প্রতীকী চিত্র।
চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু পরের সপ্তাহেই। এই পরীক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জীববিদ্যা বা বায়োলজি। পরীক্ষা হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি। ঠিক কোন কৌশল বা পদ্ধতি গ্রহণ করলে এই পরীক্ষায় ভাল ফল করা সম্ভব, সেই বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন যোধপুর পার্ক গার্লস হাই স্কুলের জীববিদ্যার শিক্ষিকা-তথা সহ প্রধানশিক্ষিকা অজন্তা চৌধুরী।
প্রশ্নের ধরন: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জীববিদ্যার প্রশ্নপত্রে ১৪টি এমসিকিউ এবং চারটি এসএকিউ থাকে। প্রতিটি প্রশ্নে এক নম্বর করে এমসিকিউতে থাকে মোট ১৪ নম্বর এবং এসএকিউতে থাকে চার নম্বর। এ ছাড়াও পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক দু’নম্বরের পাঁচটি, তিন নম্বরের নয়টি ছোট প্রশ্ন এবং পাঁচ নম্বরের তিনটি বড় প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। পরীক্ষার্থীদের এসএকিউ-এর উত্তর দিতে হবে একটি বাক্যে। বাকি প্রশ্নগুলির উত্তর হবে ‘টু দ্য পয়েন্ট’।
সময় বিভাজন: পরীক্ষার্থীদের প্রথম ১৫ মিনিটে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েই তা খুব মন দিয়ে পড়ে নিতে হবে। এর পর কোন কোন প্রশ্নের উত্তর লিখবে, তা নির্বাচন করতে হবে। পার্ট প্রশ্ন যেন চোখ এড়িয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এমসিকিউ এবং এসএকিউ-র উত্তর ২৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে পারলে ভাল হয়। পরবর্তী ৩০ মিনিটের মধ্যে দু’নম্বরের পাঁচটি প্রশ্ন, ৬৫ মিনিটের মধ্যে তিন নম্বরের নয়টি প্রশ্ন এবং ৪৫ মিনিটের মধ্যে তিনটি পাঁচ নম্বরের প্রশ্ন শেষ করতে হবে। এরপর হাতে থাকবে ১৫ মিনিট। এই সময় মাথা ঠান্ডা রেখে রিভিশন করে নিতে হবে।
গুরুত্ব যেখানে: ২০২৩ সালের পরীক্ষায় যে প্রশ্নগুলি আসেনি বা যে অধ্যায়গুলি থেকে কোনও প্রশ্ন আসেনি, সেই প্রশ্ন/ অধ্যায়গুলি ভাল করে পড়তে হবে। এ ছাড়া, এ বারের পরীক্ষায় পাঁচ নম্বরের বড় প্রশ্নের ক্ষেত্রে সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন বা মানুষের যৌন জনন অধ্যায় থেকে একটি প্রশ্ন আসতে পারে। প্রশ্ন আসতে পারে বংশগতি/অভিব্যক্তি এবং বাস্তুতন্ত্র থেকেও।
আঁকার প্রশ্ন আলাদা ভাবে না এলেও সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন বা মানুষের জনন থেকে প্রশ্ন এলে তার উত্তরে প্রাসঙ্গিক চিত্র আঁকতে হবে পড়ুয়াদের। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সপুষ্পক উদ্ভিদের দ্বিনিষেক পদ্ধতি বর্ণনা, মানুষের নিষেক পদ্ধতির বর্ণনা, ঊজেনেসিস, স্পার্মাটোজেনেসিস, জৈবপ্রযুক্তি বিদ্যার অধ্যায় থেকে প্রশ্ন এলে পরীক্ষার্থীদের ছবি এঁকে বোঝাতে হবে। শুধু ছবি এঁকে ধাপে ধাপে বর্ণনা করেই উত্তর দেওয়া যাবে, আলাদা ভাবে লেখার প্রয়োজন পড়বে না।
যে ভাবে পড়বে: পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়তে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন টেস্ট পেপার ও বিগত বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্নের সমাধান করতে হবে। শেষের এই দিনগুলিতে সারাদিনে অন্তত দু’তিন ঘণ্টা সময় জীববিদ্যা পড়তে হবে। সর্বোপরি, সারা বছর বিদ্যালয়ের শিক্ষক/ শিক্ষিকা যে ভাবে পড়িয়েছেন, যে যে বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন, তা মাথায় রেখে পড়াশুনা করতে হবে।
যে বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে:
১) বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পড়াশুনা করলেই এই বিষয়ে ৯০% এর বেশি নম্বর পাওয়া যেতে পারে।
২) এই বছর যে হেতু জীববিদ্যা পরীক্ষার আগে ছুটি নেই, তাই আগে থেকেই এই বিষয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে। শেষ মুহূর্তে নতুন কিছু পড়ার প্রয়োজন নেই, সারাবছর যা যা পড়া হয়েছে, সেগুলিতেই চোখ বুলিয়ে গেলেই হবে।
৩) প্রশ্ন নির্বাচনের সময় যে প্রশ্নে শুধু আঁকার মাধ্যমে উত্তর দেওয়া সম্ভব বা যে প্রশ্নে নম্বরের বিভাজন বেশি, সেগুলির উত্তর করলে বেশি নম্বর তোলা সম্ভব।
৪) পাঠ্যবই ভাল করে পড়া থাকলেই এমসিকিউ বা এসএকিউ-এর উত্তর দিতে পারবে পড়ুয়ারা।
৫) ২০২৩ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতে যে প্রশ্নগুলি এসে গিয়েছে, সেগুলিকে একেবারে বাদ দিলে চলবে না। ছোট/ বড় প্রশ্ন হিসেবে আবার সেই প্রশ্নগুলো আসতেই পারে।
৬) পরীক্ষার খাতা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, অযথা কাটাকুটি না করাই ভাল।
৭) উত্তর ক্রমানুসারে লিখতে হবে।
৮) প্রতি বিভাগের প্রতি প্রশ্নের উত্তরের শেষে ‘এন্ডিং লাইন’ দিলে ভাল হয়।