নন্দীগ্রামে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে দেওয়াল লিখছে বিজেপি। —নিজস্ব চিত্র।
সব কিছু ঠিক থাকলে আসন্ন লোকসভা ভোটে কলকাতা হাই কোর্টের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কেই পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক কেন্দ্রে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। এ নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে জোর জল্পনার মধ্যে তমলুক কেন্দ্রের অন্তর্গত নন্দীগ্রামে অভিজিতের নামে প্রচার শুরু করে দিল পদ্মশিবির। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামের একাধিক জায়গায় অভিজিৎকে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে উল্লেখ করে দেওয়াল লিখলেন বিজেপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, অভিজিৎই যে তমলুক থেকে দলের প্রার্থী হতে চলেছেন, তা একপ্রকার নিশ্চিত। দলের উপরতলার বার্তা পেয়েই দেওয়াল লিখন শুরু করেছেন তাঁরা। এ নিয়ে বিজেপি ও অভিজিৎকে পাল্টা কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘যেখান থেকে দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে, সেখানকার মানুষই ওঁকে (অভিজিৎকে) প্রত্যাখ্যান করবেন।’’
নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের হরিপুর অঞ্চলের ঝড়েশ্বরপুর এলাকায় একাধিক জায়গায় অভিজিতের নামে দেওয়াল লিখন করা হয়েছে। বিজেপি নেতা-কর্মীদের দাবি, সমাজমাধ্যম থেকে তাঁরা দেখেছেন যে অভিজিৎ তমলুকের প্রার্থী হতে চলেছেন। তাই এই উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় বিজেপি কর্মী স্বপনকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হওয়া অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে দাঁড়াবেন বলে আমরা একপ্রকার নিশ্চিত। আগামী দু’চার দিনের মধ্যেই হয়তো সেই ঘোষণা হয়ে যাবে। তাই আমরা সময় নষ্ট না করে দ্রুত দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছি।’’
বিজেপি সূত্রে খবর, অভিজিৎকে যদি সত্যিই তমলুক থেকে প্রার্থী করার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা হয়ে থাকে, তা হলে এর নেপথ্যে রয়েছে অভিজিতের আগের পেশা। তিনি নিয়োগ দুর্নীতি মামলা শুনেছেন, ‘সাড়া জাগানো’ নির্দেশ দিয়েছেন। ‘বঞ্চিত’ চাকরিপ্রার্থীদের মনে আশা-ভরসা জুগিয়েছেন যে, তাঁরাও বিচার পাবেন। ঘটনাচক্রে, ‘বঞ্চিত’ চাকরিপ্রার্থীদের একটি বিরাট অংশই পূর্ব মেদিনীপুরের। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই আবার তমলুকের। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের উপর যাঁদের ‘অগাধ আস্থা’। এই দিকটি নজরে রেখেই হয়তো বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে তমলুক থেকে দাঁড় করানোর কথা ভেবে থাকতে পারে দল। নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা মেঘনাদ পালের দাবি, অভিজিৎকেই প্রার্থী হিসাবে চাইছেন এলাকার মানুষ। তাই আগাম দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘দল এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেননি। স্থানীয় কর্মীরাই আবেগপ্রবণ হয়ে তাঁর নাম দেওয়াল লিখেছেন।’’
পাল্টা কুণাল বলেন, ‘‘উনি (অভিজিৎ) এত দিন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এখন সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা লোকজনের সঙ্গেই ওঁকে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। ওঁর কাছে বিচারপতির চেয়ারটা ছিল নাটকের রঙ্গমঞ্চ।’’