প্রতীকী ছবি।
চিঠি এক) সাতক্ষীরায় আটকে আছি, খুব অসহায় লাগছে
আমি উত্তর ২৪ পরগনার একজন বাসিন্দা। মার্চ মাসে বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছিলাম । রাজ্যে লকডাউনের খবর শুনেই ঢাকা থেকে তড়িঘড়ি সাতক্ষীরায় ফিরে ২৩ তারিখে বেলা ৩ টায় ঘোজাডাঙ্গা বর্ডার দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করি। কিন্তু ভারতীয় ইমিগ্রেশন ঢুকতে বাধা দেয়। যদিও বাংলাদেশের ডিপারচার স্ট্যাম্প পড়ে গিয়েছিল। অগত্যা বাংলাদেশে ফিরে সাতক্ষীরায় এক পরিচিতের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। ইতিমধ্যে টাকা পয়সাও সব শেষ । এখানেও লকডাউন চলায় ঢাকার বন্ধু চাইলেও সেখানেও ফিরতে পারছি না। অপর দিকে পরিবারও আমার উপর নির্ভরশীল, তাদেরকে নিয়ে আমি দুশ্চিন্তায় রয়েছি। খুব অসহায় লাগছে নিজেকে। সরকার আমাদের দ্রুত দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।
ইয়াসিন বিশ্বাস
মোবাইল-০০৮৮০১৭৪১৯২৮৫৪৭
ইমেল- yeasin.india@gmail.com
চিঠি দুই) চিকিত্সা করাতে এসে ভেলোরে আটকে আছি, ফেরানোর ব্যবস্থা করুন
ভেলোরে চিকিৎসা করতে আসা ভিন্ রাজ্যের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা লকডাউনের কারনে আটকে আছি। বাড়িতে যেতে পারছি না, কিন্তু গেস্ট হাউসে প্রতি দিন ভাড়া গুনতে হচ্ছে। সকলেরই ডাক্তার দেখানো শেষ। এমনকি CMC তে করোনার কারণে চিকিৎসা প্রায় বন্ধ বললেই চলে। OT হচ্ছে না এখন আর। পশ্চিমবঙ্গের আনুমানিক ২৫০০ জন এখানে আছি। বাজার প্রায় বন্ধ, যার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। আলু-৫০ টাকা, চাল-৬০ টাকা , এক ড্রাম জল-৫০ টাকা, তাও পাওয়া কষ্টসাধ্য। লকডাউন কবে উঠবে এ নিয়েও মানুষের মনে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। আমাদের সকলের হাতে টাকা প্রায় নেই বলেই চলে। আমাদের এখান থেকে নেওয়ার ব্যবস্থা কবে করবেন। আমাদের পশ্চিমবঙ্গের সরকারকে আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই আমাদের পরিস্থিতির কথা। দয়া করে আমাদের কথা একটু ভাবুন।।
তন্ময় বিশ্বাস, ভেলোর
চিঠি তিন) উত্তরাখণ্ডে আটকে আছি, সঙ্গে বয়স্ক ব্যক্তি আছেন
গত ২৪ মার্চ থেকে আমরা ৭ জন কলকাতার বাসিন্দা উত্তরাখণ্ডে আটকে আছি লকডাউনের কারণে। আমরা যখানে রয়েছি তার ঠিকানা হল— সাধু হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, এনএইচ-৭৩৪, ৪কেএম জসপুর-কাশীপুর রোড, উধম সিং নগর। আমাদের সাত জনের মধ্যে ৬ জন সিনিয়র সিটিজেন। দেহরাদুন থেকে দিল্লি হয়ে কলকাতা যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিট বুক করা ছিল ২৪ মার্চের। কিন্তু বিমান চলাচল বাতিল হওয়ায় উপরোক্ত ঠিকানায় আটকে রয়েছি। হরিদ্বার থেকে ১৩০ কিমি দূরে আমরা রয়েছি। আমাদের সম্বলটুকুও শেষ হতে চলেছে। আমরা মানসিক ও শারীরিক ভাবে বিধ্বস্ত। দয়া করে আমাদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করুন।
যে সাত জন আটকে আছেন তাঁরা হলেন— এ চক্রবর্তী(৬৫), কে চক্রবর্তী(৬৫), ইউ চক্রবর্তী(৬৬), আই চক্রবর্তী(৬০), একে পোদ্দার(৬৬), এস কে রায়(৫৪)।
অনুপ পোদ্দার
ফোন নং-৯১৬৩২৮৯১৭৫
anuppodder@hotmail.com
চিঠি চার) নয়ডায় আটকে পড়েছি, স্ত্রী জন্ডিসে আক্রান্ত, বাড়ি ফিরতে চাই
আমি মানস চন্দ , বিরাটি , উ: ২৪ পরগনার বাসিন্দা। ব্যবসার কাজে নয়ডা এসেছিলাম , কিন্তু লকডাউনের কারনে আটকে পড়েছি । আমার সঙ্গে আমার স্ত্রী আছে, কিন্তু এখানে এসে আমার স্ত্রী জন্ডিসে আক্রান্ত হয়। ওকে জন্ডিসের উপযুক্ত ফল, খাবার দিতে পারছি না , এ দিকে টাকা ফুরিয়ে আসছে । মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছি। আমাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।
মানস চন্দ
ফোন-৮৯১০০৬৩২৩৭
চিঠি পাঁচ) ২৭ জনের পর্যটক দল উত্তরাখণ্ডে আটকে রয়েছি, উদ্ধার করুন
আমি এই ইমেলটি লিখছি আমাদের ২৭ জন পর্যটক দলের পক্ষ থেকে (২৩ জন আসানসোল এবং ৪ জন হাওড়া শিবপুরের) যাঁরা গত এক মাসের বেশি সময় ধরে উত্তরাখণ্ডের একটি ছোট পাহাড়ি জনপদ চৌকোরির একটি হোটেলে আটক হয়ে আছি।
আমাদের এই দলের বেশির ভাগ মানুষ বয়স্ক এবং একটি পাঁচ বছরের শিশুও আছে। চার জন এর মধ্যে হার্টের রোগী এবং আরও অনেকের রেগুলার ব্লাড প্রেসার ইত্যাদির ওষুধ চলে। পর্যাপ্ত খাবার ও যত্নের অভাবে শিশুটিও দুর্বল হয়ে পড়েছে। যদিও সেই ২১ মার্চ থেকে আমরা এই হোটেলের (সদ্ভাবনা রিসর্ট) ভিতরেই রয়েছি এবং কারও শরীরে কোনও সংক্রামক ব্যাধির লক্ষণ নেই। কিন্তু এই জায়গাটিতে কোনও বড় দোকানপাট, বিশেষ সুবিধাযুক্ত হাসপাতাল, নার্সিং হোম বা ডাক্তার নেই। নিকটবর্তী হাসপাতাল পাহাড়ি রাস্তায় প্রায় ৮০কিমি দূরে। যদিও বা আমরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে মাঝে মাঝে অল্প কিছু রেশন সামগ্রী পাচ্ছি, তবুও দিন দিন আমাদের শরীর ও মনোবল উভয়ই ভেঙে পড়ছে।
এই এক মাসে আমরা শারীরিক ও আর্থিক উভয় ভাবেই বিপর্যস্ত। আর কত দিন সুস্থ ভাবে আমরা থাকতে পারব তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান। এমতাবস্থায় দয়া করে আমাদের উদ্ধার করার যদি কোনও উপায় বার করা হয় বাধিত হব।আমরা লিখিত ভাবে কথা দিতে রাজি যে বাড়ি ফেরার পর আমরা ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনে থাকব। দয়া করে আমাদের কথা একটু সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে দেখবেন।
পর্ণিনী চট্টোপাধ্যায়
ফোন-৯৫৫৭০৮৯৪৪৩/৯৪৩৩০৮৫৯২২
চিঠি ছয়) বাড়িতে বাবা অসুস্থ, গ্রামে ফিরতে চাই
আমার বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর কুমারগঞ্জ থানার বিশ্বনাথপুর গ্রামে। আমি দীর্ঘদিন ধরে কলকাতায় একটা ব্যবসার কাজে নিযুক্ত। আমার বাবা হঠাৎ করে চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে। দেখতে পাচ্ছে না। বাবাকে ডাক্তার দেখানোর মতো কেউ নেই বাড়িতে। গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার ব্যবস্থা করলে খুব উপকৃত হব। আমার নিজস্ব বাইক আছে, কিন্তু কোনও থানা আমাকে পারমিশন দিচ্ছে না বাড়ি যাওয়ার জন্য। আমার বাড়ি যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা হলে দয়া করে জানাবেন।
সিদ্দিক মণ্ডল
ফোন-৯৮৩০৩৮১৩৭৬
চিঠি সাত) হরিয়ানায় কর্মরত, অসুস্থ, বাড়ি ফিরতে চাই
আমার বাড়ি আসানসোলে। কর্মসূত্রে আমি হরিয়ানার ফরিদাবাদে আছি। সেখানে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে অধ্যাপনার কাজ করি। আমার কিছু শারীরিক সমস্যা হওয়ায় ৪ এপ্রিল অধ্যক্ষ জানিয়ে দেন কলেজে আসতে হবে না। এবং ক্যাম্পাস ছাড়ার কথাও বলেন তিনি। পরিবার থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন আমি। ঠিকমতো খেতে পাচ্ছি না। শরীর ক্রমশ অবসন্ন হয়ে পড়ছে। ঘরে বন্দি হয়ে রয়েছি। যাওয়ার কোনও উপায় নেই। দয়া করে আমাকে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।
সঞ্জয় দত্ত
চিঠি আট) আমাদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করুন, খুব কষ্টে আছি
আমরা বতর্মানে অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জংশন থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে আছি । থানা, গুন্টুর ওল্ড পুলিশ স্টেশন, নতুন মসজিদ, লাম। আমরা সাত জন আছি। আমরা সবাই কংক্রিট সলিসন এবং স্ট্যাম্পিংয়ের কাজ করতে এসে এই লকডাউনের জন্য আটকে গিয়েছি। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে টাকা নেই, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। এখন আমাদের যে অবস্থা করোনাভাইরাস তো দূরের কথা, খাবারের অভাবে মরে যাব । বাড়িতে বাবা, বৌ, ছেলে ,মেয়ে সকলেই চিন্তা করছে, কান্নাকাটি করছে। তারাও বাড়িতে না খেয়ে দিন কাটাছে । রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, যে ভাবেই হোক আমাদের বাড়িতে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করুন।
(১) সওকাত সেখ (বাবা-মহাসেন সেখ)
(২) হাসিম সেখ (বাবা-রাসেদ সেখ)
(এই দুই জনের ঠিকানা-জেলা- মালদা, থানা- ওল্ড মালদা, গ্রাম-সুরযা পুর)
(১) মুস্তফা সেখ ( বাবা-কবুল সেখ)
(২) সারুয়ার মন্ডল (বাবা- ইয়ার মহাম্মদ)
(৩) টুটুন সেখ (বাবা-মতিয়ার রহমান)
(৪) সাবিরুল সেখ (বাবা-মহাসেন সেখ)
(৫) আসগার সেখ(বাবা-হজরত সেখ)
(এই ৫ জনের ঠিকানা-জেলা-মুর্শিদাবাদ, থানা-রানিতলা, গ্রাম-বাড়িয়ানগর)
সাবিরুল সেখ
sabirulsaikh681@gmail.com
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)