অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
বিজয়ের প্রস্তুতি? বহরমপুরে কংগ্রেস অফিসের নীচে সোমবার থেকে মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রার্থী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অবশ্য সরাসরি এটিকে বিজয়ের প্রস্তুতি বলেননি। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘অনেক মানুষ কাল (মঙ্গলবার) আসবেন। রোদ-জলের সময়ে তাঁদের জন্য ছাউনির বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। সেই কারণেই এই মঞ্চ বাঁধা হচ্ছে।’’
এ বারে অধীর চৌধুরীর ‘জয়’ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা রয়েছে। বিশেষ করে তৃণমূলের ইউসুফ পাঠান এবং জনপ্রিয় চিকিৎসক নির্মলচন্দ্র সাহা বিজেপির প্রার্থী হওয়ায় অধীরের জন্য ভোট সমীকরণ কঠিন হয়ে গিয়েছে বলেই রাজনৈতিক মহলের অনেকের মত। এর আগে পাঁচ বার অধীরের মূল প্রতিপক্ষ কখনও সংখ্যালঘু অংশের ছিলেন না। তা ছাড়া ২০১৯ সালে অধীরের জয়ের ব্যবধান সাড়ে তিন লক্ষ থেকে ৮৭ হাজারে নেমে এসেছিল। যে বহরমপুর বিধানসভায় গত লোকসভা ভোটে প্রায় ৮৯ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন অধীর, সেখানেই ২০২১ সালে প্রায় ৫০ হাজার ভোটে হেরেছে কংগ্রেস। এই সমস্ত বিবিধ অঙ্কেই এ বার বহরমপুর অধীরের জন্য ‘কঠিন’ বলে ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেসের নেতারাও মেনে নিয়েছেন।
বহরমপুর কংগ্রেস দফতরের সাংবাদিক বৈঠকে অধীর সোমবার দাবি করেছেন, মুর্শিদাবাদের তিনটি আসনই জিতবে বাম-কংগ্রেস জোট। পাশাপাশি বীরভূম, পুরুলিয়ার মতো যে সব আসনে কংগ্রেস লড়ছে, সে সব আসনেও ভাল ফলের বিষয়ে আশাবাদী অধীর। তাঁর কথায়, ‘‘ভোট ঘোষণার সময়ে সবাই ভাবছিল তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে দ্বিমুখী লড়াই হবে। কিন্তু আমরা বাম-কংগ্রেস জোট সেটাকে ত্রিমুখী লড়াইয়ে পরিণত করেছি। এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে মনে করি।’’ অধীরের বক্তব্য, বাম-কংগ্রেসের মিলিত ভোট আগের থেকে অনেক বাড়বে।
গণনা পর্যন্ত উদ্যম ধরে রাখতে কর্মী-সমর্থকদের সব দলের নেতাকেই উজ্জীবিত করার কথা বলতে হয়। বিশেষ করে বুথফেরত সমীক্ষা প্রকাশের পর থেকে সব রাজ্যেই অবিজেপি দলগুলি তা নস্যাৎ করতে নেমে পড়েছে। রবিবার ৪২ জন প্রার্থী, জেলা সভাপতিদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে অভিষেকও বলেছেন ‘এগ্জিট পোল’-এর আভাস মিলবে না। বাংলায় তৃণমূল বিজেপির থেকে বেশি আসন পাবে। অধীরের বহরমপুরে যেমন মঞ্চ বাঁধা হচ্ছে, তেমন তৃণমূলও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পাশে কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের মাঠে সাংবাদিক সম্মেলনের প্রস্তুতি রাখছে। অনেক সময়ে রাজনৈতিক দলগুলি ধারণা তৈরি করতে এ সব করে থাকে। শেষ পর্যন্ত কোন মঞ্চে কী হয়, তা স্পষ্ট হবে মঙ্গলবার দুপুরে।