Cheating in Exams

পরীক্ষায় নকলের প্রবণতায় পিছিয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা, কী বলছে শিক্ষামহল থেকে মনোবিদ?

মধ্য শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে এই বছর ‘ইউনিক বার কোড’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এর ফলে অসাধু উদ্দেশ্য নিয়ে যখন কোনও পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্রের ছবি মোবাইলে তুলেছে তখনই ওই পরীক্ষার্থীর বিস্তারিত তথ্য পর্ষদ জানতে পেরেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৪৯
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

স্কুল জীবন পার হওয়ার প্রথম ধাপ মাধ্যমিক, দ্বিতীয় হল উচ্চ মাধ্যমিক। এই দুই ধাপেই এক সঙ্গে একই প্রশ্নপত্রে লক্ষাধিক পড়ুয়ার মেধার লড়াই। কেউ থাকে প্রথম দশের তালিকায়, কেউ বা সাধারণ ফলাফলেই এগিয়ে চলে পরবর্তীর দিকে। শুধু এই সবের মধ্যে লক্ষাধিক পড়ুয়ার পিছনে চলে যায় নকল করতে গিয়ে পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাওয়া পরীক্ষার্থীরা।

Advertisement

সম্প্রতি শেষ হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীরা ফলপ্রকাশের অপেক্ষায়। ফলের দিকে তাকিয়ে কেউ আশায় বুক বাঁধছে, কারও বুক দুরুদুরু। তবে সেই দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে চলতি বছর পরীক্ষাকেন্দ্রে নকল করতে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়া পরীক্ষার্থীরা। যাদের শুধু একটা বছরই নষ্ট হয়নি, ওই পড়ুয়ারা চলতি বছরের অন্য পরীক্ষার্থীদের (প্রায় লক্ষাধিক) থেকে পরবর্তী জীবনে পিছিয়ে পড়ল। নিছক অসদুপায় অবলম্বন করে।

মধ্য শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে এই বছর ‘ইউনিক বার কোড’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এর ফলে অসাধু উদ্দেশ্য নিয়ে যখন কোনও পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্রের ছবি মোবাইলে তুলেছে তখনই ওই পরীক্ষার্থীর বিস্তারিত তথ্য পর্ষদ জানতে পেরেছে। এর পরেও লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনেকেই এই ফাঁদে পা দেয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিব জানিয়েছেন এই বছর মোট ৪৮ জন পড়ুয়ার পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। এরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে নকল করার চেষ্টা করছিল। এ বছর তাদের আর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি।

Advertisement

এই বিষয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘শুধু পর্ষদ নয়, সামাজিক দিক থেকে দেখতে গেলে পরিবারকেও তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে। পাশাপাশি তাদের কাউন্সেলিংয়ের কথাও ভাবা যেতে পারে। এতে অসৎ প্রবণতার প্রতি তাদের আকর্ষণ কমবে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষাতে পিছিয়ে পড়তে হবে না।’’

এ বার উচ্চ মাধ্যমিকেও পরীক্ষা চলাকালীন ৪২ জন পড়ুয়া নকল করতে গিয়ে ধরা পড়ে। এই বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রযুক্তির সাহায্যে অপরাধ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ধরনের অপরাধ রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তা সম্পূর্ণ নির্মূল করা যায়নি। স্কুলের বাইরে পরিবারকেও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে ছাত্রছাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে।’’

তবে, এই অল্প বয়সের এমন আচরণ নিয়ে মনোবিদরা কী ভাবছেন? কোথাও কি নিজের অজান্তেই এমন ভুল সিদ্ধান্তে পিছিয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা? এই বিষয়ে মনোবিদ শুভ্রজ্যোতি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েরা মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছে। সেই সময় তাঁদের মনের মধ্যে অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতি আকর্ষণ দেখা যায়। এই ধরনের মনোভাব বা মানসিকতা কাটাতে গেলে ছোট থেকে ‘গ্রুমিং’ ঠিক ভাবে হওয়া প্রয়োজন। ব্যর্থতা ও সাফল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করার মতো মন যখন তৈরি হয়ে যাবে, তখন এই প্রবণতা ধীরে ধীরে নির্মূল হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement