বর্ধমানে বিজেপিতে ভাঙন। — নিজস্ব চিত্র।
ভোটের মুখে দলবদল বাংলার রাজনীতির নবতম ‘ট্রেন্ড’। গত বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই ‘দলে থেকে কাজ করতে পারছি না’ বা ‘দমবন্ধ লাগছে’ ইত্যাদি বাক্য প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। লোকসভা ভোটের আগেও বহাল তবিয়তেই চলছে সেই ট্রেন্ড। এ বার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গেলেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সন্তোষ রায়। ২০১৪ সালে তিনি বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে লড়াই করেছিলেন। এ বার টিকিট পাননি। তাই কি গোসা করে দলবদল? প্রশ্ন উঠছে।
২০১৪ সালে বর্ধমান পূর্ব আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন সন্তোষ। জয় না পেলেও রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক কাজে গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল বহু গুণ। রাজ্য কমিটির সদস্য হিসাবে বর্তমানে কাজ করছিলেন তিনি। সেই সন্তোষই শনিবার যোগ দিলেন তৃণমূলে। বর্ধমানে জেলা তৃণমূলের কার্যালয়ে হয় দলবদলের কর্মসূচি। সেখানে রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের হাত থেকে ঘাসফুল পতাকা তুলে নেন সন্তোষ। তৃণমূলের দলীয় পতাকা হাতে নিয়েই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সন্তোষ বলে ওঠেন, ‘‘ভারত মাতা কি জয়’’। তার পর অবশ্য ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও দিতে শোনা যায় তাঁকে। উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
বিজেপি সূত্রের খবর, এ বার বর্ধমান পূর্ব আসনে তাঁকেই প্রার্থী করা হবে বলে ভেবেছিলেন সন্তোষ। কিন্তু অসীম সরকারের নাম ঘোষণা হতেই আশাভঙ্গ হয় তাঁর। সমাজমাধ্যমে নিজের ক্ষোভও উগরে দেন তিনি। শনিবার সেই সন্তোষই তৃণমূলে যোগ দিয়ে বললেন, ‘‘বর্তমান বিজেপিতে শুধু আমি কেন, আমার মতো কোনও নেতারই জায়গা নেই। মমতাদির আদর্শ, মমতাদির সুদক্ষ নেতৃত্ব পশ্চিমবঙ্গের জন্য ঠিক। পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থে আমি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছি।’’ আর তৃণমূল যোগ দিয়েই সন্তোষের প্রতিক্রিয়া, বর্ধমান পূর্বে অসীম তো হারবেনই, বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনেও গো-হারা হারতে চলেছেন দিলীপ ঘোষ।
এই দলবদলকে কটাক্ষে বিঁধেছেন বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা পদলোভী, টিকিটলোভী, তাঁদের নেশা হেরোইনের থেকেও মারাত্মক। তাই হয়েছে সন্তোষ রায়ের। তিনি হয়তো এখন বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকেও মা বলে ডাকবেন!’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সন্তোষ রায় বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে আমাদের দলে যোগ দান করলেন।’’