—প্রতীকী ছবি।
‘বেশি মুনাফার ফাঁদে প্রতারিত যুগ্ম বিডিও’ (৩১-৫) শীর্ষক সংবাদের শিরোনাম দেখে মনে হওয়াই স্বাভাবিক এক জন আধিকারিক চিট ফান্ডের মতো বেআইনি কোনও সংস্থার দ্বারা প্রলোভিত হয়ে টাকা খুইয়েছেন। যদিও পরিবেশিত সংবাদে প্রকাশ, তিনি শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন।
ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানতে টাকা বিনিয়োগের মতোই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগও আইনসিদ্ধ। ব্যাঙ্কের সুদের হার তলানিতে ঠেকায় অনেকেই তাই শেয়ার কেনার দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু প্রতারকদের নিত্যনতুন ফাঁদে, ক্ষণিকের অসতর্কতায় মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। অচেনা ফোন নম্বরে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত ব্যক্তিগত তথ্য জানানো বা অজানা কোনও লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সতর্কীকরণ গণমাধ্যমে চোখে পড়লেও খোয়ানো টাকা ফেরত পেতে কী করণীয়, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনও নির্দেশিকা তেমন চোখে পড়ে না। ফলে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অহেতুক হয়রানির শিকার হন। বিপর্যস্ত হয়ে থানায় ফোন করলে কখনও সাইবার ক্রাইম বিভাগে যোগাযোগ করতে, কখনও বা থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ জানাতে বলা হয়। বয়স্ক এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যা খুবই অসুবিধাজনক।
উপরোক্ত অসুবিধা দূর করতে কয়েকটি পদক্ষেপের কথা ভাবা যেতে পারে। প্রথমত, ব্যাঙ্কের পাসবইয়ের ভিতরের মলাট বা পাতায় প্রতারিত হলে টাকা ফেরত পাওয়ার ইতিকর্তব্য স্পষ্ট এবং বড় হরফে লিখিত থাকা আবশ্যক। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের একটি নির্দিষ্ট পোর্টাল বা অ্যাপে অভিযোগ লিপিবদ্ধ করার ব্যবস্থা চাই, যার লিঙ্ক পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। অর্থাৎ, গ্ৰাহকের অভিযোগ একই সঙ্গে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের নজরে আসবে। তৃতীয়ত, ওই পোর্টাল বা অ্যাপেই অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্তি স্বীকার এবং চতুর্থত, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গৃহীত ব্যবস্থাদি এবং টাকা ফেরতের কথা একই ভাবে গ্ৰাহককে জানানো হবে।
টাকা খোয়ানোর বিষয়টি অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট সকলের গোচরে এলে তাঁরা দ্রুত পদক্ষেপ করতে সক্ষম হবেন। ভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা পড়া টাকা ফেরত-সহ প্রতারককেও চিহ্নিত করা সহজ হবে। অবৈধ কোনও তৃতীয় পক্ষ দ্বারা গ্ৰাহকের টাকা গায়েব হলে, তার দায় কি ব্যাঙ্কের নয়?
ধীরেন্দ্র মোহন সাহা, কলকাতা-১০৭
অযাচিত অর্থব্যয়
আমি এক জন গৃহবধূ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জয়নগর মজিলপুর শাখার গ্রাহকও। কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৫ সালে কলকাতা থেকে দেশবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা ও অটল পেনশন যোজনা নামে তিনটি বিমা প্রকল্প চালু করে। আমি আজ পর্যন্ত এর মধ্যে কোনও বিমা প্রকল্প করিনি। কিন্তু হঠাৎই কয়েক সপ্তাহ আগে ফোনে মেসেজ এল প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা চালু রাখার জন্য অ্যাকাউন্টে যেন প্রিমিয়াম বাবদ যথাক্রমে ২০ টাকা ও ৪৩৬ টাকা রাখা হয়। এই ধরনের কোনও পলিসি না থাকায় মেসেজটি দেখে প্রথমে বিস্মিত হলাম। পরে গত মে-র মাঝামাঝি মেসেজ আসে জীবন জ্যোতি বিমা যোজনার প্রিমিয়াম বাবদ আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৩৬ টাকা কেটে নেওয়া হল। এর চার দিন পরে কাটা হল কুড়ি টাকা। আমি সেই দিনই ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করি। এক আধিকারিক জানালেন, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপার। এখানে ব্যাঙ্ক কোনও ভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। পরে জানলাম, অনেক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকেই এই ভাবে টাকা কাটা হয়েছে। আমার প্রশ্ন, এই ভাবে টাকা কাটার অর্থ কী?
গ্রামীণ এলাকার অনেক মানুষ এখনও এই সব পলিসি ও ব্যাঙ্কিং বিষয় নিয়ে সচেতন নন। তাঁরা নিয়মিত ব্যাঙ্কের বই আপডেট করেন না বা ফোনে মেসেজ দেখেন না। তাঁদের এই অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে পলিসি প্রিমিয়াম বাবদ টাকা কেটে সরকারি কোষাগারে মোটা অর্থ জমা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কাবেরী দে শূর, জয়নগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
বেআইনি স্টপ
প্রায় বছর দেড়েক হল রবীন্দ্র সেতুর পূর্ব প্রান্তে অর্থাৎ কলকাতার দিকে একটি বাসস্টপ গজিয়ে উঠেছে। কলকাতামুখী যানবাহন যেখানে হাওড়া সেতু থেকে নামছে, ঠিক সেই জায়গায় বেশ কিছু মানুষ ভারী মালপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রথম দিকে দু’-চার জন দাঁড়ালেও সংখ্যাটা একটু একটু করে বেড়ে এখন ২০-২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পযর্ন্ত সব সময়ই এখানে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা যায়। এখানে যাঁরা অপেক্ষা করেন, তাঁরা প্রায় সকলেই ফুল বা অন্য কোনও জিনিসের ব্যবসায়ী। স্থানীয় পাইকারি ফুলবাজার ও বড়বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে এই স্থান থেকে বাসে ওঠা হয়তো তাঁদের পক্ষে সুবিধাজনক। সরকারি-বেসরকারি বেশির ভাগ বাসই সেতু থেকে নামার সময় বাঁ-দিকে সরে যায় এই যাত্রীদের তোলার জন্য। শুধু বাসই নয়, অনেক সময় সারি দিয়ে ট্যাক্সিও এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যান নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্ব ক্ষণ সিভিক পুলিশ ও ট্র্যাফিক পুলিশ সেখানে উপস্থিত থাকলেও তাঁরা কোনও পদক্ষেপ করেন না।
সেতু বা সড়ক উড়ালপুলের উপর কোনও স্টপ থাকা বৈধ কি? রবীন্দ্র সেতুর উপর এই স্থানে কোনও স্টপ আগে ছিল না। জগন্নাথ ঘাট ফুলবাজার ও বড়বাজার থেকে আগেও ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যেতেন। তাঁরা স্ট্র্যান্ড রোড, এমজি রোড, ব্রেবোর্ন রোড ইত্যাদি জায়গায় অপেক্ষা করতেন। লকডাউনের পর থেকে এই জায়গা বাসস্টপের চেহারা নেয়। পুলিশ-প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানানোর পর এই বছরের মার্চ মাসে হিন্দি, ইংরেজি এবং বাংলায় ‘হাওড়া ব্রিজের উপর বাস থামিবে না’ লেখা দশ-বারোটা বোর্ড লাগানো হয়। ব্যস, ওইটুকুই। মে মাসের শেষের দিকে একটামাত্র বোর্ড চোখে পড়ল, বাকিগুলো উধাও।
পুলিশ-প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, ‘এখানে বাসের জন্য অপেক্ষা করবেন না’ লেখা বোর্ড ঝোলানো হোক। কেউ ওখানে দাঁড়াতে গেলে তাঁদের সেতু থেকে নামিয়ে দেওয়া হোক ও সারা দিন নজর রাখা হোক। যাত্রী না থাকলে বাস-ট্যাক্সিও এখানে দাঁড়াবে না। রবীন্দ্র সেতুর মতো একটা ঐতিহ্যবাহী স্থানের গরিমা কিছু মানুষের সামান্য সুবিধার জন্য নষ্ট হতে দেওয়া যায় না।
ইন্দ্রনীল ঘোষ, লিলুয়া, হাওড়া
টিপছাপ
টালিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। সম্প্রতি লোকসভা ভোট দিতে গিয়ে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হল। ভোটকেন্দ্রে যাঁরা নাম যাচাই করেন, তাঁদের পাশেই আর এক জন থাকেন যিনি সংশ্লিষ্ট ভোটারকে দিয়ে খাতায় নাম সই করান, নয়তো টিপছাপ দেওয়ান। আমাদের ভোটকেন্দ্রে যিনি এই কাজে বহাল ছিলেন, তিনি অধিকাংশ মানুষকেই কালির বাক্সটি এগিয়ে দিচ্ছিলেন টিপছাপ দেওয়ার জন্য। অনেকেই নাম সইয়ের বদলে টিপছাপ দিয়ে দেন। আমার প্রশ্ন, তাঁর কি উচিত ছিল না প্রশ্ন করা যে, সংশ্লিষ্ট ভোটার সই করবেন না টিপ ছাপ দেবেন?
তপনিকা দাশ, কলকাতা-৩২