শতাব্দী রায়কে সমস্যার কথা জানাচ্ছেন গ্রামের মহিলারা। সাঁইথিয়ার বাতাসপুরে সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।
দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শতাব্দী রায়। ভোটের সময় একযোগে কাজ করার বার্তা দিচ্ছেন বিভিন্ন কর্মিসভা ও সাংগঠনিক বৈঠকে। তার পরেও সোমবার সাঁইথিয়া ব্লকে শতাব্দীর প্রচারেই ফের সামনে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
এ দিন সাঁইথিয়ার ফুলুর, হাতোড়া, দেরিয়াপুর-সহ বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচার ছিল শতাব্দীর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি সাবের আলি খান, বিধায়ক নীলাবতি সাহা-সহ বিভিন্ন নেতৃত্ব। কিন্তু, সাবের আলির বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত দলের জেলা কমিটির সদস্য সাধন মুখোপাধ্যায়, সাঁইথিয়া ব্লক সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মহম্মদ ইউনুস, ব্লক কার্যকরী সভাপতি তুষারকান্তি মণ্ডলদের এ দিন দলীয় প্রার্থীর প্রচারে দেখা যায়নি।
সাধন, ইউনুস ও তুষারকান্তিদের বক্তব্যেও ব্লকের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর উপর ক্ষোভ স্পষ্ট। তিন জনেই এ দিন বলেন, ‘‘প্রচারের ব্যাপারে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। হয়তো আমাদের প্রয়োজন নেই বলেই বলা হয়নি। কর্মী হিসাবে আমরা দলকেই ভোট দেব। তবে, ভোট করার দায়িত্ব আমাদের নেই।’’ অন্য দিকে, ব্লক সভাপতি সাবের আলি খানের দাবি, ‘‘এর আগে বহুবার দলীয় কর্মসূচিতে ওঁদের জানিয়েও কোনও সাড়া মেলেনি। আসলে ওঁরা দলের সঙ্গে কোনও সংযোগ রাখেন না। তাই প্রচারে আসার জন্য ওঁদের বলা হয়নি।’’
প্রসঙ্গত, সাঁইথিয়া ব্লকে সাবের আলির সঙ্গে সাধন রায়ের ‘বিবাদ’ দীর্ঘদিনের। পরিস্থিতির সামাল দিতে এক সময় অনুব্রত মণ্ডল দু’জনকে ৩টি করে পঞ্চায়েত দেখভালের দায়িত্ব দেন। তাতেও সমস্যা মেটেনি। অনুব্রত জেলে যাওয়ার পরে দু'পক্ষের দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়ে পড়ে বলে তৃণমূল সূত্রেই জানা যাচ্ছে। ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের দখলে থাকা দেরিয়াপুর পঞ্চায়েতটি গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই ঘটনা ঘটেছে বলে দলের জেলা নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ। এ বার খোদ দলের প্রার্থীর প্রচারেও দলের একাংশের অনুপস্থিতি অস্বস্তিতে ফেলেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে।