Book Fair

সম্পাদক সমীপেষু: অবহেলিত বইপ্রেমী

বিশেষ ভাবে সক্ষম পুস্তকপ্রেমী তথা পাঠকদের এই সব অসুবিধার কথা কি বইমেলা কর্তৃপক্ষ কখনও ভেবেছেন?

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:০১
Share:

—প্রতীকী ছবি।

‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় পাশে নেই বইমেলা কর্তৃপক্ষ’ (২৫-১) শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়ে খুবই খারাপ লাগল। কলকাতা আম্তর্জাতিক বইমেলার জনপ্রিয়তার বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। যে কারণে সকলেই এই মেলায় অন্তত এক বার ঘুরে আসতে উৎসুক থাকেন, তা তিনি বই কিনুন আর না কিনুন। যাঁরা প্রকৃত পুস্তকপ্রেমী অথচ বিশেষ ভাবে সক্ষম, তাঁদের কাছে প্রতিবন্ধকতাটা তত ক্ষণ কোনও বিষয় নয়, যত ক্ষণ না তাঁরা উপায় থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট সংস্থার উদাসীনতা কিংবা পরিকল্পনার অভাবজনিত কারণে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন। সেটাই এ বারের বইমেলায় গিয়ে আমি নিজেও প্রত্যক্ষ করেছি। বেশির ভাগ স্টলই মাটি থেকে এক ধাপ উঁচুতে, যেখান দিয়ে কোনও মতেই হুইল চেয়ার নিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। অথচ, অনায়াসেই এই সব স্টল ও প্যাভিলিয়নের প্রবেশপথ ও বেরোনোর পথের এক ধার দিয়ে র‌্যাম্প করা যেত। তা ছাড়া, মেলার শৌচাগারের ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। তাই সে সম্বন্ধে আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।

Advertisement

‘অর্গানাইজ়েশন ফর রেয়ার ডিজ়িজ়েস ইন্ডিয়া’ এবং ‘হুইলচেয়ার ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’ এ ব্যাপারে ‘পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড’-এর কাছে যে অভিযোগ করেছেন, তা যথার্থ। গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য এ বিষয়ে একটা অসার যুক্তি খাড়া করেছেন, ‘১৫০-২০০ বর্গ ফুট আয়তনের স্টলে র‌্যাম্প নেই। বড় সব স্টলে ও প্যাভিলিয়নে র‌্যাম্প আছে।...’ ‘বড় সব স্টল’ বলতে উনি যে স্টলগুলো (যেমন, আনন্দ, পত্রভারতী, দেব সাহিত্য কুটীর ইত্যাদি) বোঝাতে চেয়েছেন, সেগুলোতে রীতিমতো লাইন দিয়ে ঢুকতে হয়। ভিতরে এতটাই ভিড় হয় যে, সেখানে হুইল চেয়ার কেন, পাশাপাশি দাঁড়িয়েও বই কিনতে খুবই অসুবিধা হয়।

বিশেষ ভাবে সক্ষম পুস্তকপ্রেমী তথা পাঠকদের এই সব অসুবিধার কথা কি বইমেলা কর্তৃপক্ষ কখনও ভেবেছেন? ছোট কিংবা বড় সমস্ত স্টলের প্রবেশ ও বেরোনোর পথ কেন মাটির সঙ্গে সমতল হবে না (যা কিনা অনায়াসেই করা যায়), সে ব্যাপারে গিল্ডের কি মাথাব্যথা থাকা উচিত নয়? এ বারের বইমেলার উদ্বোধনের দিনে গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, “আমরা তো এখানে (বইমেলায়) ব্যবসা করতে এসেছি!”

Advertisement

ওঁরা অবশ্যই ব্যবসা করুন। কিন্তু পাশাপাশি এটাও মাথায় রাখুন যে, ওঁদের লাভের বেশ কিছুটা অংশ কিন্তু এই প্রতিবন্ধী পাঠকদের পকেট থেকেও আসে।

রমেন্দ্রনাথ নস্কর, জগদীশপুরহাট, হাওড়া

বাসের তথ্য

কলকাতা ও শহরতলিতে ডব্লিউবিটিসি, সিটিসি-র কতগুলো বাস চলে জানি না। ধর্মতলা, রাসবিহারী, চিংড়িঘাটা, নিউ টাউন, পার্ক স্ট্রিট-সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল জায়গায় বেসরকারি বাসের সঙ্গে অনেক সরকারি বাসও দেখি। কিন্তু তাদের বেশির ভাগেরই শুধু নম্বর লেখা থাকে, কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে বা যাত্রাপথের গুরুত্বপূর্ণ স্টপের নাম থাকে না। যার ফলে সাধারণ যাত্রীরা, যাঁদের মধ্যে অনেকে হয়তো সংশ্লিষ্ট রুটে নিয়মিত যাতায়াত করেন না, খুবই অসুবিধার সম্মুখীন হন। আর সরকারি বাসের কন্ডাক্টরেরা অধিকাংশ সময় বাসের ভিতরেই থাকেন, বেসরকারি বাসের কন্ডাক্টরদের মতো বাসের দরজা থেকে চিৎকার করে গন্তব্যস্থলের নাম নিয়ে যাত্রী ডাকেন না। ফলে অনেক যাত্রী সামনে বাস পেলেও উঠতে পারেন না। অথচ, সরকারি বাসের ভাড়া বেসরকারি বাসের তুলনায় অনেকটা কম।

বেসরকারি বাসের সামনে ও গায়ে যাত্রাপথের গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্টপের নাম লেখা থাকে, যেটা সাধারণ যাত্রীদের সুবিধার্থে খুব জরুরি। নিত্যযাত্রীদের পাশাপাশি অন্যান্য সাধারণ যাত্রীর অসুবিধার কথা ভেবে পরিবহণ দফতরের কাছে বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ রইল।

রাধারমণ গঙ্গোপাধ্যায়, বজবজ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

রাস্তা সারাই

আমতা-বালিচক রুটের দামোদর পূর্ব বাঁধের রাস্তার কাজ আর শেষ হচ্ছে না। বছর পাঁচেক আগে এই রাস্তায় দামোদর নদের দিকে গার্ডওয়াল-এর কাজ হয়েছে। এখন এই রাস্তার কাজ করতে গিয়ে রাস্তার বিভিন্ন অংশে পিচ উঠে গিয়ে কোথাও আবার মাটি ফেলে ভরাট করায় পথচারী-সহ যানবাহন চলাচলে খুবই সমস্যা হচ্ছে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। প্রসঙ্গত, বিশ্ব ব্যাঙ্কের অর্থে এই অংশে দশ কিলোমিটার রাস্তার চার পাশে বহু গ্রাম-সহ বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, নার্সিং ট্রেনিং কলেজ, গ্রামীণ জাদুঘর, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, লাইব্রেরি ও একাধিক ক্লাব রয়েছে। তা ছাড়া এই নদ থেকে ক্রমাগত বালি তুলে রাতের অন্ধকারে শয়ে শয়ে লরি রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের ফলে‌ রাস্তার হাল আরও বেহাল হয়েছে।

মাস ছয়েক আগে এই রাস্তা অতি দ্রুত সংস্কারের জন্য স্থানীয় আমতা সেচ দফতর, এলাকার বিধায়ক, সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক, আমতা-১ ও উলুবেড়িয়া মহকুমা শাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গণ স্বাক্ষরিত পত্র প্রদান করা হয়। একাধিক বার এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি-সহ রসপুর ও বালিচক ‌গ্রাম পঞ্চায়েতেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। অথচ, এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজে দেরির দরুন নিত্যদিন কয়েক হাজার মানুষকে যে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, তা থেকে নিষ্কৃতি কবে মিলবে? এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মুস্তাক আলি মণ্ডল, আমতা, হাওড়া

চড়া মাসুল

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা (ডব্লিউবিএসইডিসিএল) এবং ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন (সিইএসসি) সাধারণত তার অধীন গ্রাহকদের কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করে থাকে। যেমন, গৃহস্থ, বাণিজ্যিকক্ষেত্র এবং শিল্পক্ষেত্র। গ্রাহকের বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রকৃতি অনুসারে এই ভাগ করা হয়ে থাকে। প্রত্যেক ক্ষেত্রের জন্য বিদ্যুতের মূল্যের হারও পৃথক। গার্হস্থক্ষেত্রে সবচেয়ে কম আর শিল্পক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি।

সংস্থাগুলি দীর্ঘ দিন ধরেই এ রাজ্যের সরকারি এবং সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলিকে বাণিজ্যিকক্ষেত্রের গ্রাহক হিসাবে গণ্য করে। সরকারি এবং সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলি কোনও ভাবেই কোনও লাভজনক প্রতিষ্ঠান বা বাণিজ্যিকক্ষেত্র নয়। বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য ছাত্রছাত্রীদের থেকে নেওয়া সরকার দ্বারা নির্ধারিত সামান্য ফি এবং সরকার থেকে প্রাপ্ত আনুষঙ্গিক খরচের টাকা একমাত্র সম্বল। বাণিজ্যিকক্ষেত্র ভুক্ত হওয়ার জন্য বিদ্যালয়গুলি চড়া হারে বিদ্যুৎ বিল মেটাতে বাধ্য হয়। খরচের ভারে ন্যুব্জ বিদ্যালয়গুলির জন্য যা কষ্টদায়ক। বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি যদি বিদ্যালয়গুলিকে বাণিজ্যিকক্ষেত্রের থেকে অন্য কোনও কম মূল্যের শ্রেণিভুক্ত করার কথা বিবেচনা করে, তা হলে তা বিদ্যালয় শিক্ষার পরিকাঠামো তথা সামগ্রিক মান উন্নয়নের সহায়ক হবে।

শুভজিৎ সাহা, মেদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা

প্লাস্টিক অব্যাহত

২০২২-এর ১ জুলাই থেকে ৭৫ মাইক্রনের কম প্লাস্টিক বর্জনের কথা ঘোষিত হলেও, এ রাজ্যে তা বন্ধ করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের সদর্থক ভূমিকা তেমন দেখা যায়নি। ঝাড়খণ্ডের ঘাটশিলায় বেড়াতে গিয়েও দেখেছি সেখানে জনপ্রিয় ডিমনা হ্রদ এবং জঙ্গল সংলগ্ন অঞ্চলে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ, বোতল এবং অন্যান্য খাবারের প্যাকেট-সহ নানা আবর্জনা পড়ে ছিল। ঘাটশিলায় বাঙালি পর্যটকের সংখ্যাই বেশি। এত প্রচার, আইনি বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও আমরা আর কবে সচেতন হব?

মানস কুমার সেনগুপ্ত, কলকাতা-৭৪

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement