বরাহনগর ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে গত আট বছরে প্রায় পঞ্চাশটা মতো অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে ধরলে সংখ্যাটা একশোর কাছাকাছি। কিন্তু এর অধিকাংশেরই কমপ্লিশন সার্টিফিকেট এখনও ক্রেতাদের কাছে পৌঁছয়নি! ফলে, মিউটেশনও করা সম্ভবপর হয়নি। মেট্রো রেলের সম্প্রসারণ হবে বলে বছর দুই আগে থেকেই বরাহনগরে জমি ও ফ্ল্যাটের চাহিদা প্রায় গগনস্পর্শী। এর জন্যই কোনও রকম বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই কাটমানির বিনিময়ে বরাহনগর পুরসভা দেদার বিলিয়েছে প্রোমোটিং-এর স্বত্ব। কোথাও দখল করা জমিতে প্রোমোটিং হয়েছে, তো কোথাও অসম্পূর্ণ অ্যাপার্টমেন্টের পরিকল্পনা অনুমোদিত হওয়ার আগেই অনুমোদন করে দেওয়া হয়েছে সেই একই জমির রিভাইজ়ড প্ল্যান! এতে অসহায় ক্রেতারা না পারছেন ফ্ল্যাট বিক্রি করতে, না ফ্ল্যাট সমবায় সমিতি পারছে কোনও সংস্কারের কাজ করতে। অসম্পূর্ণ ফ্ল্যাট হস্তান্তর, চার বছর পরের অ্যাপার্টমেন্টের সামনে কাঁচা রাস্তা, ভয়াবহ নিকাশি ব্যবস্থা, চরম জলকষ্টের জাঁতাকলে পড়ে ফ্ল্যাট গ্রাহকদের প্রাণ আজ ওষ্ঠাগত। কিছু বলতে গেলে প্রোমোটাররা হয় মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন, নয়তো চিনতেই অস্বীকার করছেন! সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত কলকাতা-৩৬
শিক্ষার বিরোধী
শিক্ষার অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী, বিদ্যালয়ে ১০০০ ঘণ্টা টিচিং-লার্নিং’এর উল্লেখ থাকলেও, তা অনেক শিক্ষক মানছেন না। তাঁরা জেনেশুনে বিদ্যালয়ের নির্ধারিত সময়ে রমরমিয়ে টিউশনি করছেন এবং ছাত্রদের আসতে বাধ্য করছেন। অনেক গৃহশিক্ষকও ঠিক একই ভাবে বিদ্যালয়ের নির্ধারিত সময়ে ছাত্র পড়াচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, বিদ্যালয়ে পড়াশোনা হয় না— এই ধরনের নেতিবাচক কথাবার্তা বলে তাঁরা অভিভাবকদেরও নানা ভাবে প্রভাবিত করছেন। ফলে, বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতির সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। পরিণামে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গোটা শিক্ষাব্যবস্থা। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের দৈনন্দিন পাঠ প্রস্তুতি এবং তাদের মূল্যায়নে থেকে যাচ্ছে বিরাট ফাঁক। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়মিত যোগাযোগ না থাকায়, তারা কতটা শিখল কিংবা আদৌ শিখল কি না, তা সঠিক ভাবে বিচার করা যাচ্ছে না। ফলে তাদের মানসিক, দৈহিক এবং বৌদ্ধিক বিকাশ হচ্ছে না। পঠনপাঠনের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সম্পর্কের সঙ্গে জড়িত উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। তার ফলে ইচ্ছা থাকলেও শিক্ষকরা সেই সব ছাত্রছাত্রীকে সুস্থ, সুন্দর, সংস্কৃতিমনস্ক ভবিষ্যতের সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে পারছেন না।
ইতিমধ্যে শিক্ষার অধিকার আইন ২০০৯-কে সঠিক ভাবে রূপায়ণ তথা ১০০০ ঘণ্টা টিচিং-লার্নিং বিষয়টিকে সুচারু ভাবে বাস্তবায়িত করতে বিদ্যালয়ের নির্ধারিত সময়ে গৃহশিক্ষকতা করার বিরুদ্ধে প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে। এমতাবস্থায়, যাঁরা শিক্ষাব্যবস্থাকে তিলে তিলে ধ্বংস করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যথার্থ আইনানুগ ব্যবস্থা এবং কড়া পদক্ষেপ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আর্জি জানাই।
বিশ্বরূপ দাসশ্রীপল্লি, পূর্ব বর্ধমান
রেশনে অপচয়
‘ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিলে ৩৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয়’ (২৬-৬) শীর্ষক যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে আমাদের রাজ্যে এ-যাবৎ প্রায় দু’কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে। আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযোগের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, এই ভুয়ো কার্ড বাতিলের ফলে বছরে সরকারের ৩৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। এখন সরকারের টাকা সাশ্রয় হওয়ার অর্থ এর আগে সরকারের ঘর থেকেই সেই টাকা খরচ হয়েছিল। এখন প্রশ্ন হল, সেই টাকার উপভোক্তা কারা ছিলেন? অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও এই মানুষরা কী ভাবে সরকারি সুবিধা পেলেন? বলা বাহুল্য, ভুয়ো কার্ডগুলো রেশন অফিসের মাধ্যমেই বৈধ কার্ড হিসাবে ভুয়ো ভোক্তাদের কাছে পৌঁছেছিল। না হলে ওই সব কার্ডে চাল-গম এফসিআই থেকে মঞ্জুরই হত না। এই কুকীর্তি তো এক বছর ধরে চলেনি, বিগত কয়েক বছর ধরেই চলেছে। বছরে গড়ে ৩০০০ কোটি টাকা ধরলে, পাঁচ বছরে এই টাকার অঙ্কটা গিয়ে দাঁড়ায় ১৫০০০ কোটিতে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারের ঘর থেকে বেরিয়ে গেল, অথচ তার তদন্ত হল না কেন? বর্তমানে বহু দুর্নীতিই সামনে এসেছে, ইডি, সিবিআই-এর তদন্ত চলছে। তাই কি আর এই দুর্নীতিকে গুরুত্ব দেওয়া হল না? না কি এই অর্থ দিনের পর দিন যে ভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে, তা ধরা সম্ভব নয়? না কি ওই টাকা যে-হেতু রাজ্যেই খরচ হয়েছে, তাই রাজ্যেরই এক শ্রেণির মানুষের হাতে টাকাটা গিয়েছে?
এমনিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আধার সংযোগের নির্দেশ রাজ্যের কার্যকর করার কোনও সদিচ্ছা ছিল না। দীর্ঘ দু’বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষার পর শীর্ষ আদালতের নির্দেশে তা কার্যকর করা হয়। এই টালবাহানার কারণ কি এই যে, কেন্দ্রের ভর্তুকি বেশি, রাজ্যের ভর্তুকি সামান্য? তা ছাড়া, খাদ্যসাথী প্রকল্পে পরিবারের বার্ষিক আয়ের সীমা দেড় লক্ষ টাকা রাখা হলেও বহু উচ্চ আয়ের পরিবারও এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করেন। অনেকে রেশন দোকানে বা বাইরে স্বল্প মূল্যে রেশনের চাল-গম বিক্রিও করেন। এই অপচয় বন্ধের কথা ভাবা দরকার।
অসিত কুমার রায়ভদ্রেশ্বর, হুগলি
বেহাল রাস্তা
ইংরেজ আমলে ১৯০৫ সালে নদিয়া জেলার মুড়াগাছা স্টেশন তৈরি হয়েছিল। স্টেশন থেকে নেমে প্রায় আধ কিলোমিটার রাস্তা, যেটা আমরা রেলের জমি বলেই জানি, কংক্রিট দিয়ে বাঁধানো ছিল। তবে সবটা নয়, শুধু দু’পাশ বাঁধানো ছিল। আর, মধ্যিখানে ছিল মাটির রাস্তা। এটা করা হয়েছিল মূলত সে আমলের প্রধান যানবাহন যেমন গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি ইত্যাদি যাতায়াতের জন্য। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শতবর্ষ প্রাচীন রাস্তার এখন স্মৃতিটুকু পড়ে আছে। একটু দূরে পিডব্লিউডি-র চকচকে রাস্তা গিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র-রাজ্যর জাঁতাকলে পড়ে এই রাস্তার ভাগের মা’র অবস্থা। শুধু এক বার পিডব্লিউডি ওই রাস্তার কংক্রিটের মধ্যের মাটির জায়গাটা ভরাট করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ক’দিনেই তা উঠে গিয়েছে। ফলে এখানকার নিত্য রেলযাত্রীদের যাতায়াতের পথে টোটোয় চড়ে এই রাস্তায় ‘রোলার-কোস্টার’ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয়। এই রাস্তা কি কোনও দিন সারানো হবে না?
রঞ্জু মুখোপাধ্যায়মুড়াগাছা, নদিয়া
খারাপ পরিষেবা
আমার গলায় ক্যানসারের জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে আটাশ দিনের রেডিয়েশন থেরাপি মে মাসের শেষের দিক থেকে শুরু হয়। আমার সময় ছিল সকাল সাড়ে ন’টা থেকে সাড়ে দশটা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের এক নম্বর বলে দাবি করলেও এঁদের পরিষেবা অত্যন্ত খারাপ। অনেক পুরনো নোভালিস টিএক্স মেশিন, কোনও দিনই সকালে সময়মতো চালু হয় না। রোগীরা দূরদূরান্ত থেকে এসে পরিষেবা পাওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। মাঝে মাঝে মেশিন খারাপ বলে তাঁদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। কনসোল রুমের সকালের ইন-চার্জেরও ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। রোগীরা হাসপাতালে যান সঠিক চিকিৎসার জন্য। সেখানে তাঁদের যাতে এই রকম হয়রান না হতে হয়, তা সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই নিশ্চিত করতে হবে।
জয়দেব হালদারশ্রীরামপুর, হুগলি