প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
হিন্দু ভাবাবেগ তো রয়েছে, কিন্তু ৪০০ আসনে জিতে আসার রেকর্ড ছুঁতে হলে প্রয়োজন নারী, যুবক, কৃষক ও গরিব জনতার ভোট। তাই আজ রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের বিতর্কেও চার শ্রেণির তোয়াজে মেতে উঠলেন বিজেপি সাংসদেরা। একই সঙ্গে পারস্পরিক মতবিরোধের বিষয় তুলে বিরোধী ইন্ডিয়া মঞ্চকে আক্রমণ করে শাসক দল। পাল্টা আক্রমণে আজ প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন কংগ্রেসের গৌরব গগৈ।
ইন্ডিয়া-য় গোড়া থেকেই আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে সংঘাত বেঁধেছে আঞ্চলিক দলগুলির। আজ তাই রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন বিতর্কে শাসক শিবিরের প্রথম বক্তা হিনা গাভিত বলেন, “ইন্ডিয়া এমন একটি টিম, যাদের ১১ জনই অধিনায়ক। আর ১১ জনেরই লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী হওয়া।” গাভিত বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের অধিনায়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রাজ্যে কংগ্রেসকে জায়গা দিতে নারাজ। আবার পঞ্জাবের অধিনায়ক কেজরীওয়াল কংগ্রেসকে দ্বাদশ খেলোয়াড় মনে করেন।”
গাভিত বলেন, “মহিলা রাষ্ট্রপতি বক্তব্য রাখার পরের দিনেই মহিলা অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করেন। আর সেই রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনে প্রথম আলোচনা শুরু করেছি আমি। এটাই প্রমাণ করে এই সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়নে কতটা বদ্ধপরিকর।” দ্বিতীয় বক্তা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয় এক দিকে রাম মন্দিরের সাফল্য যেমন তুলে ধরেন, তেমনই বলেন, “অতীতেও ভারত বিশ্বগুরু ছিল। তার প্রমাণ কর্ণের বুলটেপ্রুফ জ্যাকেট, প্রহ্লাদের কাছে আগুন নিরোধক জ্যাকেট ছিল। টেলিভিশন আবিষ্কারের অনেক আগেই মহাভারতের যুগে সঞ্জয় হস্তিনাপুরে বসে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের কাহিনী ধৃতরাষ্ট্রকে শোনান।” আগরার ওই সাংসদের আরও দাবি, “মার্কনির রেডিও আবিষ্কারের আগেই তা ভারতে হয়েছিল। মথুরার রাজা কংস যখন তাঁর বোনকে আমার সংসদীয় ক্ষেত্রের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিলেন, তখন আকাশবাণী হয় তাঁর বোনের ছেলেই মৃত্যুর কারণ হবে।”
পাল্টা বক্তব্যে আজ গোড়া থেকেই প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর আচরণকে নিশানা বানানোর কৌশল নিয়ে এগিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব। কংগ্রেস মনে করে মোদী নিজেকে দল ও সরকারের ঊর্ধ্বে এমন একটি ভাবমূর্তি গড়ে তোলার কৌশল নিয়েছেন। সেই ভাবমূর্তিকেইনিশানা করেন গৌরব। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ফের রাজতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। মোদীর সেই রাজতন্ত্রকেধূলিসাৎ করার লক্ষ্যে কংগ্রেস জনতার সঙ্গে রয়েছে। গৌরব বলেন, গরিব পরিবার থেকে আসা প্রধানমন্ত্রী, সময়ের সঙ্গে নিজেকে মহারাজা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি মাঝে মধ্যে সংসদে আসেন। পারিষদেরা তখন হইহই করে ওঠেন। গৌরবের অভিযোগ, গত ১০ বছরে বিপক্ষের সাংসদেরা কী বলছেন, তা যেমন শোনার প্রয়োজন মনে করেন না তেমনই তাঁদের প্রশ্নের উত্তরওদেন না তিনি।