প্রতীকী ছবি।
১০ ডাউনিং স্ট্রিটের কালো দরজার পিছনে রাজনীতি চলছে, না কি শেক্সপিয়রের নাটক— বোঝা দায়। গদি বাঁচাতে লড়ছেন প্রধানমন্ত্রী, কুচক্রীরা কোপ বসানোর অপেক্ষা করছে। জনসন তাঁর ক্যাবিনেটকে বলেছেন, তাঁকে হটাতে জার্মান ট্যাঙ্কার ডাকতে হবে।
তাঁর সমর্থকরা ঋষি সুনককে চোখে চোখে রাখছেন। ঋষির প্রধানমন্ত্রিত্বের উচ্চাকাঙ্ক্ষা অজানা নয়। কিয়ের স্টারমারকে নিয়ে জনসনের অবমাননাকর মন্তব্য ঋষি সমর্থন করেননি, তার জন্য অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার পরামর্শ দিয়েছে বরিস-শিবির। ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকদের দাবি, লকডাউনে বরিস ও তাঁর স্ত্রীর পার্টি করার ফাঁস হওয়া ছবিটি পাশের বাড়িতে ঋষির অফিস থেকেই তোলা হয়! জনসনের বিশ্বস্ত সহযোগী এবং রাজনৈতিক উপদেষ্টা মুনিরা মির্জ়ার পদত্যাগকে ঋষি-শিবিরের চক্রান্ত মনে করা হচ্ছে। মুনিরার পদত্যাগের খবরটি দ্য স্পেক্টেটর-এ প্রথম প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটির সম্পাদক ঋষির বন্ধু, ঋষি তাঁর বিয়েতে ‘বেস্ট ম্যান’ হয়েছিলেন। সম্পাদকের স্ত্রী ছিলেন জনসনের প্রেস মুখপাত্র। সুরাপার্টি প্রসঙ্গে তাঁর হেসে ফেলার ভিডিয়ো ফাঁস হয়ে গেলে তাঁকে ইস্তফা দিতে হয়। পার্টি তিনি আয়োজন করেননি বা পার্টিতে যানওনি, অথচ তার জন্যই চাকরিটি খোয়ালেন। এতে অনেকেই কুপিত হয়েছিলেন। জটিল সব আবর্ত ঘুরছে। সকলেই জট পাকাচ্ছেন, নিজেদের মত চাপাচ্ছেন, যত দিন এগোচ্ছে আবহাওয়া তত থমথমে হচ্ছে। ঋষি বরিস জনসনকে গদিচ্যুত করতে পারেন কি না, এখন সেটাই দেখার।
হ্যারি এ বার পার করো
জনসনের নতুন যোগাযোগ প্রধান গুটো হ্যারি। তিনি প্রাক্তন সাংবাদিক, জনসনের অক্সফোর্ডের বন্ধু, আগে এক সঙ্গে কাজ করেছেন। গত কয়েক মাসে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করলেও, এখন তাঁর ভাবমূর্তি উদ্ধারে লেগেছেন। এক সাক্ষাৎকারপ্রার্থীকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ‘পুরোপুরি ভাঁড়’ নন। অনিবার্য প্রতিপ্রশ্ন, তবে কি তিনি কিছুটা ভাঁড়? হ্যারি জানিয়েছেন, কাজে যোগ দিয়ে জনসনকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘বরিস, রক্ষা পাবে?’ তাতে জনসন তাঁকে পপতারকা গ্লোরিয়া গেনরের বিখ্যাত গান গেয়ে শুনিয়েছেন, ‘আই উইল সারভাইভ’।
যত দোষ...
জনসনের স্ত্রী ক্যারি সাইমন্ডসকে নিয়ে মার্চে একটি বই প্রকাশিত হবে। তাতে লেখক লর্ড মাইকেল অ্যাশক্রফট জনসনকে চালনা করার জন্য এবং তাঁর বেশ কিছু ভুল সিদ্ধান্তের জন্য ক্যারিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। জনসন যখন বিদেশসচিব এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহিত, তখন থেকেই ক্যারি তাঁর সঙ্গে মিশছেন। জনসন প্রধানমন্ত্রী হলে, মূল পদগুলিতে ক্যারি নিজের বন্ধুদের বসাতে চেয়েছিলেন। ডাউনিং স্ট্রিট সাজাতে গিয়ে জনসনকে ‘ওয়ালপেপারগেট’-এর গাড্ডায় ফেলেছেন। আফগান দাতব্য সংস্থা থেকে পশুপ্রাণী ও কর্মীদের সরাতে তিনিই নাকি জনসনকে প্ররোচিত করেন। নারী ও শিশুদের কাবুলে ফেলে কুকুর-বিড়ালকে বিমানে চড়িয়েছেন, এই মর্মে প্রধানমন্ত্রীর নিন্দে হয়। লকডাউনে ক্যারি ক্যাবিনেট রুমে জন্মদিনের কেক আনেন, সমাজমাধ্যম তাঁকে ‘ক্যারি আঁতোঁয়ানেত’ নাম দেয়। তবে অনেকেই বলছেন, এ-হেন আক্রমণ নারীবিদ্বেষী।
কোহিনুর ক্যামিলার
রাজত্বের ৭০ বছর পূর্তিতে রানি চান, ক্যামিলা ‘কুইন কনসর্ট’ হিসাবে পরিচিত হন। চার্লস তাঁকে ‘কুইন মেহবুবা’ বলে ডাকেন। মনে হয়, যুবরাজ খুব বেশি বলিউডি সিনেমা দেখছেন। তাঁর রাজ্যাভিষেকে ক্যামিলা রানির মায়ের যে মুকুটটি পরবেন, তাতেই কোহিনুর আছে। বহু ভারতীয়েরই ব্যাপারটা ভাল লাগবে না।
স্মরণে লতা মঙ্গেশকর
লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুর খবর বিবিসিতে প্রচারিত হয়েছে। তরুণ ব্রিটিশ এশীয়রা চ্যানেলটিকে জানিয়েছেন, তিনিই ভারতের সঙ্গে তাঁদের যোগসূত্র। বিয়েশাদি, শোকের সময়ে, অনুষ্ঠান-পার্বণে তাঁর গান শুনেই বড় হওয়া। ১৯৭৪-এ প্রথম ভারতীয় হিসাবে রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে একক অনুষ্ঠান করেন লতা। তাঁকে মঞ্চে ডাকতে গিয়ে দিলীপ কুমার তাঁর স্বরকে ‘প্রকৃতির বিস্ময়’ বলেন। হাউসফুল সেই চ্যারিটি-কনসার্টের রেকর্ড করা অ্যালবামও সওয়া লাখের উপর বিকিয়েছিল।