WBCHSE Class 11

পুজোর ছুটিতে অনলাইন ক্লাস! সাড়া নেই পড়ুয়াদের

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল ২১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইনে এই ক্লাস করাতে পারে স্কুলগুলি। বেশ কিছু স্কুল সোমবার থেকে শিক্ষা সংসদের এই নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে ক্লাস শুরু করেছে।

Advertisement

অরুণাভ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৩৬
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

প্রয়োজন হলে লক্ষ্মীপুজো থেকে কালীপুজোর মধ্যে অনলাইন ক্লাস করাতে পারে স্কুলগুলি। পুজোর ছুটির ঠিক আগে প্রধান শিক্ষকদের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। লক্ষ্মীপুজোর পরে সেই নির্দেশকে মান্যতা দিতে গিয়ে পড়ুয়াদের কাছ থেকে সাড়া পেল না স্কুলগুলি। সোমবার থেকে বিভিন্ন স্কুলে অনলাইন ক্লাস শুরু হলেও পড়ুয়াদের অংশগ্রহণ নিয়ে হতাশ স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, “আমরা চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পড়ুয়াদের সে ভাবে সাড়া পাইনি। ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অনেকেই জানায়, তারা কলকাতার বাইরে থাকবে এই সময়।”

শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, এই সময়ে অনলাইন ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। লম্বা ছুটি থাকার কারণে বেশির ভাগ পড়ুয়া পুজো কাটলেই বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যায়। শিক্ষকরাও তাঁদের বিভিন্ন কর্মসূচি রাখেন এই সময়কালে। স্বাভাবিক ভাবেই বাধ্যতামূলক না হলেও পড়ুয়া ও শিক্ষকদের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে অনলাইন ক্লাস করানো যথেষ্ট কঠিন স্কুলগুলির পক্ষে।

Advertisement

কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “একাদশ শ্রেণিতে ওঠার পরে প্রথম পুজোয় ছাত্রছাত্রীরা মজা করে অনেক বেশি। তাই পড়াশোনায় আগ্রহ কম থাকে। তা ছাড়া অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতি একদম থাকে না বলে বেশির ভাগ স্কুল এ পথে হাঁটার চেষ্টা করেনি।”

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল ২১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইনে এই ক্লাস করাতে পারে স্কুলগুলি। বেশ কিছু স্কুল সোমবার থেকে শিক্ষা সংসদের এই নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে ক্লাস শুরু করেছে। তবে পড়ুয়াদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে বলে জানাচ্ছে স্কুলগুলি।

শ্যামবাজার এভি স্কুলের অধ্যক্ষ মনোরঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, “এতে পড়ুয়াদের থেকে খুব বেশি সাড়া পাওয়া যাবে বলে আমার মনে হয় না। আজকে প্রথম দিন এই অনলাইন ক্লাস নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিকেলের দিকে চিত্রটা অনেকটা পরিষ্কার হবে। সিমেস্টারের ভয়ে ক্লাস করলেও, পড়ুয়ারা মন থেকে অনলাইনে ক্লাসে যুক্ত হবে বলে আমার মনে হচ্ছে না।”

তবে ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্কুল জানাচ্ছে, তারা লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে অনলাইনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত আগেই গ্রহণ করেছে। তার প্রধান কারণ, এক দিকে সিমেস্টার পদ্ধতি ও অন্য দিকে পুরনো সিলেবাসের টেস্ট পরীক্ষা রয়েছে পুজোর পরেই। একাদশ শ্রেণির‌ সিলেবাসও সম্পূর্ণ শেষ করা সম্ভব হয়নি। সেগুলি যাতে পড়ুয়ারা ঝালিয়ে নিতে পারে এবং পড়াশোনার মধ্যে থাকতে পারে, তাই অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত।

শৈলেন্দু সরকার স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেব কুমার বিশ্বাস বলেন, “আমাদের স্কুলে সোমবার থেকে চারটে করে ক্লাস করানো হবে অনলাইনে। এই ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের স্বার্থে। যাতে তাদের সিলেবাসে যে বিষয়গুলি রয়েছে, তা তারা সম্পূর্ণরূপে জানতে পারে এবং প্রস্তুতিও ঠিক মতো নিতে পারে।”

বেশ কিছু স্কুল চেষ্টা করেও পড়য়াদের অনলাইন ক্লাসে আনতে পারেনি। তারা জানিয়েছে, পুজোর ছুটি শেষ হলে একাদশ শ্রেণির ক্লাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে পঠন-পাঠনের সুবিধার জন্য। এ প্রসঙ্গে, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “পুজোর আগে আগেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ স্কুলগুলিকে ছুটির মধ্যে অনলাইন ক্লাস করার ব্যাপারে অনুরোধ করেছিল। স্কুলগুলি আগ্রহ দেখালেও ছাত্রছাত্রীদের সাড়া কম পাওয়া যাচ্ছে। এবং এটা আমরা বিভিন্ন জেলা থেকেই খবর পাচ্ছি। তা হলে পুজোর আগে অনলাইন পড়াশোনাকে উৎসাহিত করার জন্য যে ১,৬০০ কোটি টাকা খরচ করা হল, তা পুরো জলে ঢালা হল না কি?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement