রাজনীতিতে সখ্য ও শত্রুতা যমজ সন্তানের মতো! কে কখন কার পোশাক পরে নেয়, ফারাক করা দুষ্কর। বুধবার দারভাঙা গিয়ে উৎসব করেই শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, প্রস্তাবিত এমস-এর। মুখ্যমন্ত্রী তথা শরিক নেতা নীতীশ কুমারকে প্রশংসায় ভাসালেন। নীতীশও প্রায় সমবয়সি প্রধানমন্ত্রীর চরণস্পর্শ করতে উদ্যত হলেন ক্যামেরার সামনে! বললেন, স্বয়ং মোদী যখন আগ্রহী, এই হাসপাতাল হবে দেশের সকল হাসপাতালের সেরা। মোদীও জানালেন শুধু বিহারই নয়, প্রতিবেশী বাংলা এমনকি নেপালও উপকৃত হবে এই প্রকল্পে। তবে সমাবেশে উপস্থিত অনেকেরই মনে পড়তে পারে ঠিক এক বছর আগের কথা। প্রকল্পটির জন্য ১৫১ একর জমি চিহ্নিত করেও কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক গাফিলতিতে তা পড়ে ছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের অনাগ্রহ নিয়ে তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব অভিযোগ তুলেছিলেন। তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া বলেছিলেন, ওই জমি নাকি এমস প্রকল্পের জন্য যথাযথ নয়। তখন জেডি(ইউ) ছিল শত্রু, আজ বন্ধু। রাজনৈতিক মহল বলছে, দীর্ঘ অবহেলার পর আজ বদলে গিয়েছে প্রকল্পের গুরুত্ব।
সমীকরণ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।
চুয়াত্তরের যুবক
ওয়াকফ বিল ঘিরে যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক যত গড়িয়েছে তত বিতর্ক তৈরি হয়েছে কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পালকে নিয়ে। বিরোধীদের তোলা ‘স্বেচ্ছাচারী’ বদনামও কুড়িয়েছেন তিনি। অভিযোগ উঠলেও, নিজের দায়িত্ব পালনে ফাঁকি রাখছেন না জগদম্বিকা। সকালে বৈঠক শুরু থেকে একেবারে সন্ধ্যায় বৈঠক শেষ হওয়া পর্যন্ত টানা উপস্থিত থাকার চেষ্টা করছেন। এক দিন কার্যত জগিং করার স্টাইলে হালকা দৌড়ে বৈঠকের ভিতরে প্রবেশ করতে দেখা গেল তাঁকে। দিনভর বৈঠক করে দলের বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে যখন বেরোচ্ছেন তখনও একই রকমের চনমনে জগদম্বিকা। খোদ বিজেপি সাংসদেরাই জানতে চাইলেন, তরতাজা থাকার রহস্য! উত্তরপ্রদেশের এক সাংসদ তো ৭৪ বছরের জগদম্বিকাকে বলেই বসলেন, “খণ্ডহর (ধ্বংসাবশেষ) বতাতে হ্যায় কি ইমারত কভি বুলন্দ থি।”
তারুণ্যের রহস্য
এই তারুণ্যের রহস্য কী? সুপ্রিম কোর্টে কাজের শেষ দিনে এই প্রশ্নের মুখে পড়লেন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। প্রশ্নটা করলেন দিল্লির স্কুলে, আইন পড়ার সময় তাঁর সহপাঠী, লব্ধপ্রতিষ্ঠ আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। প্রধান বিচারপতির এজলাসে বিদায় সংবর্ধনায় সিঙ্ঘভি হাসতে হাসতে বললেন, “আপনাকে যে তরুণদের মতো দেখতে রয়ে গিয়েছে, তার জন্য আমাদের বুড়ো দেখায়। আজ অন্তত এই তারুণ্যের রহস্যটা বলে যান।” শুনে হো হো করে হেসে উঠলেও প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় রহস্য ফাঁস করেননি। তবে নতুন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না বলেছেন, উনি রোজ ভোর চারটেয় ওঠেন। পুরোপুরি ‘ভিগান’ খাবার খান। শিঙাড়া খেতে খুব ভালবাসেন। তা বলে কোনও বৈঠকের সময় কিচ্ছুটি খান না। খুবই নিয়ম-শৃঙ্খলায় জীবন কাটান। এটাই তা হলে তারুণ্যের রহস্য!
বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি।
মুখ্যমন্ত্রী পদে স্মৃতি?
সাংবাদিক সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘অফ দ্য রেকর্ড’ আলোচনায় বসেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। বিষয়: বছর ঘুরলেই হতে চলা দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন। দিল্লি সরকার তথা আম আদমি পার্টির সরকারের সমালোচনায় সরব স্মৃতির দাবি, এ যাত্রায় বিজেপি দিল্লির দখল নিচ্ছে। সাংবাদিকদের প্রশ্ন, “শোনা যাচ্ছে আপনি মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন?” স্মৃতির জবাব, “যে কোনও খালি জায়গা দেখলেই আমাকে কেন গুঁজে দেওয়া হয় বলতে পারেন!” মুখে ‘না’ বললেও, দিল্লিতে বাড়ি কিনেছেন স্মৃতি। শুরু করেছেন প্রচারে নামার প্রস্তুতিও। স্মৃতির বাবা পঞ্জাবি, মা বাঙালি। দিল্লির অন্যতম দুই ভোটার-শ্রেণিকে বার্তা দিতেই কি স্মৃতিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে খাড়া করানোর কথা ভাবছে দল? শুরু হয়েছে জল্পনা।
নেহরু থেকে প্রিয়ঙ্কা
ওয়েনাড়ে ভোটের আগে রোড শো করতে করতেই প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর মুখোমুখি এক অশীতিপর বৃদ্ধা। এক কংগ্রেস নেতা বললেন, এই বৃদ্ধা তাঁর ঠাকুমার বাবা অর্থাৎ দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দেখেছেন। তখন বৃদ্ধা ছিলেন নাবালিকা। দৃশ্যতই আবেগরুদ্ধ প্রিয়ঙ্কা অনুবাদকের সাহায্যে সেই মহিলার সঙ্গে কথা বললেন। তাঁর হাত দুটো জড়িয়ে রাজীব-কন্যা বৃদ্ধাকে সুস্থ থাকার কথা বলে গেলেন।