমস্যার সমাধান হয়নি। ধোঁয়াশা বজায় রয়েছে।