কাশ্মীরের আপেল বাগান।
দেবাশিস ভট্টাচার্যের নিবন্ধ ‘বাঙালি না, ওরা মুসলিম’ (৬-১১) পড়ে মুগ্ধ হলাম। কিন্তু কাশ্মীরে বাঙালি শ্রমিকদের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে প্রকৃত পরিকল্পনাটা বুঝতে হবে। কাশ্মীরের অর্থনীতিতে আপেলের গুরুত্ব অপরিসীম। কাশ্মীর এই দেশের আপেলের চাহিদার প্রায় ৭০% জোগান দেয়। প্রায় আট হাজার কোটি টাকার আপেল প্রতি বছর কাশ্মীর রফতানি করে। প্রায় চার লক্ষ হেক্টর জমিতে আপেল চাষ হয়।
এত দিন আপেল-চাষিরা উপযুক্ত দাম পেতেন না। ৩-১৫ টাকা কেজি দরে আপেল (বিভিন্ন জাত ও মান অনুযায়ী) বিক্রি করতে বাধ্য হতেন ফড়ে বা দালালদের। ওই আপেল বিভিন্ন হাত ঘুরে এসে ১০০-১৫০ টাকা কেজি দরে দেশের খোলাবাজারে বিক্রি হত। এই দালাল, ফড়ে বা মধ্যস্বত্বভোগী কারা? তাঁরা, যাঁরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের বিদেশে পড়াশোনা করতে পাঠিয়ে সেখানেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন আর কাশ্মীরের আম আদমির ছেলেমেয়েদের কিছু টাকা দিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর উপর পাথর ছুড়তে শিখিয়েছেন।
গত ১২-৮-১৯ তারিখ থেকে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা সরাসরি আপেল কিনছে আপেল-চাষিদের কাছ থেকে। আপেলকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, কেজিপ্রতি ৩৮, ৫৪ ও ৭৫ টাকা। তিন হাজার আপেল-চাষি ‘ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার’ প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়ে গিয়েছেন। দু’লক্ষ মেট্রিক টন আপেল সারা দেশে বিভিন্ন প্রান্তে গিয়েছে। ফলে পাকিস্তানি জঙ্গিদের (এবং তাদের সমর্থকদের) টনক নড়েছে, সাধারণ কাশ্মীরিদের হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ পৌঁছে গেলে কে আর জঙ্গি হবে? বঞ্চনার অভিযোগও তোলা যাবে না, আজাদ কাশ্মীরের দাবিতে অনেকেই আর সরব হবেন না। তাই ট্রাক ড্রাইভার, শ্রমিকদের হত্যার ছক কষা হয়েছে। আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই হত্যার ঘৃণ্য রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই হবে। তাই নেপথ্যের কারণটাও জেনে রাখা ভাল।
বিজনকুমার মিত্র
চুঁচুড়া, হুগলি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।