এ বার গ্যাস বুকিং নিয়ে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হল। অন্যান্য বারের মতো এ বারও একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে আমাদের বসিরহাটের বাড়ির গ্যাস বুক করলাম ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যাবেলা, ৬৭৯ টাকা দিয়ে। ওই একই দিনে একটু পরে আমার ননদের বিরাটির বাড়ির গ্যাসটিও বুক করলাম ৬৭০ টাকা দিয়ে। পর দিন সকালে ফোনে এসএমএস এল যে, আমার গ্যাসের ৬৭৯ টাকার ভাউচারটি জেনারেট হয়েছে, যেখানে বিশেষ চার অঙ্কের নম্বরটাও ছিল। যা-ই হোক, সে দিন আর গ্যাস ডেলিভারি হল না। তার পর দিনও গ্যাস এল না। ১৫ তারিখ সকালে ফোনে হঠাৎই আর একটি এসএমএস, যেখানে দেখা যাচ্ছে ৭২৯ টাকার আর একটি ভাউচার জেনারেট হয়েছে এবং যেখানে সম্পূর্ণ নতুন আর একটি চার অঙ্কের গোপন সংখ্যা দেওয়া আছে।
ব্যাপারটি বুঝে ওঠার আগেই দুপুরের একটু আগে ডেলিভারি বয় গ্যাস নিয়ে হাজির। তিনি যে ভাউচার আমাকে দিলেন, সেটি ৭২৯ টাকারই এবং সেখানে ‘নেট পেয়েব্ল অ্যামাউন্ট’ ৫০ টাকা, যেটি আমাকে ডেলিভারি বয়কে দিতে হল। আমি ৭২৯ টাকার ভাউচারের এসএমএস-এর গোপন চারটি সংখ্যাই তাঁকে দিলাম। ডেলিভারি বয়কে সম্পূর্ণ বিষয়টি জানাতে তিনি বললেন যে, গ্যাসের দাম হঠাৎই বেড়ে যাওয়ার কারণে আগের ভাউচারটি বাতিল হয়েছে। ভর্তুকির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে বললেন, নিয়মমতোই ভর্তুকি অ্যাকাউন্টে ঢুকবে। অর্থাৎ, আমার গ্যাসের দাম ৭২৯ টাকাই পড়ল।
কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, গত ১৯ ডিসেম্বর আমার অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি বাবদ ২৩ টাকা ৪০ পয়সা ঢুকেছে। যে ভর্তুকির পরিমাণ, গত অক্টোবরের শেষে ৬২৯ টাকা দিয়ে গ্যাস বুক করে পাওয়া গিয়েছিল, ঠিক সেই পরিমাণই। অথচ, বিরাটিনিবাসী আমার সেই ননদের গ্যাস বুকিং-এর পর দিনই ডেলিভারি বয় এসে তাঁর বাড়িতে দিয়ে গিয়েছেন এবং ৬৭০ টাকা ৫০ পয়সাতেই। এই চিঠি লেখা পর্যন্ত তাঁর ভর্তুকি অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। গ্যাসের দাম বাড়তেই পারে, কিন্তু আমার পরে বুক করেও আমার ননদের গ্যাস ৫০ টাকা কমে তাঁর বাড়িতে এসেছে। ভর্তুকির বিষয়টিও আমার বোধগম্য হয়নি।
সুশীলা মালাকার সর্দার., বসিরহাট, উত্তর ২৪ পরগনা
ভর্তুকিহীন?
রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের ভর্তুকি ওঠার জল্পনাটা আগে থেকেই ছিল। এ বার তা আরও প্রকট হল। চলতি ডিসেম্বর মাসে মাত্র বারো দিনের ব্যবধানে দুই দফায় গার্হস্থ ব্যবহারের ১৪.২ কিলো রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম মোট একশো টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ, ভর্তুকির অঙ্ক কানাকড়িও বাড়েনি। বরং গত তিন মাস যা ছিল, সেখানেই স্থির হয়ে রয়েছে। অর্থাৎ, ১৯ টাকা ৫৭ পয়সাই বহাল আছে। ফলে বর্ধিত দরে সিলিন্ডার কেনার পর নামমাত্র ভর্তুকি জুটছে গ্রাহকদের। বলা বাহুল্য, করোনা আবহে এক দিকে আর্থিক মন্দা আর অন্য দিকে অপ্রত্যাশিত ভাবে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল আমজনতা।
গত কয়েক বছর ধরেই ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দাম ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ভর্তুকির পরিমাণ সুকৌশলে কমানো হচ্ছে। চলতি বছরের অগস্ট থেকে ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দাম ও ভর্তুকির অঙ্ক ঘোষণা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সাধারণত জিএসটি বাদে ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের দামের চেয়ে ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দামের পার্থক্যটাই এত দিন প্রকাশ করা হত। বর্তমানে ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দাম ঘোষণা না করায় স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রীয় সরকার এলপিজি সিলিন্ডারের ভর্তুকি তুলে দেওয়ার পথে হাঁটছে কি না, সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে গ্রাহকদের মধ্যে।
সুদীপ সোম, হাবড়া, উত্তর ২৪ পরগনা
ধান ক্রয় কেন্দ্র
কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কিনে অনলাইনে অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর (আরটিজিএস পদ্ধতি) বদলে ধান বিক্রির টাকা হাতে-হাতে চেকের মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। নভেম্বর মাস থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কেন্দ্রীয় ধান সংগ্রহ কেন্দ্রে (রাইস মিল) সহায়ক মূল্যে ধান কিনছে সরকার। চাষিদের কথা মাথায় রেখে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ধানের সহায়ক মূল্য ১৭৫০ টাকা। আবার চাষিরা নিজে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে ফসল বিক্রি করলে কুইন্টাল পিছু আরও ২০ টাকা ভাতা রয়েছে।
কিন্তু, ধান ক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। পূর্ব বর্ধমান জেলার ২১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত আছে। কিন্তু সব ক’টি পঞ্চায়েত এলাকায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কেন্দ্র নেই। যেমন, আমাদের খণ্ডঘোষ ব্লকে লোদনা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে কোনও ধান কেনার কেন্দ্র নেই। ফলে চাষিদের বাড়ি থেকে দূরে ধান ক্রয়কেন্দ্রে যেতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি, বর্গাদার, পাট্টাদারদের কম দামে ধান বেচতে হচ্ছে এলাকার নিকটবর্তী ফড়েদের হাতে। শুধু তা-ই নয়, বেশির ভাগ ধান সংগ্রহ কেন্দ্রে ধান বিক্রির সুযোগ নিচ্ছেন জেলার বড় চাষিরা।
ধান বিক্রয় কেন্দ্র থেকে টাকা পেতে অনেক বেশি সময় লাগছে। জমির কাগজপত্র ছাড়াও আধার কার্ড, ছবি, ব্যাঙ্ক ডিটেলস নিয়ে যিনি ধান বিক্রি করতে কেন্দ্রে যাচ্ছেন, তিনি আদৌ চাষি না ফড়ে, সেটা যাচাই করার সুযোগ থাকছে না। প্রকৃত চাষিরা অনেক সময় বঞ্চিত হচ্ছেন। অগ্রিম রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দীর্ঘ দিন ধান বিক্রির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে চাষিদের। ফলে চাষিরা প্রয়োজন অনুসারে ধান বিক্রি করতে পারছেন না। চাষিরা যাতে সহজে বাড়ির নিকট সমবায় সমিতি বা কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারেন, তার জন্য অনুরোধ করছি।
সুকমল দালাল, খণ্ডঘোষ, পূর্ব বর্ধমান
অন্য নিয়ম?
আমার ব্যক্তিগত ব্যবহারের সিডান গাড়ির পাঁচ বছরের রোডট্যাক্স প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা। চলতি বছরের মে মাসে এর মেয়াদ শেষ হয়। করোনা-লকডাউন আবহে তখন থেকে আরটিও অফিসগুলিও ছিল অনিয়মিত এবং বন্ধ। সে সময় সরকারি ‘এমপরিবহণ’ অ্যাপে একটি নোটিস পেয়ে আশ্বস্ত হই, যার মূল বক্তব্য—১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০-র মধ্যে যে সব নথিপত্রের মেয়াদকাল শেষ হয়েছে, কিন্তু লকডাউনের কারণে মোটর ভেহিকেলস আইন ও বিধির অধীনে মেয়াদবৃদ্ধি সম্ভব হয়নি, সেই সমস্ত নথিপত্রকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ অবধি বৈধ গণ্য করা হবে।
অথচ, এই ডিসেম্বরের মাঝামাঝি আরটিও অফিসে রোডট্যাক্স জমা করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ! নথিপত্রের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার জন্য জরিমানা ধরা হয়েছে আট হাজার টাকার মতো। কারণ জিজ্ঞেস করলে ধমক ছাড়া কিছুই জুটল না। জরিমানা দিতেই হল। ‘এমপরিবহণ’-এ জারি করা বিজ্ঞপ্তি তবে কাদের জন্য? রাজ্যের আরটিও থেকে এই কেন্দ্রীয় সরকারি নির্দেশটি যে গ্রাহ্য করা হচ্ছে না, তা কোনও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়নি!
দীপঙ্কর মিত্র, কলকাতা-১৪৮
বাঘা যতীন
স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের আবক্ষ মূর্তি রয়েছে তাঁর জন্মস্থান, অধুনা বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কয়া গ্রামে। দুষ্কৃতীরা সেই মূর্তির ক্ষতি করেছে। ভারত এবং বাংলাদেশের শ্রদ্ধেয় যতীন্দ্রনাথ স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। কারও প্রদর্শিত পথ, ভাবনা, বিশ্বাস অন্যের পছন্দ না-ই হতে পারে। কিন্তু সেই কারণে তাঁর মূর্তির ক্ষতি করা গর্হিত কাজ। বাংলাদেশ সরকার এই বর্বরোচিত কাণ্ডের জন্য দুষ্কৃতীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে, এই আশা করছি।
দিলীপ কুমার চন্দ্র, গড়বেতা, পশ্চিম মেদিনীপুর