অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
লোকসভা ভোট চলছে। শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। তার আগে বিজেপিকে ভেঙে তছনছ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা অভিষেকের উদ্দেশে ‘ফাঁকা আওয়াজ’ বলে কটাক্ষ ছুড়ে দিল বিজেপি।
মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে বুধবার রোড-শো ছিল অভিষেকের। সেই রোড-শো শেষে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘তাপস রায়কে ইডি-র ভয় দেখিয়ে বিজেপিতে নিয়ে গিয়েছে। ওদের লোক নেই, তাই তৃণমূল থেকে লোক নিয়ে গিয়ে প্রার্থী করতে হয়। আমিও তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওদের এক বিধায়ককে ভাঙিয়ে এনেছিলাম।’’ ঘটনাচক্রে, তাপস রায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গত ৭ মার্চ বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী যোগ দেন তৃণমূলে। তাঁকে রানাঘাট লোকসভায় প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফাও দিয়েছেন। খাতায়কলমে ২০২১ সালের বিধানসভায় বিজেপির টিকিটে জেতা আরও দুই বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী এবং বিশ্বজিৎ দাসকে যথাক্রমে রায়গঞ্জ ও বনগাঁ আসনে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তাঁরাও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
বুধবার অভিষেক বলেন, ‘‘আরও ১০ জন লাইনে রয়েছেন। ঠিক সময়ে দরজা খুলব। এই দলটাকে বাংলা থেকে উঠিয়ে দেব।’’ এর আগে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পরে অভিষেক একাধিক বার বলেছিলেন, ‘‘দরজাটা খুলছি না। খুললে বিজেপি উঠে যাবে।’’ এ বার সরাসরি বিজেপিকে উঠিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল প্রার্থী।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর থেকেই দরজা খোলা শুরু করেছিল তৃণমূল। যে শুরুটা হয়েছিল দলের একদা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা কৃষ্ণনগর উত্তরে বিজেপির টিকিটে জেতা মুকুল রায়কে দিয়ে। তার পর একে একে অনেক বিধায়কই পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলের ঝান্ডা নেন। বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৭ থেকে নেমে ৬৯ হয়ে যায়। বিজেপির দুই সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এবং অর্জুন সিংহও তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। বাবুল এখন রাজ্যের মন্ত্রী। যদিও অর্জুন ফের বিজেপিতে ফিরে গিয়ে এ বারও ব্যারাকপুরে প্রার্থী হয়েছেন। এরই সঙ্গে বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সব্যসাচী দত্ত। অভিষেক আরও ১০ জন বিধায়কের কথা বললেন বুধবার।
অভিষেকের এ হেন বক্তব্যকে ‘ফাঁকা আওয়াজ’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘দরজা তো ভোটের সময়েই খুলতে হয়। কবে আর খুলবে? আসলে তৃণমূল থেকে অনেকে বিজেপিতে আসার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। তাই তিনি এ সব বলছেন। আসলে দরজার পিছনে তৃণমূলের দিকে মমতা এবং অভিষেক ছাড়া আর কেউ থাকবে না। তাই তিনি এ সব বলছেন।’’