সিপিএমের এআই সঞ্চালিকা। ছবি: ফেসবুক।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সঞ্চালিকা খবর পড়বে সিপিএমের। রাজ্য সিপিএম সেই সঞ্চালিকার নাম রেখেছে ‘সমতা’। তবে সিপিএম সূত্রে খবর, মূলত ইংরেজিতেই সংবাদ পাঠ করবে এআই সঞ্চালিকা। দু-এক দিনের মধ্যেই সমতার উপস্থাপনা করা প্রথম পর্ব আপলোড করা হবে রাজ্য সিপিএমের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে।
ইংরেজিতে খবর পাঠের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সিপিএমের আইটি সেলের তরফে বলা হয়েছে, বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং তা নিয়ে দলের বক্তব্যকে সর্বভারতীয় স্তরে পৌঁছে দিতেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানের পোশাকি নাম ‘ফোকাস অন বেঙ্গল’। সিপিএম সূত্রে খবর, মহিলা সঞ্চালিকার পর পুরুষ সঞ্চালককেও অচিরেই হাজির করাবে তারা। তবে তার নাম এখনও রাখা হয়নি।
খবর সঞ্চালনায় এআই প্রযুক্তির ব্যবহার কেন, তা নিয়ে সিপিএমের মধ্যেও বিবিধ মত রয়েছে। কেউ কেউ নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারকে সাদরে গ্রহণ করছেন। আবার কেউ বিরোধিতায় সরব। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাস বলেন, ‘‘যুগে যুগে প্রচারের ধরনে বিবর্তন হয়েছে। তা সে কোনও পণ্যেরই প্রচার হোক বা রাজনীতির। আমরা চিরকাল নতুনকে গ্রহণ করেছি এবং সামর্থ্য অনুযায়ী তার ব্যবহার করেছি। আমাদের কাছে অন্যদের মতো ইলেক্টোরাল বন্ডের টাকা নেই। কিন্তু মেধা আছে। আর তা পয়সা দিয়ে ভাড়া করা নয়।’’
সিপিএমের এক রাজ্য কমিটির সদস্য সোমবার রাতে একটি হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে এ নিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘এই উদ্ভট জিনিস কার মাথা থেকে এল?’’ পরে আবার সেই টেক্সট মুছেও দিয়েছেন তিনি। তবে দলের বাইরের লোকও রয়েছেন, এমন একটি গ্রুপে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে ফেলেছিলেন। ফলে তা আর দলের ভিতরে চাপা থাকেনি।
রাজ্য সিপিএম গোটাটাকে প্রযুক্তি ব্যবহারের নিরিখেই দেখতে চাইছে। এআই কর্মসংস্থান গিলে খাবে কি না, সেই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠেছে। সেই আঙ্গিকে সিপিএমের পেজে এআই ব্যবহার নিয়ে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। সিপিএম নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় স্পষ্টই বলছেন, এখনও তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এআই-এর ব্যবহার যা হচ্ছে, তা মূলত মনোরঞ্জনের জগতেই। এ ক্ষেত্রেও তাই প্রযুক্তি ব্যবহারের নিরিখেই গোটাটাকে দেখা হচ্ছে।
গত কয়েক বছর ধরে রাজ্য সিপিএম সমাজমাধ্যমের জন্য একটি টিম তৈরি করেছে। তা কলেবরেও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের বিবিধ কাজ নিয়ে রাজ্য সিপিএম তাদের দলিলে প্রশংসাও করেছে। তবে এ-ও ঠিক, কিছু কিছু কাজ নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে দলের মধ্যে। এ ব্যাপারে রাজ্য সিপিএমের এক প্রথম সারির নেতা ঘরোয়া আলোচনায় বলেন, ‘‘কাজ করলে তবেই তো ভাল-মন্দ নিয়ে আলোচনা হয়। আগে এই দিকটা স্থবির ছিল। এখন একটা সজীবতা তৈরি হয়েছে। এক ঝাঁক ছেলেমেয়ে বিনা পারিশ্রমিকে কাজটা করে চলেছেন।’’