সংগৃহীত চিত্র।
পুজো মিটতেই সারপ্লাস ট্রান্সফার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ হাতে আসার পরই সিঁদুরে মেঘ দেখছে শিক্ষক-শিক্ষিকদের একাংশ। মাধ্যমিক স্তরের কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলির ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেনি শীর্ষ আদালত।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে আমরা হতাশ। মঙ্গলবার আমরা বৈঠকে বসছি। এই নির্দেশ পর্যালোচনা করার অনুরোধ জানিয়ে রিভিউ পিটিশন দায়ের করব।”
গত বছর অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেছিল, রাজ্য ২০১৭-র আগে নিযুক্ত স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আপাতত দূরের জেলায় বদলি করতে পারবে না। চলতি বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের মামলা খারিজ করে বিচারপতি জেকে মহেশ্বরী ও বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের বেঞ্চ রাজ্য সরকারের হাতে যত্রতত্র বদলির ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়। শিক্ষক মহলের একাংশ মনে করছে, হাইকোর্টের নির্দেশের পর সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার আগে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মধ্যে দিয়ে সমাধানের পথ খোঁজা অনেক বেশি যুক্তিযুক্ত ছিল। এখন সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে রাজ্য সরকার সুবিধা পেয়ে গেল বলেই ব্যাখ্যা ওই অংশের।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পই পই করে বলেছিলাম, সুপ্রিম কোর্টে যাবেন না। শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অনেকটাই সমাধানের পথে এগিয়েও গিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু অর্থপিপাসু মানুষ তা সফল হতে দিলেন না। উল্টে লড়াইকে ভুল পথে চালিত করলেন। এখন বল শিক্ষা দফতরের কোর্টে। আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে একটু মানবিক দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করব।’’
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সারপ্লাস ট্রান্সফারের আওতায় দূর দূরান্তে বদলির বিরুদ্ধে রাজ্যের মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী সমিতি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন আইনে ২০১৭ সালে ১০-সি নতুন ধারা যোগ করে স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এক জেলা থেকে আর এক জেলায় বদলি করে দেওয়ার রাস্তা খোলা হয়েছে। ২০১৭ আগের যাঁরা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন তাঁদেরও বদলি করা হচ্ছে বলে দাবি করে ওই সংগঠন।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, রাজ্যের ২০১৭ সালের আগে নিযুক্ত স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দূরের জেলায় বদলি করা যাবে না। প্রয়োজনে সারপ্লাস শিক্ষকদের কাছাকাছি স্কুল বা জেলার মধ্যে বদলি করতে হবে। তবে যাঁদের ইতিমধ্যে বদলি করা হয়েছে, তাঁদের শীর্ষ আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছিল, যাঁরা ২০১৭ সালের পরে নিযুক্ত হয়েছেন, এমন শিক্ষক শিক্ষিকাদের রাজ্য সরকার যত্রতত্র বদলি করতে পারবে।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “প্রতিহিংসামূলক বদলি হলে ছাত্র বা শিক্ষক কারও উপকার হবে না। সরকারকে এই বিষয়টি খুব নিরপেক্ষতার সঙ্গে দেখতে হবে।’’