Mukut Mani Adhikari

আসরে সিএএ, মুকুট-চমকেও হিসাব জটিল

গত বার জগন্নাথ প্রায় ২ লক্ষ ৩৩ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। এর পর শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়েও জিতেছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন জেলা সভাপতি এবং সাংসদ থাকার কারণে দলের সংগঠনও তিনি চেনেন ভাল ভাবে।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৪ ০৮:৩৮
Share:

মুকুটমনি অধিকারীর নামে দেওয়াল লিখন। শন্তিপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

গত এক সপ্তাহে পর পর দু’টি নাটকীয় ঘটনা ঘটে গিয়েছে মতুয়া বলয়ে। এক, বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর দলত্যাগ এবং রানাঘাাট কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়া। দুই, দেশ জুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হওয়া যার বিশেষ প্রভাব থাকবে মতুয়া ও নমঃশূদ্র অধ্যুষিত উদ্বাস্তু এলাকায়।

Advertisement

পাঁচ বছর আগে চাকরি সংক্রান্ত জটিলতায় মুকুটমণি অধিকারীর রানাঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়া হয়নি। তার বদলে প্রার্থী হন জগন্নাথ সরকার। এ বার মুকুটের ফুল বদলের পর তাঁরা সম্মুখ সমরে। এক জন পাঁচ বছরের সংসদ, অন্য জন একই দলে দীর্ঘদিন সংগঠনের দায়িত্ব পালন করে আসা বিধায়ক। এর উপরে সদ্য কার্যকর করা হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। এই জটিল সমীকরণেই এ বার রানাঘাট কেন্দ্রের ফল নির্ধারিত হতে চলেছে।

২০১৯ সালে যখন শেষ মুহূর্তে মুকুটমণিকে দৌড় থেকে সরে দাঁড়াতে হয় এবং তাঁর বদলে কপাল খোলে জগন্নাথের, দু’জনের সম্পর্কের শীতলতা বস্তুত তখন থেকেই। তরুণ বিধায়ক মুকুটমণি বিজেপির অন্যতম মতুয়া মুখ ছিলেন। মতুয়া সংগঠনের জেলা সভাপতি দায়িত্ব তিনি সামলেছেন দীর্ঘদিন। তাঁর দল বদলে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। বিজেপির সংগঠনের দুর্বলতাও তিনি জানেন। তাঁকে প্রার্থী করায় দলের কোন্দলও অনেকটা সামাল দেওয়া যাবে বলে দাবি তৃণমূলের অনেকের। কেননা তিনি সদ্য অন্য দল থেকে এসেছেন, ফলে দলের শিবির বিভাজনে তিনি এখনই কোনও দিকে নেই।

Advertisement

আবার বিজেপির একাংশের পাল্টা দাবি, মুকুট যেমন বিজেপির দুর্বলতা জানেন তেমন তাঁর দুর্বলতাও বিজেপি জানে। তা ছাড়া বিজেপির টিকিটে জিতে দলবদল করে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে যাওয়াটা আমজনতা কতটা ভাল ভাবে নেবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। মুকুট দীর্ঘদিন মতুয়া সংগঠন করে এলেও বিজেপিপন্থী মতুয়ারা সবাই যে তাঁর সঙ্গে যাবেন, তা-ও নয়।

গত বার জগন্নাথ প্রায় ২ লক্ষ ৩৩ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। এর পর শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়েও জিতেছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন জেলা সভাপতি এবং সাংসদ থাকার কারণে দলের সংগঠনও তিনি চেনেন ভাল ভাবে। তবে এ বারে তাঁর লড়াই আগের চেয়ে কঠিন হবে বলেই দাবি করছেন কেউ কেউ। কারণ, দলের গোষ্ঠী কোন্দলে বারবার তাঁর নাম জড়িয়েছে। দলের অন্দরে তাঁর বিরোধীর সংখ্যাও কম নয়। সম্প্রতি সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে প্রকাশ্যে জগন্নাথের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন দলের নিচুতলার অনেকেই।

তবে মতুয়া বলয়ে সবচেয়ে বড় বিষয় হতে চলেছে সম্ভবত সিএএ, যার প্রভাব অন্তত মতুয়া এবং উদ্বাস্তু অধ্যুষিত রানাঘাট লোকসভায় পড়বে। জগন্নাথের দাবি, "নাগরিকত্ব আইনের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে আমাদের পক্ষে। আর সদ্য দলবদল করে যাওয়া প্রার্থীকে আদৌ তৃণমূলের লোকজন ভোট দেবেন কি না সন্দেহ আছে।" তৃণমূলের রানাঘাট সংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় পাল্টা দাবি করেন, "নাগরিকত্ব আইনের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে আমাদের পক্ষেই। এখানে বিজেপির ঘর ভেঙেছে। এই আসনে আমরাই জিতব।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement