সংগৃহীত চিত্র।
রামপুজোকে কেন্দ্র করে বিতর্কের জের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ১৮ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় এফআইআর।
গত জানুয়ারি মাসে, অযোধ্যায় রামন্দির উদ্বোধনের দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে রামপুজো ও তার লাইভ সম্প্রচারকে কেন্দ্র করে দু’দল পড়ুয়ার মধ্যে গন্ডগোল হয়। এখানে কলা, বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং মিলিয়ে মোট ১৮ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। কে বা কারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের বিরুদ্ধে এফআইআর করল, তা নিয়ে এখনও রয়েছে ধোঁয়াশা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের কাংশের বক্তব্য, এই ধরনের কাজ করেছে ‘রামপন্থী’ ছাত্র সংগঠন এবিভিপি।
উল্লেখ্য, এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপি সমর্থিত ছাত্র ইউনিয়ন। ক্যাম্পাসের মধ্যে এই ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ চাইলেও, অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে জানান হয়েছে। তার পর কার্যত জোর করে ক্যাম্পাসে ওই দিন এই অনুষ্ঠান পালনের চেষ্টা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় তরফে অভিযোগ, ওই দিন গন্ডগোলের সময় বেশ কিছু বহিরাগত উপস্থিত ছিল ক্যাম্পাসে।
জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “লাইভ স্ট্রিমিং এবং রামপুজো করার জন্য একদল ছাত্র উদ্যোগী হয়েছিল। জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে গন্ডগোল হয়েছিল। যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আমাদের হস্তক্ষেপে আমরা মিটিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু হঠাৎই দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক পড়ুয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। ছাত্রদের বিরুদ্ধে যে ধরনের ধারা যুক্ত করা হয়েছে, তার সঙ্গে এই ঘটনার মিল নেই।”
১৮ জনের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত, দাঙ্গা এবং অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দু’জনকে আলিপুর কোর্ট থেকে তলব করায় তাঁরা আদালতে গিয়ে শর্তসাপেক্ষ জামিন নিয়েছেন। তাঁদের কোর্টে এসে হাজিরা দেওয়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু না লেখা-সহ বেশ কিছু বিধিপালনের কথাও বলা হয়েছে। আর আলিপুর আদালতে জামিন নিতে গেলে ওই দু’জন ছাত্র জানতে পারেন যে, কেবল তাঁরা নন, আরও ১৬ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় ২৯ এপ্রিল যাদবপুর থানায় এফআইআর করা হয়েছে।
থানা কোনও পদক্ষেপ না করায় বিষয়টি আদালতে গিয়েছে। এমনকি, ওই ঘটনার কিছু সিসিটিভি ফুটেজও আদালতে জমা করা হয়েছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর কর্তৃপক্ষের তরফ থেকেও থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে খোঁজ নেওয়া হয়েছে যে, ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল, কেনই বা জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হল। এবং কে বা কারা সিসিটিভি ফুটেজ জমা দিল। প্রাথমিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় জানতে পেরেছে, বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু ছাত্র এই অভিযোগ দায়ের করেছে।
যে সমস্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তার মধ্যে বেশির ভাগই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদের সদস্য, এ ছাড়াও এসএফআই এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরও নাম রয়েছে এফআইআর-এ।