গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তৃতীয় দফার ভোটের আগে আবার বিজেপি প্রার্থীদের চিঠি লিখে ‘বার্তা’ পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজেদের কেন্দ্রের ভোটারদের কাছে কংগ্রেস বিরোধিতার সুর চড়ানোর ‘পরামর্শ’ দিলেন সেই চিঠিতে। সেই সঙ্গে দিলেন আরও একগুচ্ছ নির্দেশ।
প্রথম দফার ভোট শুরুর আগের দিন, গত ১৮ এপ্রিল বিজেপি এবং সহযোগী দলগুলির প্রার্থীদের চিঠি লিখে তাঁর বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্যও ব্যক্তিগত ভাবে ‘অনুরোধ’ জানিয়েছিলেন মোদী। সেখানে গত এক দশকে তাঁর সরকারের ‘উন্নয়নের খতিয়ান’ তুলে ধরা হয়েছিল। এ বার তাঁর বার্তা সরাসরি মেরুকরণের ইঙ্গিতবাহী।
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘প্রতিক্রিয়াশীলদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। তফসিলি জাতি-জনজাতি এবং ওবিসিদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মুসলিমদের সংরক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনাই কংগ্রেস এবং ‘ইন্ডি’ (ইন্ডিয়া) জোটের রাজনীতি।’’
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা গুজরাতের পোরবন্দর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মনসুখ মান্ডবীয় মঙ্গলবার হিন্দিতে লেখা মোদীর সেই চিঠিটি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন। সেখানে স্পষ্ট ভাষায় বিজেপির প্রার্থীদের ‘আমার সাথী কার্যকর্তা’ সম্বোধন করে মোদী লিখেছেন, ‘‘এটি সাধারণ কোনও নির্বাচন নয়।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশে মতে, আগামী ৭ মে তৃতীয় দফার নির্বাচনে যে ৯৪টি লোকসভা আসনের ভাগ্য নির্ধারিত হবে সেখানে তফসিলি জাতি-জনজাতি এবং ওবিসি ভোটের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এমন সময়ে পিছিয়ে থাকা শ্রেণির প্রতি বার্তা দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মোদীর কাছে। কারণ, কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে মোদী যে ‘৪০০ পারের’ ডাক দিয়েছেন তা সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে। সংবিধান সংশোধন করে তিনি তফসিলি জাতি, জনজাতি, ওবিসির জন্য সংরক্ষণই তুলে দিতে চান। তারই জবাবে ‘মুসলিম সংরক্ষণের সম্ভাবনা’র কথা বলে বার বার কংগ্রেসকে নিশানা করছেন তিনি।
প্রথম দফার ভোটের আগে ‘উন্নয়ন’ এবং ‘৪০০ পার’ স্লোগান সামনে রেখে প্রচার চালিয়েছেন মোদী-সহ শীর্ষস্তরের বিজেপি নেতারা। কিন্তু দ্বিতীয় দফা থেকেই তাঁদের প্রচারের সুর বদলে গিয়েছে। কংগ্রেসকে নিশানা করে কখনও মুসলিম সংরক্ষণ, কখনও হিন্দু মহিলাদের মঙ্গলসূত্র ছিনিয়ে নেওয়া, কখনও বা সংখ্যালঘুদের গোমাংস খাওয়ার অধিকার দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন তাঁরা। বিরোধীদের অভিযোগ, কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়া, বেকারত্বের সমস্যা, অর্থনীতির বেহাল দশা, সরকারি চাকরির অপ্রতুলতার মতো সমস্যাগুলি থেকে নজর ঘোরাতেই এই মেরুকরণের চেষ্টা শুরু করেছেন মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডা, যোগী আদিত্যনাথেরা।