এক শ্রেণির বাইকচালক বিকট শব্দ উৎপন্ন করে গলি থেকে রাজপথ বিনা বাধায় দাপিয়ে বেড়ান। ফাইল চিত্র।
ইদানীং কলকাতা এবং শহরতলির রাস্তাঘাটে এক নতুন উপদ্রব দেখা যাচ্ছে। এক শ্রেণির বাইকচালক একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির বাইকের সাইলেন্সারে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ঘটিয়ে বিকট শব্দ উৎপন্ন করে গলি থেকে রাজপথ বিনা বাধায় দাপিয়ে বেড়ান। এঁদের দৌরাত্ম্যে শিশু এবং বয়স্করা প্রতিনিয়ত নানা ভাবে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। বাইকগুলি জনবহুল রাস্তা, স্কুল-কলেজ, এমনকি হাসপাতালের সামনে দিয়েও অবাধে ঘুরে বেড়ায়। কোনও নিয়ম মানে না। এখানে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, মোটর ভেহিকলস বিভাগ কিংবা ট্র্যাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। পরীক্ষা করলে দেখা যাবে, বাইকগুলির প্রায় সব ক’টিই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধির মাপকাঠির অনেক বেশি পরিমাণে শব্দদূষণ ঘটিয়ে চলেছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সুজয় ভট্টাচার্য, কলকাতা-৪৭
ভাগাড় চাই
কয়েক বছর আগেও শহর বা গ্রামের একটা নির্দিষ্ট স্থান ভাগাড় হিসাবে চিহ্নিত থাকত, যেখানে মৃত পশুদের ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হত। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে সেই ভাগাড় নিশ্চিহ্ন করে সেখানে কোনও কার্যালয় বা বাড়ি বানানো হয়েছে। ফলে, মৃত পশুদের দেহ ফেলার আর কোনও নির্দিষ্ট জায়গা নেই। আর সেই কারণেই এদের রাতের অন্ধকারে কোনও লোকালয়ে বা বাড়ির কাছাকাছি ফেলে দেওয়া হয়। এর ফলে প্রচণ্ড দুর্গন্ধের কারণে সংশ্লিষ্ট লোকালয় বা বাড়ির মানুষেরা সমস্যায় পড়েন। এবং শেষ পর্যন্ত মৃত প্রাণীর দেহটিকে দূরে কোনও নির্জন স্থানে ফেলে আসার ব্যবস্থা তাঁদের নিজেদেরই করতে হয়।
এমন পদক্ষেপ কোনও স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। সেই জন্য প্রশাসনের সক্রিয় উদ্যোগে তারকেশ্বরের কোনও নির্দিষ্ট নির্জন জায়গায় যদি ভাগাড় করার ব্যবস্থা থাকে, তা হলে সেখানে মৃত পশুদের ফেলা যায়। বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সদিচ্ছা প্রার্থনা করছি।
মঞ্জুশ্রী মণ্ডলতারকেশ্বর, হুগলি
পকেটমার
পার্ক সার্কাস স্টেশন চত্বর ও সংলগ্ন এলাকায় পকেটমারের প্রবল দৌরাত্ম্য চলছে। দিনেদুপুরে যাত্রীদের পকেট থেকে টাকা-মোবাইল নিয়ে তারা চম্পট দিচ্ছে। স্টেশন চত্বরে একটু দাঁড়ালেই এমন ঘটনা অহরহ দেখা যাবে। এখানে সাধারণ মানুষ নানা প্রয়োজনে আসেন, অনেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যাতায়াত করেন। এ ছাড়া যাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগই নিম্ন আয়ের মানুষ, যাঁরা কর্মসূত্রে এই স্টেশনে ওঠানামা করেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, অবিলম্বে পকেটমারদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুন।
সৈয়দ সাদিক ইকবাল, সিমলা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
বন্ধ শৌচাগার
ভারতীয় রেলের শিয়ালদহ-নৈহাটি শাখার আমি এক জন নিত্যযাত্রী। বেশ কয়েক বছর পূর্বে দেখেছিলাম, এই শাখার প্রতি স্টেশনে বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষদের জন্য আলাদা ভাবে শৌচালয় নির্মাণ করা হল। রেলের এই বদান্যতা দেখে যথেষ্ট খুশি হয়েছিলাম। সেই নির্মাণকার্য শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও মাঝে এতগুলো বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু কোনও অজানা কারণে ‘দিব্যাঙ্গ শৌচালয়’গুলি আজও চালু হয়নি। জরুরি দরকারে বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষেরা যদি ওই শৌচালয়গুলো ব্যবহার করারই সুযোগ না পান, তা হলে অর্থব্যয় করে সেগুলির তৈরি করার পিছনে কী যুক্তি থাকতে পারে, তা ঠিক বোধগম্য হল না।
অনির্বিত মণ্ডল, ইছাপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
জমির মালিকানা
কল্যাণী মহকুমার অন্তর্গত গয়েশপুর পুরসভা খাতায়-কলমে পুরসভা হলেও এখানে অবস্থিত কাটাগঞ্জ, কানপুর, কুলিয়া এবং বালিয়া মৌজা মিলিয়ে প্রায় পাঁচশো একর জমি কৃষিকাজের অন্তর্ভুক্ত। এর উপর আনুমানিক প্রায় সাড়ে তিনশো পরিবার নির্ভরশীল। এই সকল মৌজার জমি নিজস্ব মালিকানাহীন। এ ছাড়াও পুর এলাকায় নিজস্ব মালিকানাধীন কৃষি জমিও রয়েছে। পুরসভা গঠিত হওয়ার অনেক আগেই এখানকার এক শ্রেণির দরিদ্র মানুষ চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
গয়েশপুর পুরসভা মূলত উদ্বাস্তু অধ্যুষিত অঞ্চল। দেশভাগের যন্ত্রণা নিয়ে বহু মানুষ এ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আশ্রয় নেন। গয়েশপুর তার মধ্যে অন্যতম। ১৯৬৭-৬৮ সালে যুক্তফ্রন্টের সময় কলকাতা পিঁজরাপোল সোসাইটির অধীন পাঁচশো একর জমি সরকার অধিগ্রহণ করে। তার পর কৃষক পরিবার পিছু পাঁচ বিঘা এবং অকৃষকদের দু’বিঘা ও পরে আগ্রহী অন্যদের এক বিঘা করে জমি বণ্টন করা হয়েছিল। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অজয় মুখোপাধ্যায় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর ধরে বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকে চাষ করে আসা কৃষকদের ওই জমিতে কোনও আইনি অধিকার নেই। অর্থাৎ, সরকার মনে করলে সেই সব জমি ব্যবহার করতে পারে কোনও ক্ষতিপূরণ ছাড়াই। সেই অভিজ্ঞতা কৃষকদেরও আছে। উক্ত মৌজাগুলোতে অবস্থিত খাস জমির কোনও কাগজ বা পাট্টা না থাকায় চাষিরা কেন্দ্র বা রাজ্যের সব সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ভোটের আগে নেতারা কৃষকদের প্রতিশ্রুতি দিলেও, ভোট মিটে গেলে সব আবার চাপা পড়ে যায়।
তা ছাড়া, কৃষকদের মধ্যেও আছে সমন্বয়ের অভাব। অভিযোগ, এরই মধ্যে কোথাও কোথাও জমির চরিত্র পাল্টে সেগুলি হাতবদল হয়ে যাচ্ছে। বাম আমলে রাজ্যের অন্যত্র কৃষিজমির পাট্টা দেওয়া শুরু হলেও, এই সময়ে গয়েশপুরের কৃষকদের দীর্ঘ দিনের দাবি আজও পূরণ হয়নি। এর জন্য যদিও একাংশ পূর্বতন সরকারকে দায়ী করে। এ দিকে, কৃষক সমিতির উদ্যোগে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে একাধিক বার স্মারকলিপি জমা দিয়েও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি।
তাই জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর বা প্রশাসনের কাছে চাষিদের আবেদন, দশকের পর দশক ধরে চাষ করে আসা জমিগুলোর নিঃশর্ত দলিল দেওয়া হোক। প্রতি দিন জমি হারানোর ভয়ে তাঁদের যেন কৃষিকাজ করতে না হয় এবং অন্য অঞ্চলের কৃষকদের মতো তাঁরাও সরকারি সুবিধা ভোগ করতে পারেন।
শুভময় দে, কাটাগঞ্জ, নদিয়া
অসহযোগিতা
গত ছ’মাস বনগাঁ লোকালে যাতায়াত করছি অফিস টাইমে। এই স্বল্প দিনের অভিজ্ঞতাতেই বুঝে গিয়েছি, এক শ্রেণির নিত্যযাত্রী আছেন যাঁরা কোনও ব্যাপারেই আপস করতে পছন্দ করেন না। সিটে তিন জন একটু ঠাসাঠাসি করে বসলে, চতুর্থ যিনি ওই সিটে খুব কষ্ট করে বসে আছেন, তিনি অপেক্ষাকৃত ভাল ভাবে বসতে পারেন। কিন্তু বাকিরা সেই আপসটুকু করবেন না। তাঁদের একটু সরে বসতে বললেই, তাঁরা বলেন, “এই সিটে চার জন বসা যায় না, এটা তিন জনের সিট।” বিশেষ করে, সেই চতুর্থ ব্যক্তি যদি তথাকথিত নিত্যযাত্রী না হন, তবে চতুর্থ সিটে তাঁর বসা খুব মুশকিল।
সামান্য দেড়-দু’ঘণ্টার যাত্রাপথ। এই কিছু সময়ের জন্য সহযাত্রীদের প্রতি যদি এইটুকু সহমর্মিতাও আমরা দেখাতে না পারি, তবে এক জন মানুষ হিসাবে নিজের কাছে নিজেকেই ছোট হয়ে যেতে হয় না?
অর্ণব মণ্ডল, রামচন্দ্রপুর, উত্তর ২৪ পরগনা