Complain Against Mamata Banerjee

অপশব্দ বলে ফেলেই ‘প্রত্যাহার’, তবে মমতার বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ ঠুকতে ছাড়ল না বিজেপি

বৃহস্পতিবার কোচবিহারের মাথাভাঙায় লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানে কেন্দ্রীয় প্রকল্প প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মমতা একটি ‘আপত্তিকর শব্দ’ বলেছিলেন। এমনটাই অভিযোগ করেছে বিজেপি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৩৫
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

কোচবিহারের প্রচারসভায় কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে মুখ ফসকে একটি অপশব্দ বলে ফেলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলার পরেই অবশ্য দুঃখপ্রকাশ করে শব্দটি প্রত্যাহার করে নেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, কথাটা রাগের বশে বলে ফেলেছেন। তবে বিজেপি মমতার সেই ব্যাখ্যায় কান দিল না। মমতার সভার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকল তারা।

Advertisement

বিজেপির অভিযোগ, বৃহস্পতিবার কোচবিহারের মাথাভাঙায় লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানেই কেন্দ্রীয় প্রকল্প প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মমতা ‘আপত্তিকর শব্দ’ বলেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ওই ‘আপত্তিকর শব্দ’ প্রয়োগ করে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করেছেন এবং একই সঙ্গে নির্বাচনী বিধিও ভেঙেছেন। এমনটাই অভিযোগ করেছে বিজেপি।

কোচবিহারের ওই প্রচার সভায় কেন্দ্রের মোদী সরকারকে আক্রমণ করে মমতা বলছিলেন, কেন্দ্রের প্রকল্পগুলির অর্ধেক টাকা দেয় কেন্দ্র। আর বাকি অর্ধেকের খরচ বহন করতে হয় রাজ্য সরকারকে। অথচ তার পরেও সেই প্রকল্পের কাগজে শুধু প্রধানমন্ত্রীরই ছবি থাকে। মমতার প্রশ্ন, তা থাকবে কেন? ব্যায় যখন কেন্দ্র-রাজ্য অর্ধেক অর্ধেক বহন করছে, তখন প্রকল্পের দাবিদার একা কেন্দ্র হয় কী করে! এ ব্যাপারেই উদাহরণ দিতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘রেশন দোকানের কার্ডেও প্রধানমন্ত্রীর ছবি আর বিজেপির লোগো থাকবে। (অপশব্দ) আমি না খেতে পেয়ে মরে যাব, তবুও আমি বলে দিচ্ছি, যে আমি ওর মধ্যে যাবে না।’’

Advertisement

মমতার ব্যবহৃত ওই শব্দটি নিয়েই আপত্তি তুলেছে বিজেপি। যদিও বৃহস্পতিবার ওই শব্দটি প্রয়োগ করার পরই দুঃখ প্রকাশ করে শব্দটি প্রত্যাহার করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সরি আই উইথড্র মাই ওয়ার্ড (আমি শব্দটি প্রত্যাহার করছি) আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে।’’

এর পরে নিজের ওই শব্দ চয়নের ব্যাখ্যাও দেন। মমতা কিছুটা স্বগতোক্তির মতোই বলেন, কথাটা তিনি বলে ফেলেছেন, ‘‘রাগের চোটে। রাগ শান্ত করা উচিত।’’ সেই সঙ্গে এ-ও বলেন যে, ‘‘আমি ভদ্র ভাষায় কথা বলতে পছন্দ করি। এটা আমাদের খুবই চালু কথা। তবু আমি এটা প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’’ তবে বঙ্গ বিজেপি মমতার দুঃখপ্রকাশকে গুরুত্ব না দিয়ে কমিশনে অভিযোগ করে।

শুক্রবার কমিশনকে একটি চিঠি পাঠিয়ে বঙ্গ বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের বিধি বলছে, অন্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপশব্দ প্রয়োগ করা যাবে না। অথচ দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে বলতে গিয়ে মমতা তা-ই করেছেন। বিজেপির অভিযোগ এই একই সংস্কৃতি দেখা গিয়েছে তৃণমূলের অন্য এক বিধায়কের মধ্যেও। সম্প্রতি হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে বলতে গিয়ে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার সর্বসমক্ষে বলেছেন, ‘দু’নম্বর মাল’। এ ব্যাপারে কমিশনকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতেও অনুরোধ করেছে বিজেপি।

মমতার বিরুদ্ধে শুক্রবার এ ছাড়াও একটি অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনের কাছে। দ্বিতীয় অভিযোগটি করা হয়েছে মালবাজারে মমতার সভা নিয়ে। বিজেপি চিঠিতে কমিশনকে জানিয়েছে, রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্য আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক প্রচারে স্কুল শিশুদের ব্যবহার করেছেন মমতা। যদিও তৃণমূলের দাবি, এ সবই বিজেপি করছে তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাবের জন্য। তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি, প্রধানমন্ত্রী মোদী নির্বাচনী প্রচারে শিশুদের ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এখানে কোনও শিশুকে ব্যবহার করা হয়নি। নির্বাচনের জন্য যদি কোনও শিশুকে ব্যবহার করা হয়, তাতে সেটি বিধিভঙ্গ হতে পারে। কিন্তু কোনও বক্তৃতা বা পথসভায় যদি শিশুরা এসে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যোগ দেয় তবে তাকে বিধিভঙ্গ বলা যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement