পরীক্ষা দিচ্ছেন অনিকেত দত্ত। ছবি: সংগৃহীত।
পরীক্ষার ২৪ ঘণ্টা বাকি। হঠাৎই ছোঁয়াচে রোগে (চিকেন পক্স) আক্রান্ত অনিকেত দত্ত। বুঝে উঠতে পারছিলেন না আদৌ পরীক্ষা দিতে পারবেন কি না। কিন্তু কলেজের তৎপরতায় শেষমেশ হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দেন ওই পড়ুয়া।
আশুতোষ কলেজের বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অনিকেত পরীক্ষার ঠিক আগের দিনই চিকেন পক্স-এ আক্রান্ত হন। তাঁর তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার আসন পড়েছিল স্কটিশ চার্চ কলেজে। ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ওই কলেজ সকলের সঙ্গে তাঁকে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেয়নি। মাথায় হাত পড়ে অনিকেতের। এর পরেই পরিস্থিতির কথা নিজের কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান সুপ্রিয় দাসকে জানান তিনি। বিভাগীয় প্রধান যোগাযোগ করেন স্কটিশ চার্চ কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, ওই পরীক্ষার্থী কলেজে বসে পরীক্ষা দিতে পারবেন না। সুপ্রিয় বলেন, “ওই পরীক্ষার্থীর যাতে বছর না নষ্ট হয়, সেটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। তাই যোগাযোগ করি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে আলোচনার পরে অনিকেতকে ভর্তি করা হয় বেলেঘাটা আইডি-তে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দেয় সে। আর পাঁচ জন যখন কলেজে পরীক্ষা দিচ্ছে, তখন হাসপাতালের বিছানায় বসেই একই সময়ে পরীক্ষা দিয়েছে অনিকেত।“
প্রসঙ্গত, গত বছরও একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল আশুতোষ কলেজ। মনস্তত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় সিমেস্টারের এক ছাত্রীর সিট পড়েছে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে। তারপর ছাত্রীটির বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। ঠিক হয়েছিল, সেই উত্তরপত্র জীবাণুমুক্ত করে আলাদা খামে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হবে। ছাত্রীটিকেও এমন কালি ব্যবহার করতে বারণ করা হয়, যা ধুয়েমুছে যেতে পারে। কিন্তু সেই সময়ের লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার জানিয়েছিলেন, ওই উত্তরপত্র নিতে অস্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর। এরপর নানা সংঘাত দেখা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের মধ্যে। যা পরবর্তীতে থাকা পর্যন্তও গড়ায়। শেষমেষ, চিকেন পক্সে আক্রান্ত ওই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র গ্রহণ করেছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবি বলেন, ‘‘এ হেন সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পরেই কলেজ তৎপর হয়। এবং যাতে আর কোনও পড়ুয়া এমন সমস্যায় না পড়ে, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেয় আশুতোষ কলেজ।’’