তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে), বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায় (মাঝে), বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
কৃষ্ণনগরে তৃণমূল প্রার্থী তথা বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে রাজপরিবারের সদস্যা অমৃতা রায়ের প্রার্থিপদ চূড়ান্ত করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নদিয়ার চাপড়ায় জনসভা থেকে এমনটাই দাবি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। তাঁর দাবি, প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা আরও অনেকের মধ্যে ছিল, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদীর ইচ্ছেতেই কৃষ্ণনগরে প্রার্থী হয়েছেন অমৃতা। পাল্টা, ‘মোদীর প্রার্থী’ অমৃতাকে চুড়ান্ত ভাবে পরাস্ত করার ডাক রাজ্যের মন্ত্রী তথা নদিয়ার তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল বিশ্বাসের।
শুক্রবার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চাপড়া বিধানসভায় সভা করেন শুভেন্দু। বক্তৃতায় নন্দীগ্রামের বিধায়ক দাবি করেন, মোদির ইচ্ছায় বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন কৃষ্ণনগরের রাজ পরিবারের সদস্যা অমৃতা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের অনেকে দাবিদার ছিলেন। অনেকের যোগ্যতাও ছিল। এমন কি মঞ্চে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন, সাত জন, আট জনের লোকসভা ভোটে লড়ার তাগদ ছিল, যোগ্যতাও ছিল। আদর্শের সঙ্গে তাঁরা দশকের পর দশক যুক্ত থেকেছেন। আপনারা যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফোন করার পরে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছেন যে, রাজমাতাকে প্রার্থী করার পিছনে, বসিরহাটের ওই প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্রকে প্রার্থী করার পিছনে, চাকরি চুরি ধরার যিনি নায়ক, সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রার্থী করার পিছনে দেশের যশস্বী প্রধানমন্ত্রী, আমাদের নেতা নরেন্দ্র মোদীর ইচ্ছাই কাজ করেছে।’’
প্রসঙ্গত, লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সময়ই মহুয়াকে আবার কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১০ মার্চ ব্রিগেডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন সভা’ থেকে সেই ইঙ্গিতে সিলমোহর দিয়ে কৃষ্ণনগর থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হন মহুয়া। মহুয়ার নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষিত হলেও তাঁর বিরুদ্ধে পদ্ম শিবির প্রার্থীর নাম জানাতে পারছিল না। বিজেপির অভ্যন্তরীণ হিসাবনিকাশে উঠে এসেছিল একাধিক নাম। জল্পনায় ছিলেন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রাক্তন সাংসদের পুত্রও। শেষ পর্যন্ত সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপির প্রার্থী হন কৃষ্ণনগর রাজ পরিবারের বধূ অমৃতা। রাজনীতির আঙিনায় নবাগতা অমৃতাকে মহুয়ার মত হেভিওয়েটের বিরুদ্ধে প্রার্থী করা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল বিজেপির অন্দরেই। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের বিজেপির কর্মীদের একাংশের দাবি, অমৃতাকে এখানে প্রার্থী করা হয়েছে মোদীর ইচ্ছানুসারেই, জনসভা থেকে এ কথা বলে সম্ভবত শুভেন্দু এই প্রশ্নে পাকাপাকি ভাবে তালা মারতে চাইলেন।
যদিও শুভেন্দুর মন্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে হিমশিম খেয়ে গিয়েছে বিজেপি। প্রার্থী যেই হোন, তাঁরই হার নিশ্চিত। এখন যিনি প্রার্থী হয়েছেন, তাঁকে গো-হারা হারাব।’’