প্রতীকী চিত্র।
চলতি বছরে উচ্চ মাধ্যমিকের শেষ দিনে অর্থাৎ ২৯ ফেব্রুয়ারি রয়েছে ভূগোল পরীক্ষা। শেষ দিন বলে হয়ত অনেকটাই চিন্তামুক্ত পরীক্ষার্থীরা। তবে শেষ মুহূর্তে সঠিক ভাবে প্রস্তুতি না নিলে এতদিনের পরিশ্রম বৃথা যাবে। তাই পরীক্ষার আগে কী ভাবে টেনশন দূর করে সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায়, কোন কোন বিষয়ে বিশেষ ভাবে নজর দিতে হবে, সেই নিয়ে রইল পরামর্শ।
উচ্চ মাধ্যমিকে প্রশ্নের ধরন: প্রশ্নপত্রের ধরন যে ভাবে দিন দিন বদলাচ্ছে তাতে ভাল ফল করা সম্ভব। কিন্তু তার জন্য পাঠ্যবইও খুব মন দিয়ে পড়তে হবে। প্রশ্নপত্রে থাকবে ছোট প্রশ্ন এবং সেই জন্য কোনও অধ্যায় বাদ দেওয়া চলবে না। প্রশ্নপত্রে ২১ টি ১ নম্বরের এমসিকিউ এবং ১৪টি ১ নম্বরের এসএকিউ থাকবে। যার জন্য উত্তরপত্রে জায়গা নির্দিষ্ট করা থাকবে। এমসিকিউ প্রশ্ন প্রত্যেকটি আবশ্যিক। তবে এসএকিউতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিকল্প দেওয়া থাকে। খুব সংক্ষেপে এবং নির্দিষ্ট ভাবে তার উত্তর লিখতে হবে। এ ছাড়া থাকবে বর্ণনামূলক প্রশ্নও। এ ক্ষেত্রে ৭ নম্বরের ৫টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে।
সময় মেপে পরীক্ষা: পরীক্ষার জন্য মোট বরাদ্দ সময় তিন ঘন্টা পনেরো মিনিট। এর মধ্যে প্রথম পনেরো মিনিট প্রশ্ন মন দিয়ে পড়ে নিয়ে তার পর লেখা শুরু করতে হবে। এমসিকিউ এবং এসএকিউ-এর জন্য মোট ৪৫ মিনিট এবং বর্ণনামূলক প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ১৭ থেকে ১৮ মিনিট সময় বরাদ্দ করলে ভাল। তা হলে শেষ ১৫ মিনিট রিভিশন করার জন্য রাখা যাবে। প্রসঙ্গত, ভাল নম্বর পাওয়ার জন্য রচনাধর্মী প্রশ্নের প্রাকৃতিক ভূগোল অংশে পরিচ্ছন্ন ডায়াগ্রাম আঁকা জরুরি।
কী ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে: শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির সময় এমসিকিউ এবং এসএকিউ প্রশ্নের জন্য যে হেতু প্রতিটি অধ্যায় খুব মন দিয়ে পড়তে হবে। এর সঙ্গে বিগত দশ বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের ভূগোলের প্রশ্ন দেখে থাকলে এবং সংসদ প্রকাশিত টেস্ট পেপারের বিভিন্ন প্রশ্ন সমাধান করে রাখলে পরীক্ষায় খুব ভাল ভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে।
বিশেষ মনোযোগ: এ বারের পরীক্ষায় পর্যায়ন, ভৌম জলের কাজের ফলে গঠিত ভূমিরূপ, বিভিন্ন ধরনের প্রস্রবণ, কার্স্ট ভূমিরূপ গড়ে ওঠার শর্ত, অ্যাটল, স্বাভাবিক এবং মরু ক্ষয়চক্রের পূর্ব শর্ত ও গঠিত ভূমিরূপ, বিভিন্ন প্রকার নদী নকশা, মাটি সৃষ্টির বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও মাটির শ্রেণিবিভাগ; ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের গঠন, নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের জীবন চক্র, এই দুয়ের পার্থক্য, প্রতীপ ঘূর্ণবাত, জেট স্ট্রিম,এল নিনো ,লা নিনা তাদের উৎপত্তি ও ভারতীয় জলবায়ুর উপর প্রভাব, নিরক্ষীয়, মৌসুমী ও ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য ও পার্থক্য; জলজ ও মরু উদ্ভিদের অভিযোজন, আলো প্রিয় ও ছায়া প্রিয় উদ্ভিদ; জীববৈচিত্রে আলফা-বিটা-গামা বৈচিত্র্য, ইন ও এক্স সি টু সংরক্ষণ, বিভিন্ন প্রকার হটস্পট; আইসোবার, আইসোটিম, আইসোডোপেন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, রেডিমেড শিল্প, বাংলাদেশে পাট শিল্প, কানাডার কাগজ শিল্প, মালয়েশিয়ার রাবার শিল্প গড়ে ওঠার কারণ এবং ব্রাজিলের রাবার শিল্প গড়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতা, মোটর গাড়ি শিল্প; বিভিন্ন প্রকার অর্থনৈতিক কাজ, কাম্য জনসংখ্যা, জনঘনত্ব, মানুষ জমি অনুপাত, বিভিন্ন ধরনের বয়স ও লিঙ্গভিত্তিক পিরামিড, জনসংখ্যা বিবর্তন মডেল; রৈখিক ও বিচ্ছিন্ন বসতি, বিভিন্ন প্রকার পৌর বসতি, কর্মধারা অনুযায়ী তাদের শ্রেণিবিভাগ, এ ছাড়া বেঙ্গালুরুতে ইলেকট্রনিক্স শিল্প গড়ে ওঠার কারণ, হলদিয়া বন্দর গড়ে ওঠার কারণ এগুলির উপর বিশেষ আলোকপাত করা যেতে পারে।
সব শেষে বলতে চাই, পরিচ্ছন্ন ভাবে, সময় মেপে সব প্রশ্নের উত্তর যথাযথ ভাবে লিখলে খুব ভাল নম্বর সহজেই পাওয়া সম্ভব।